বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

তিন্নি এখন কোথায়

শুক্রবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
124 ভিউ
তিন্নি এখন কোথায়

কক্সবাংলা ডটকম :: শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি। এক সময়ের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী। বর্তমানে মিডিয়া থেকে অনেকটা দূরে অবস্থান করছেন তিনি। বর্তমানে একমাত্র মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে কানাডার মন্ট্রিলে রয়েছেন এ অভিনেত্রী। সেখানেই বসবাস করছেন তিনি।

তিন্নির বিনোদন জগতে যাত্রা শুরু ২০০২ সালে আনন্দধারা ফটো সুন্দরী হয়ে। ২০০৪ সালে এসে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘৬৯’ ধারাবাহিকে দীপা চরিত্রে অভিনয় করে নজরে আসেন। পরের বছরই একই পরিচালকের একটি বিউটি সোপে মডেল হয়ে রাতারাতি হয়ে উঠলেন ‘সুন্দরীতমা’।

শুরু থেকে দাপটের সঙ্গে কাজ করছিলেন তিন্নি। টানা পাঁচ বছর, অর্থাৎ ২০১০ সাল পর্যন্ত ‘অপেক্ষা’, ‘নীল কুয়াশা’, ‘সুখের অসুখ’, ‘বৃষ্টি তোমাকে দিলাম’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় নাটকে অভিনয় করে সবার মন কেড়েছিলেন। সিনেমায়ও অভিষেক হয় তাঁর। মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, নূরুল আলম আতিকের ‘ডুবসাঁতার’।

একসময় শাকিব খানের সঙ্গে জুটি গড়ে বাণিজ্যিক ছবিতেও অভিনয় করেন। ছবিটি মুক্তির পর তিন্নিকে ঢালিউড গ্রহণও করেছিল। কিন্তু নিজের অনিয়ন্ত্রিত জীবনের ফাঁদে পড়ে জনপ্রিয়তার মধ্যগগন থেকে ছিটকে যান তিনি। প্রায় এক যুগ আগের ছোট পর্দার তুমুল জনপ্রিয় সেই মেয়েটি শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি।

এখন তাঁর দিন কাটে সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে, কানাডার মন্ট্রিয়ল শহরে। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাস থেকে মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে বসবাস করছেন সেখানে। কেমন আছেন সেখানে, কী করছেন, কীভাবে দিন কাটছে সেই অভিনেত্রী ও মডেলের।

রোববার সন্ধ্যায় হোয়াটসঅ্যাপে তিন্নি জানান, তাঁর মতো করে মেয়ে ওয়ারিশাকে নিয়ে ভালোই আছেন তিনি। বলেন, ‘মেয়ের বয়স এখন ১৪ বছর। ক্লাস নাইনে পড়ে। আমি একটি ডে–কেয়ার সেন্টারে চাকরি করি। দুই বছর ডে–কেয়ার চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্টের ওপর ডিপ্লোমা করেছি। ইচ্ছা আছে একটা সময় নিজেই একটা ডে–কেয়ার সেন্টার খুলব।’

জানালেন, কানাডা আর বাংলাদেশের জীবনের আকাশ-পাতাল পার্থক্য, ‘আগে মিডিয়ায় নিজের মতো করে কাজ করতাম, চলতাম, খেতাম, জীবন যাপন করতাম। এখানকার বাস্তবতা কঠিন। সকাল ছয়টায় উঠে রেডি হয়ে ট্রেন ধরে অফিসে যেতে হয়। ফিরতে ফিরতে রাত সাতটা-আটটা বেজে যায়। এসে আবার নিজের কাজ নিজেই করতে হয়। ঢাকার বাসার সেই গৃহকর্মী খুব মিস করি।’

কবে ফিরবেন? জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘অনেক দিন তো হলো আসা। ভাবছি, আরও কিছুদিন থাকলে এখানকার নাগরিকত্ব পেয়ে যাব। সুতরাং আরও কিছুদিন থাকি। আমি যে এত দিন দেশে যাইনি, নিজের ধৈর্যের কাছে নিজেই স্যালুট করি (হাসি)। আশা করছি, আর বছরখানেক লাগতে পারে নাগরিকত্ব পেতে। এরপর বাংলাদেশে যাব।’

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি

দেশের বাইরে যাওয়ার পর আর মিডিয়ায় কাজ করা হয়নি তিন্নির। তবে বিদেশের মাটিতে বসে দেশের প্রিয় সহকর্মীদের নাটক, ওয়েব সিরিজ, ফিল্ম দেখা হয় তাঁর। তিনি বলেন, ‘“ব্যাচেলর পয়েন্ট” নাটকটি খুব মজা করে দেখেছি। অপূর্ব, নিশোর নাটক দেখা হয়। তা ছাড়া ওটিটিতে “কারাগার”, “মহানগর”, “ফ্লোর নম্বর ৭” সিরিজগুলো দেখা হয়েছে। “কারাগার”-এ চঞ্চলের অভিনয় অস্থির!’

