কক্সবাংলা ডটকম :: বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের লড়াই জমিয়ে দিল আফগানিস্তান। নেদারল্যান্ডসকে হেলায় হারিয়ে শেষচারের আশা জিইয়ে রাখল আফগানরা। শুক্রবার ডাচদের বিরুদ্ধে সাত উইকেটে জয় তুলে নেন রশিদ খানরা। সাত ম্যাচে আট পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালের লড়াইয়ে প্রবলভাবেই টিকে থাকল পাঠানরা। একইসঙ্গে পাকিস্তানকে টপকে লিগ তালিকায় পাঁচ নম্বরে উঠে এল আফগানরা।
১৭৯ রানে নেদারল্যান্ডসকে অলআউট করে দিয়ে আফগানরা সে রান পেরিয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ১১১ বল হাতে রেখে। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচে চতুর্থ এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরেও উঠে গেছে আফগানিস্তান (৭ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট)। জমিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের সমীকরণও।
আফগানিস্তানের এ জয়ে সবচেয়ে বড় ঝামেলায় কোন দল পড়েছে, তা সম্ভবত আলাদা করে বলতে হয় না। কারা আবার, পাকিস্তান! আফগানিস্তান পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে জায়গা করে নেওয়ার পথে ছয় নম্বরে নামিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে (৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট)।
তবে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াও সম্ভবত এখন একটু ‘টেনশন’-এ পড়ে গেছে, বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড। আগামীকাল যে বিশ্বকাপের অলিখিত কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানের মুখোমুখি নিউজিল্যান্ডই।
কাগজে-কলমে, অঙ্কের মারপ্যাঁচে এখনো বাংলাদেশ আর ভারত ছাড়া বাকি সব দলেরই সেমিফাইনালের দৌড়ে কিছু চাওয়া-পাওয়ার আছে। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ে গেছে, ভারতের সেমিফাইনাল নিশ্চিত। তবে কাগজে-কলমের হিসাবের বাইরে, বাস্তবতার নিরিখে বিচার করলে, বাকি আট দলের মধ্যে এই মুহূর্তে সেমিফাইনালের রাস্তায় সবচেয়ে জোরাল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হবে নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের মধ্যেই।
দক্ষিণ আফ্রিকার সেমিফাইনালে ওঠাও প্রায় নিশ্চিত, অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে ওঠা অনিশ্চয়তায় পড়ার জন্য ক্রিকেটকে অনিশ্চয়তার চূড়ান্ত নিয়ে হাজির হতে হবে বিশ্বকাপে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস বা ইংল্যান্ডের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।
সেরা চারে থেকে সেমিফাইনালে যাওয়ার দৌড়ে শেষ জায়গাটার জন্য লড়াই তাই মূলত নিউজিল্যান্ড, পাকিস্তান আর আফগানিস্তানের মধ্যে। তা সেখানে পাকিস্তানের সামনের পথটা কেমন?
পাকিস্তানের বাকি দুই ম্যাচ নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডের বাকি দুই ম্যাচের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানের ম্যাচ বাকি অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
৭ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট পাওয়া পাকিস্তানের কাজটা এমনিতেই কঠিন। আফগানিস্তান আজ না জিতলেও তাদের জন্য পরের দুই ম্যাচের জন্য করণীয় একই থাকত, সেটা হলো – দুই ম্যাচে জিততে তো হবেই, জিততে হবে বড় ব্যবধানে।
আফগানিস্তান আজ জিতে যাওয়ায় বাড়তি ঝামেলা বলতে, পাকিস্তানকে বাড়তি চাপে থাকতে হচ্ছে। কারণ, আফগানিস্তান শেষ দুই ম্যাচে জিতে গেলে তাদের পয়েন্ট হবে ১২, আর অস্ট্রেলিয়া শেষ তিন ম্যাচের মধ্যে আফগানিস্তানের কাছে হেরে বাকি দুই ম্যাচে জিতলে তাদের পয়েন্টও হবে ১২। অর্থাৎ, পাকিস্তান তখন বাকি দুই ম্যাচে জিতলেও তাদের আর সেমিফাইনালে ওঠা হবে না।
কারণ, বাকি দুই ম্যাচে জিতলেও পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে ১০। সে ক্ষেত্রে শেষ ম্যাচে রানরেটের কোনো ঝামেলায় পড়তে না চাইলে তাদের আশায় থাকতে হবে, নিউজিল্যান্ড যাতে তাদের শেষ ম্যাচেও হেরে যায়। আর আফগানিস্তান যাতে শেষ দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে হেরে যায়।
নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে পাকিস্তানের হিসাবটা হলো, নিউজিল্যান্ড কাল পাকিস্তানের কাছে হারের পর শেষ ম্যাচে জিতলেও পাকিস্তানের সেমিফাইনালের আশা থাকবে, তবে সেটা নেট রানরেটে। তবে তার জন্য কাল নিউজিল্যান্ডকে বিশাল ব্যবধানেই হারাতে হবে পাকিস্তানকে।
রানের হিসাবে অন্তত ৮৫ রানে জিততে হবে, আর পরে ব্যাটিং করলে জিততে হবে ৩৫ ওভারের মধ্যে। সে ক্ষেত্রে পাকিস্তানের রানরেট হবে নিউজিল্যান্ড সমান। আর তা হলে শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ড জিতলেও পাকিস্তানকে নিজেদের শেষ ম্যাচে জিততে হবে নিউজিল্যান্ডের চেয়ে বড় ব্যবধানে।
আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের হিসাবটা এই যে, পাকিস্তান যদি দুই ম্যাচেই জেতে, সে ক্ষেত্রে আফগানিস্তান তাদের পরের দুই ম্যাচের একটি জিতলেও জয়টা খুব বড় ব্যবধানে না হলে পাকিস্তানই উঠবে সেমিফাইনালে। কারণ, নেট রানরেটে এখনো আফগানিস্তানের চেয়ে পাকিস্তানই এগিয়ে।
