বিশেষ প্রতিবেদক(১৪ জুলাই) :: কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এবং বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে যত্রতত্র বিচরণ করায় নানা কথা উঠেছে। এমনকি রবিবার কক্সবাজার জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি পুলিশ সুপার খোলাসা করে দেওয়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
রাজধানী ঢাকার পল্টন থানা পুলিশের হাতে ২০১৪ সালের ৮ মে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ভুয়া লাইসেন্স দেখিয়ে দুইটি অস্ত্র ক্রয় করার সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তিনি (ফজলুল করিম সাঈদী)। ভুয়া অস্ত্রের লাইসেন্স দেখিয়ে অস্ত্র ক্রয়ের সেই মামলায় তিনি দীর্ঘদিন হাজতবাস করেছেন।
এ ব্যাপারে পল্টন থানায় দায়ের করা মামলায় (নং-১২(৫)১৪) মেট্রোপলিটন আদালত গত ১৫ জুন ফজলুল করিম সাঈদীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করেন। সেই পরোয়ানার কপি কক্সবাজারের পুলিশ সুপারের অফিসেও যথারীতি পৌঁছে যায়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়েই চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরকারি অফিস আদালত সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের অফিসে পর্যন্ত যাতায়াত করছেন।
এমনকি গত ১০ জুলাই চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী গত ১০ জুলাই খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে সেই ছবি সাঈদী নিজের ফেসবুক আইডিতে আপলোড করেন। এর আগে ৮ জুলাই তিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পরের দিন ৯ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে ছবি ধারণ করেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের চকরিয়া-পেকুয়া সংসদীয় আসনের এমপি জাফর আলম বলেন, ‘গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে এবং তা গোপন করে খোদ দেশের একজন সরকার প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে যাবার বিষয়টি গুরুতর অপরাধের শামিল।’
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং দেশের ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ছবি তুলে তার ফেসবুকে আপলোড করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এমপি জাফর আরো বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন এবং হত্যা প্রচেষ্টারও আরো কয়েকটি মামলা রয়েছে।
সর্বশেষ আজ রবিবার কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃংখলা কমিটির মাসিক সভায় উপজেলা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি নিয়ে নানাজন কথা তুলেন। এ সময় সভায় উপস্থিত কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘অস্ত্র লাইসেন্স জালিয়াতি করে অস্ত্র ক্রয়ের মামলায় উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুর করিম সাঈদীর বিরুদ্ধে ইস্যু করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আমার দপ্তরে আছে। যা তামিল করার অপেক্ষায় রয়েছে।’
এসব বিষয় নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান সাঈদী সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন, তিনি পল্টন থানার মামলায় এতদিন জামিনে ছিলেন। এমনকি মামলার অভিযোগপত্র দাখিল পর্যন্ত তিনি জামিন নিয়ে পরবর্তীতে সেই জামিনের মেয়াদও বৃদ্ধি করেছেন। ইত্যবসরে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। তিনি আগাম জামিন নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে আগাম জামিনের কোনো কপি এ মুহূর্তে তাঁর কাছে নেই তবে সহিমুহুরি নকল নিয়ে তার পুলিশ সুপারের নিকট দিবেন বলে জানান।
সূত্র : তোফায়েল আহমেদ,দৈনিক কালের কণ্ঠ(১৪ জুলাই)
Posted ১১:৪১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৪ জুলাই ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta