রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সমস্যা

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২
131 ভিউ
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা সমস্যা

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ ডিসেম্বর) :: ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর, বিজিপির দুটি চেকপোস্ট এবং মংডু শহরের বিজিপি সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল একটি বিশেষ জঙ্গিগোষ্ঠী। অনলাইনে একটা ভিডিও পোস্ট করে একটি সন্ত্রাসবাদী দল হামলার দায় স্বীকার করে। প্রথমে তারা বলেছিল, তারা হলো ‘হারাকাহ আল ইয়াকিন’ তথা ফেইথ মুভমেন্ট। পরবর্তী সময়ে তারা ‘আরকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’ তথা (ARSA) বলে দাবি করে।

সৌদি আরবে আশ্রয় নিয়েছে কিছু জঙ্গি। তাদের একটি কমিটির নেতৃত্বে ছিল এই আর্মি। রোহিঙ্গা ভাষায় পোস্ট করা একটা ভিডিও পাওয়া যায়। সেখান থেকে দেখা যায়, হামলায় একসঙ্গে মোট ৯ জন পুলিশ আর আটজন জঙ্গি নিহত হয়। জঙ্গিরা সরকারের ৬২টি আগ্নেয়াস্ত্র আর ১০ হাজারেরও বেশি গোলাবারুদ নিয়ে পালিয়ে যায়। সরকারের ধারণা অনুযায়ী মোট হামলাকারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৪০০। এই হামলায় সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছিল রোহিঙ্গা গ্রামের সাধারণ মানুষের। গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো বুঝতেই পারছিল না, এই অপরিচিত লোকগুলো আসলে অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে কাজকর্ম করছে!

১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীনতার আগে ভারতবিরোধী এবং মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। দাঙ্গাকারীদের দাবি ছিল, যারা ব্রিটিশদের সঙ্গে এসেছে, তাদের ব্রিটিশদের সঙ্গেই ফিরে যেতে হবে। তাদের বক্তব্য ছিল, ইংরেজরা রোহিঙ্গাদের এ দেশে এনেছে। কাজেই ইংরেজদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদেরও এ দেশ ছেড়ে চলে যেতে হবে। এটি ছিল সাম্প্রতিক ইতিহাসের অনেক সহিংস সংঘাতের মধ্যে একটা। সেই শুরু একটা জাতিকে বারবার তাদের অধিকার কেড়ে নিয়ে বাস্তুচ্যুত করার এক নিষ্ঠুর ইতিহাস; যদিও এই সংঘাতগুলোর প্রতিটির উৎস ছিল স্বতন্ত্র। সবই ছিল স্থানচ্যুতি এবং প্রত্যাবর্তনের এক নির্মম পুনরাবৃত্তি।

এরপর ১৯৫০, ১৯৬৩, ১৯৭৭, ১৯৯২, ২০১৭। এ যেন একটা নিয়মিত প্রহসন। যেন পৃথিবীর রঙ্গমঞ্চে রোহিঙ্গারা হলো জাগলারের হাতের বল। যেমন ইচ্ছে, যখন ইচ্ছে, যেখানে খুশি লোফালুফি করা যাবে ওদের নিয়ে। এই প্রহসনের শেষ কোথায়? তার উত্তর কি কারো কাছে আছে? তাই আজ রোহিঙ্গারা বিশ্বের বৃহত্তম রাষ্ট্রবিহীন এক জনসংখ্যা।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো থেকে বিতাড়িত এই জনগোষ্ঠীর ভয়ংকর জীবনকাহিনি রচিত হয়েছে একটি উপন্যাসে। সম্প্রতি এই উপন্যাসটি পড়লাম। উপন্যাসটির লেখিকা শাওন। উপন্যাসটির নাম ‘এক রোহিঙ্গার ডায়েরি’। লেখিকা সম্পর্কে অল্প হলেও জানানো প্রয়োজন। শাওনের জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা কলকাতায়। তাঁর নিজস্ব একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন পুস্তক বিপণিও আছে। দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের ওপর গবেষণা চালিয়ে তিনি এই বইটি লিখেছেন।

