শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

গণমাধ্যমকে ‘শায়েস্তা’ করা বন্ধ করুন : টিআইবি, মামলা প্রত্যাহার দাবি সম্পাদক পরিষদের

বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩
79 ভিউ
গণমাধ্যমকে ‘শায়েস্তা’ করা বন্ধ করুন : টিআইবি, মামলা প্রত্যাহার দাবি সম্পাদক পরিষদের

কক্সবাংলা ডটকম(৩০ মার্চ) :: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে তার বাসা থেকে গভীর রাতে তুলে নেওয়া, ৩০ ঘণ্টা পর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

সংস্থাটি মনে করে, এ ঘটনা একজন সাংবাদিক ও দেশের একজন নাগরিকের জীবনের নিরাপত্তার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে। পাশাপাশি গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের এবং প্রয়োজনে শায়েস্তা করার ভয়ংকর উদাহরণ তৈরি করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সাংবাদিক শামসের নিঃশর্ত মুক্তি এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছে টিআইবি।

শামসকে দৃশ্যত অবৈধভাবে তুলে নিয়ে যাওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর তাকে আদালতে উপস্থাপন এবং মাঝের সময়টিতে নিখোঁজ থাকার ঘটনাকে ন্যাক্কারজনক উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সংবাদকর্মী হিসেবে তো বটেই, একজন নাগরিক হিসেবেও শামসের সাংবিধানিক অধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করা হয়েছে।

কেননা বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে যদি আইনগতভাবে আটক করা হয়, আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে উপস্থাপন করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা করতে পরিষ্কারভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি যে মামলায় আটক দেখিয়ে তাকে আদালতে তোলা হয়েছে, সেটিও দায়ের করা হয়েছে তুলে নেওয়ার ২০ ঘণ্টা পর।’

গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো প্রতিবেদনের ভুল বা অসঙ্গতি থাকলে কেউ তা নিয়ে সংক্ষুব্ধ হতে পারেন এবং তা নিরসনের জন্য দেশে প্রেস কাউন্সিল আইন রয়েছে এবং বিদ্যমান সেই আইন অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘প্রেস কাউন্সিল আইনকে উপেক্ষা করে সরাসরি কোনো প্রতিবেদককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অ-জামিনযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণে রাখার এবং সমালোচনামূলক বা ভিন্নমত প্রকাশ করলে শায়েস্তা করার সরকারি অভিপ্রায়কে স্পষ্ট করে তোলে, যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের নামান্তর।’

প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান (বাঁয়ে) ও নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান

প্রকাশিত খবর অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, শামসকে যে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, তাতে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের সম্পাদক, সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(২), ৩১ ও ৩৫ ধারায় মামলা করা হয়েছে, এর মধ্যে ৩১ ধারা অ-জামিনযোগ্য। এই ধারাসমূহের যথেচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে ভিন্নমত পোষণকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ, বিশেষ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

এই মর্মে তথ্যপ্রমাণ রয়েছে উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘গত দুই দিনে আরও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। এই কালাকানুন তৈরির সময় থেকেই টিআইবি সব সময় আইনটির বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে উদ্বেগ ও আপত্তি জানিয়ে আসছে। এমনকি আইনমন্ত্রীও এই আইনের অপব্যবহারের পরিপ্রেক্ষিতে আইনটি সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। তারপরও এই আইনের মাধ্যমে সংবাদকর্মী ও ভিন্নমতাবলম্বীরা নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অ-জামিনযোগ্য ধারায় মামলা হওয়ার কারণে অপরাধ প্রমাণিত না হলেও, অভিযুক্তকে ‘শায়েস্তা’ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং তা করাও হচ্ছে।’

বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম সূচক ২০২২-এর উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘বিশ্বের ১৮০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২-তে। যা কিনা তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানের (১৫৬) চেয়েও নিচে। এই অবস্থান নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও শাসকদলের মাধ্যমে তার যথেচ্ছ অপপ্রয়োগের প্রতিফলন। তাই অবিলম্বে শামসের নিঃশর্ত মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি গণমাধ্যম ও ভিন্নমতাবলম্বীর কণ্ঠরোধকারী নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে টিআইবি।’

সাংবাদিক হয়রানি-আটক : যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২ দেশের উদ্বেগ