একসময় যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের এসব কাজ দেখে ফেলে আসা দিনগুলো মিস করেন। সহশিল্পী, দর্শক, ভক্ত—সবার কথা মনে করে মন কাঁদে, জালালেন তিন্নি। অনেকটা আফসোস করে তিন্নি বলেন, ‘যখন সবার অভিনয় দেখি, ভাবি, সবাই আছে আমি নেই। এভাবে তো আমারও আরও অনেক দিন কাজ করার কথা ছিল। তাঁদের অভিনয় দেখতে দেখতে মনের অজান্তেই কখনো কখনো কল্পনায় বাংলাদেশে ক্যামেরার সামনে যেন চলে যাই আমি। দীর্ঘ সময় সবার সঙ্গে কাজ করেছি।

সম্পর্কটা পরিবারের মতোই গড়ে উঠেছিল, সবার মধ্যে কী সুন্দর আন্তরিকতা ছিল। দর্শক, ভক্তদের কথা খুব মনে পড়ে, মন কাঁদে।’ বেড়ে ওঠা শহর ঢাকার কথা মনে করে তিন্নি আরও বলেন, ‘এখানে তো রিকশা নেই। রিকশায় চড়ে ঢাকা শহর ঘোরা, ঢাকার রাস্তায় ফুচকা খাওয়াটা মিস করি।’

সহকর্মীদের অনেকেই মনে করেন, তিন্নির এ অবস্থার জন্য তিনি নিজেই কিছুটা দায়ী। ২০০৬ সালের কথা, ছোট পর্দায় আলোচনার তুঙ্গে তিন্নি। ভালোবেসে সহশিল্পী হিল্লোলকে বিয়ে করেন এই অভিনেত্রী। একটা সময় তাঁদের ঘরে আসে মেয়ে ওয়ারিশা। অভিনয়, সংসার, সন্তান—ভালো চলছিল তাঁর। ছোট পর্দার জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করে ২০১০ সালে সোহানুর রহমান সোহান তাঁর ‘সে আমার মন কেড়েছে’ ছবিতে তিন্নিকে শাকিব খানের বিপরীতে নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব দেন। তার আগে থেকেই ঢালিউডে নতুন নায়ক-নায়িকা উপহার দেওয়ার একটা সুনাম ছিল সোহানের। বসতে রাজি হয়ে গেলেন তিন্নি।

তিন্নি বলেন, ‘সোহানুর রহমান সোহানকে আমি প্রথম দিনের মিটিং থেকেই বাবা বলে সম্বোধন করতাম। উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় মিটিং হলো। গল্প পছন্দ হলো। আমাকে সোহান বাবা বললেন, “তুমি ছোট পর্দায় অনেক জনপ্রিয়। শাকিবও বড় পর্দায় জনপ্রিয়, সুতরাং দুজনকে ভালো মানাবে।

তোমার চরিত্রটা সেভাবেই গল্পে রাখা হবে, চিন্তার কিছু নেই। আর তুমি প্রযোজকের আর্টিস্ট না, পরিচালকের। মাথা উঁচু করে কাজ করবে।” তখন পারিপার্শ্বিকতার কারণে বাণিজ্যিক ছবিতে অভিনয়ের বিষয়ে অনেকে নাক সিঁটকাতেন। বিষয়টি নিয়ে আমিও চিন্তায় ছিলাম। যাহোক, সোহান বাবার ওপর ভরসা করেই কাজ শুরু করলাম।’

শাকিবের বিপরীতে প্রথম সিনেমায় অভিনয়ের দারুণ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিন্নি। বলেন, ‘ছবির শুটিংয়ের আগে শাকিব খানের সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা হলেও ওভাবে কথা হতো না। প্রথম শাকিবের সঙ্গে কাজ, চিন্তায় পড়লাম, কতটুকু সহজ হবে কাজ। কারণ, আমি ছোট পর্দা থেকে এসেছি।

যাহোক, প্রথম দিন আমাদের দুজনের গানের শুটিং ছিল। কিন্তু শুটিং করতে গিয়ে মনে হয়েছিল, শাকিব অনেক দিনের চেনা, জানা আমার। ফলে কাজের প্রথম দিনই বুঝে গিয়েছিলাম, সমস্যা হবে না। ভালো কাজ করা যাবে।’

শাকিবকে নিয়ে এই অভিনেত্রীর আরও মন্তব্য, ‘শাকিব খানকে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমার অন্য রকমের ভালো লাগার অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে আমার এক দিনও মনে হয়নি আমি ছোট পর্দার শিল্পী। তাঁর ব্যবহারে আমি মুগ্ধ ছিলাম। তিনি সব সময় নিম্ন স্বরে কথা বলতেন। কাজের সময় যথেষ্ট আন্তরিক মনে হয়েছে তাঁকে।’

২০১২ সালে প্রথম ছবি মুক্তির পর বেশ আলোচনা তৈরি হয় তিন্নিকে ঘিরে। বেশ কয়েকজন পরিচালক তাঁকে নিয়ে কাজের পরিকল্পনা করেন। কিন্তু ওই সময়ই হিল্লোলের সঙ্গে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে। এরপর তিন্নির অনিয়ন্ত্রিত জীবন শুরু হয়। আস্তে আস্তে কাজ থেকে ছিটকে যেতে থাকেন তিনি।

শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি

তিন্নি বলেন, ‘ওই সময়ে হিল্লোলের সঙ্গে বিচ্ছেদসহ কিছু কারণে ভালোভাবে আর কাজে মনোযোগ দিতে পারিনি। কিছু কাজের ব্যাপারে আমার নিজেরও কিছুটা দোষ ছিল। ফলে আমাকে পিছিয়ে পড়তে হয়েছিল। সত্যি কথা কি, মিডিয়া এমন একটি সেনসিটিভ জায়গা, একবার লাইনচ্যুত হয়ে গেলে লাইনে ওঠা কঠিন। সেটি এখন গভীরভাবে অনুভব করি।’

শোনা যায়, দেশে ফিরে আবারও বিনোদন জগতে কাজ করবেন, সত্যি নাকি? উত্তরে তিন্নি বলেন, ‘অনেকেই ফোন দেন, কাজের কথা বলেন। তবে ইচ্ছা তো আছেই কাজ করার। একজন তো বলেই রেখেছেন, দেশে ফিরে প্রথম কাজ করলে তাঁর কাজই করতে হবে (হাসি)! তবে দেশে ফিরে একটা কাজ হলেও করব।’

124 ভিউ

Posted ১২:০১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com