সেখানে তিনি দেখিয়েছেন, কিভাবে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের প্রতি নিস্পৃহতা দেখায় এবং তারা ছিন্নমূল হয়। বাংলাদেশ সরকার কিভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে। ভারত সেই সমস্যা সমাধানের জন্য জাতিসংঘে পর্যন্ত গেছে। এ সমস্যার ভবিষ্যৎ কী? একটা উপন্যাসের মধ্য দিয়ে সে সমস্যার কথা জানতে পারছিলাম। আর এমন একটা সময়ে এই উপন্যাসটি পড়লাম, যখন খবর এলো, অবশেষে বাংলাদেশ সরকারের কূটনৈতিক চাপের জন্যই হোক আর ভারত সরকারের সমর্থনের জন্যই হোক, শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সমস্যাটিকে গুরুত্ব দিয়েছে এবং মেনে নিয়েছে। এ ছাড়া এ সমস্যা সমাধানের জন্য সব রকম ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। সেটা বাংলাদেশ সরকারের জন্যও একটা মস্ত বড় বিজয়।

বাংলাদেশ ১৯৭১ সালের স্মৃতিবাহী বিজয় দিবস পালন করছে। জি-২০ সম্মেলনের আয়োজনও শুরু হয়ে গেছে ভারতে। বাংলাদেশ সেখানে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য। সবচেয়ে বড় কথা, এই মুহূর্তে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও আছে ভারত। সেখানে নিরাপত্তা পরিষদে কোনটি আলোচনার বিষয় হবে আর কোনটি হবে না, সেটি স্থির করার ক্ষেত্রেও ভারতের একটা মস্ত বড় ভূমিকা ছিল। রোহিঙ্গা সংকট এই নিরাপত্তা পরিষদের বিষয়বস্তু হয়েছে এবং সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। কোনো দেশ সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেনি। ভোটাভুটি হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের এই দাবি মেনেও নেওয়া হয়েছে। এর জন্য শেখ হাসিনা সরকারেরও একটা মস্ত বড় অভিনন্দন প্রাপ্য।

প্রথমবারের মতো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ‘মিয়ানমারের পরিস্থিতি’ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এই প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায়। বিজ্ঞপ্তিটিতে জানানো হয়, গৃহীত প্রস্তাবে মিয়ানমারে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, জরুরি অবস্থা, বন্দি মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, নিরাপত্তা ও মানবিক সহযোগিতা দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের খুব প্রশংসা করা হয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায়। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা যে রোহিঙ্গাদের নিজ বাসভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলবে সে বিষয়টিও এই প্রস্তাবে তুলে ধরা হয়েছে।

এ ছাড়া প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ২০২১ সালে গৃহীত পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত ও পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। পূর্ণ বাস্তবায়নে জাতিসংঘের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হবে কি না সে বিষয়েও জাতিসংঘ মহাসচিব এবং মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূতকে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাবের ওপর ভোট আহ্বান করা হলে তা ১২-০ ভোটে অনুমোদিত হয়। ভোটাভুটি পর্বে ওই প্রস্তাবের বিপক্ষে কোনো সদস্য ভোট দেয়নি। চীন, ভারত ও রাশিয়া ভোটদানে বিরত ছিল। ভোটদান শেষে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফ্রান্স, মেক্সিকো, গ্যাবন ও নরওয়ের প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্যে গৃহীত প্রস্তাবে রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তির প্রশংসা করেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্যে প্রস্তাবটি উত্থাপনের জন্য যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন জানায়, এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গা বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবস্থানের প্রতি জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের শক্তিশালী সমর্থনেরই বহিঃপ্রকাশ। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন প্রস্তাবটিতে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত নিরাপত্তা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ স্থায়ী ও অস্থায়ী বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