বাংলাদেশে সাংবাদিক হয়রানি ও আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রসহ ১২টি দেশ উদ্বেগ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশন (এমএফসি) বাংলাদেশের পক্ষে ওই ১২টি দেশের ঢাকা মিশন এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বাংলাদেশে মিডিয়া ফ্রিডম কোয়ালিশনের (এমএফসি) নিম্নস্বাক্ষরকারী সদস্য দেশগুলো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের সাম্প্রতিক ঘটনার বিষয়ে উদ্বিগ্ন। ’

‘এর মধ্যে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহকারী সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা, আল-জাজিরার লন্ডনভিত্তিক সাংবাদিকের ভাইয়ের ওপর হামলা, ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্র সাংবাদিকের ওপর হামলা এবং সম্প্রতি প্রথম আলোর সাংবাদিক আটকের খবর। আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে প্রতিটি ঘটনা দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের অনুরোধ জানাচ্ছি। ’

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা দেশগুলো হচ্ছে- অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

 ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার দাবি সম্পাদক পরিষদের

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সম্পাদক পরিষদ। একইসঙ্গে মতিউর রহমান, প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস ও দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুল আলম বাবলুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাসহ এই আইনে সংবাদকর্মীদের নামে যতগুলো মামলা হয়েছে, অবিলম্বে সেসব মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে পুনরায় দাবি জানানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সংগঠনটির পক্ষে সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের দেওয়া এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও দাবি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগে সংবাদকর্মীরা ক্রমাগতভাবে নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। এর ধারাবাহিকতায় এই আইনের ২৫(২), ৩১ ও ৩৫ ধারায় প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা এবং প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে কারাগারে পাঠানোয় সম্পাদক পরিষদ গভীরভাবে মর্মাহত ও উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’

‘গত ২৯ মার্চ পরিষদ এক বিবৃতিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু তারপরও দুঃখজনকভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে যে শামসুজ্জামান শামসের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। চট্টগ্রামে দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুল আলম বাবলুর বিরুদ্ধে ৩০ মার্চ এই আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অর্থাৎ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের সংবাদপত্র শিল্প ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর চরম আঘাত বলে সম্পাদক পরিষদ মনে করে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আইনমন্ত্রী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনে বিধি সংশোধনের কথা বলেছিলেন এবং সাংবাদিকদের ক্ষেত্রে আইনের যথেচ্ছ ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার আশ্বাসের পরও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই আইনের অধীনে ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলোকে আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি। আমরা এই কাজগুলোকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার হুমকির স্পষ্ট উদাহরণ বলে মনে করি।’

‘সম্পাদক পরিষদ প্রথম আলোর সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমান, প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস এবং  দৈনিক যুগান্তরের স্টাফ রিপোর্টার মাহবুবুল আলম বাবলুর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাসহ এই আইনে সংবাদকর্মীদের নামে যতগুলো মামলা হয়েছে, অবিলম্বে সেসব মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়ে পুনরায় জোরালো দাবি জানাচ্ছে।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা অগ্রহণযোগ্য : নোয়াব

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার ঘটনাকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মনে করছে নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। একইসঙ্গে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে তুলে নেওয়া, প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের মুক্তি ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

 বৃহস্পতিবার নোয়াব সভাপতি একে আজাদের দেওয়া বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, ‘গত কয়েকদিনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় কয়েকজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার পদক্ষেপকে আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। বিশেষ করে প্রথম আলোর সম্পাদক ও নোয়াবের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ওই আইনের ধারা প্রয়োগ তাকে হয়রানি করা ও তার পত্রিকার সাহসী সাংবাদিকতাকে ভয় দেখানের সমান মনে করি।’

‘একইসঙ্গে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্রমবর্ধমান প্রয়োগ আমাদের কাছে শঙ্কাজনক মনে হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কে আমাদের আপত্তি জানিয়েছি। এ ধরনের আইন মুক্তমত প্রকাশ, স্বাধীন সাংবাদিকতা তথা প্রাগ্রসর সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন ও পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা অবিলম্বে তুলে নিতে ও প্রথম আলোর রিপোর্টার শামসুজ্জামান শামসের মুক্তি দাবি করছি। একইসঙ্গে আমরা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আনা সব ধরনের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।’

79 ভিউ

Posted ১০:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মার্চ ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com