রোহিঙ্গাদের সমস্যাটা আজকের নয়। রোহিঙ্গারা, যারা বাংলাদেশে বসবাস করছে, তাদের মধ্যে পৃথিবীর অন্য কোনো রাষ্ট্র যদি সন্ত্রাসবাদকে ঢুকিয়ে দেয়, তাতে বাংলাদেশের জিও পলিটিক্যাল স্থিতাবস্থা বিগড়ে যেতে পারে। আর তাতে তো বাংলাদেশের কোনো উপকার হতে পারে না। সেই কাজটা বাংলাদেশের কোনো বন্ধুরাষ্ট্রও করতে পারে না। এই সন্ত্রাসবাদকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়ার জন্য যে চেষ্টা, সেটা বাংলাদেশবিরোধী চেষ্টা। সেখানে বাংলাদেশে বসবাসকারী কেউ যদি তাতে যুক্ত থাকে বা সেই প্রচেষ্টাকে মদদ দেয়, তাহলে তো বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও তারা বাংলাদেশবিরোধী।

এই পরিস্থিতিটা নিয়ে অনেক দিন থেকেই বাংলাদেশ সরকার বারবার বলছে। ভারত সরকারের কাছেও বাংলাদেশ সরকার দাবি জানিয়েছে যে বৃহৎ রাষ্ট্র হিসেবে তারা যাতে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করে। সত্যি কথা বলতে কী, প্রথম দিকে এটা নিয়ে ভারতের একটা সমস্যা হয়েছিল। তার কারণ, মিয়ানমারে সু চি এবং সেনা সরকারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রক্ষা করাটা ভারতের জন্য বিশেষ প্রয়োজন ছিল। সু চির গণতন্ত্রের আন্দোলনের প্রতি আবেগঘন সমর্থন থাকলেও জান্তা সরকারের সঙ্গেও ভারত কখনো সম্পর্ক বিগড়ায়নি।

তার কারণ, চীন জান্তা সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে মিয়ানমারের যে পরিকাঠামোগত দিক, সেগুলোতে দ্রুত নানা রকমের কাজকর্ম করে দিচ্ছে। সেখানে চীনের কিছু বিনিয়োগও হচ্ছে। সেখানে ভারত যদি বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে মিয়ানমারবিরোধী অবস্থান নেয়, তাতে ভারতের পক্ষে সেই পরিস্থিতিটাও তো কাঙ্ক্ষিত নয়। কেননা সে ক্ষেত্রে চীন-মিয়ানমার অক্ষটা আরো দ্রুত এগিয়ে যাবে, সেটাও ভারতের জন্য কাম্য নয়।

সুতরাং প্রথম ভারত পররাষ্ট্রনীতি, যাকে বলা হয় ‘ইন্ডিয়া ফার্স্ট ফরেন পলিসি’, সেটা অনুযায়ী একটা ভারসাম্য রক্ষার রাজনীতি নরেন্দ্র মোদিকেও করতে হয়েছে। একদিকে শেখ হাসিনা, আরেকদিকে মিয়ানমার—এই ব্যালান্সটা রক্ষা করা জরুরি ছিল। বাংলাদেশ বারবার চাপ সৃষ্টি করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর এই আশ্বাস দিয়েছেন যে এই রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো নিয়ে আলাপ-আলোচনায় ভারত একটা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করতে রাজি এবং তারা সেটা করবে।

মিয়ানমারের সঙ্গে সংঘাতে না গিয়েও আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েও তো সমস্যা সমাধানের চেষ্টা হতে পারে। যেমনটা ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে হয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ, সেখানেও মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ভারত ও তুরস্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। পুতিনের মতো লোকও বলেছেন, যুদ্ধ একদিন শেষ হবে। এই যুদ্ধ শেষ হওয়ার একটা ইঙ্গিত খোদ পুতিনই দিয়েছেন। সুতরাং বিশ্বরাজনীতিতে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।

এই মুহূর্তে শুধু জয়শঙ্কর নন, শ্রিংলা যখন পররাষ্ট্রসচিব ছিলেন, ঢাকায় গিয়ে তিনিও প্রকাশ্যে বলে এসেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে এটা নিয়ে আলোচনা হবে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে ভারত আলাপ-আলোচনা করবে।

এখন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরম, অর্থাৎ নিরাপত্তা পরিষদের মঞ্চে বিষয়টা এসে যাওয়ায় এখন অনেক সোজা হয়ে গেছে যে গ্লোবাল ইস্যু তৈরি করে এই সমস্যার সমাধান করা। সেখানে জাতিসংঘ যদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়, তাহলে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে সেটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। রোহিঙ্গাদের সমাজবিরোধী কার্যকলাপ সম্পর্কে বাংলাদেশ ওয়াকিফহাল। বাংলাদেশের গোয়েন্দারাও রিপোর্ট দিচ্ছে, ভারত সরকারের গোয়েন্দারাও রিপোর্ট দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকার আবার রোহিঙ্গাদের বিষয়টা মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে চায়। অর্থাৎ কিছু অসামাজিক কার্যকলাপের জন্য ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের জন্য সাধারণ রোহিঙ্গারা যাতে পীড়িত না হয়, সেই মানবিক সমস্যাগুলো দেখভালের জন্য বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন এনজিওকে কাজে লাগিয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে শুরু করে, শিক্ষা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয়ে রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার সাহায্য করছে। ভারত এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের কাছেও এ ব্যাপারে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ভারতও সেখানে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন নিরাপত্তা পরিষদের এই রেজল্যুশন গ্রহণের পর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা আরো দ্রুত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

শেখ হাসিনার মুকুটে আরেকটি পালক যুক্ত হলো। তার কারণ, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টাকে যখন গ্রহণ করেছে তখন একদিক থেকে বাংলাদেশের যে কনসার্ন, সেটাকে একটা স্বীকৃতি দান করেছে জাতিসংঘ। এখন জাতিসংঘের চেয়ারম্যান হলো ভারত। ভারত এই বছরই যখন চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছে, সেই সময় ভারতও চেষ্টা করবে, যাতে এটাকে আরো একটু বেশি পুশ করা যায় এবং আরেকটু এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

সুতরাং সমস্যার সমাধান এখনই হয়ে যাবে, এতটা ইওটোপিয়ান মতামত আমি প্রকাশ করছি না। তবে সমস্যা সমাধানের যে সুষ্ঠু উদ্যোগ শুরু হয়েছে, সেখান থেকে বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে আজকে বিশ্বের দুনিয়ার কাছে বিষয়টাকে পৌঁছে দিয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদ তার আগামী দিনের আলোচনায় বেশ কিছু ডু’স আর ডোন্ট’স তৈরি করে অন্যান্য দেশকেও অ্যাডভাইস পাঠাবে এবং এই সমস্যা সমাধানের একটা চেষ্টা হবে এটা আশা করা যায়।

রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর চাপ ফেলছে। বাংলাদেশ যখন তার জিডিপি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, বাংলাদেশ সরকার যখন সব দিক থেকে একটা নতুন অর্থনৈতিক মডেল সফলতার পথে নিয়ে যাচ্ছে, তখন রোহিঙ্গাদের সমস্যাটা বাংলাদেশের ওপর আরো একটা বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সুতরাং বাংলাদেশের এই সমস্যাটা আজকে যদি দুনিয়া বোঝে এবং সেই সমস্যা সমাধানের একটা সর্বসম্মত উদ্যোগ শুরু হয়, তবে সেটাতে আহ্লাদিত হওয়ার নিশ্চয়ই কারণ আছে।

লেখক : জয়ন্ত ঘোষাল 

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা সমস্যা

131 ভিউ

Posted ৯:৩১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com