কক্সবাংলা ডটকম(২৪ মে) :: ব্যাংকিং খাতে মানব সম্পদে চলছে চরম অব্যবস্থাপনা। প্রতিনিয়তই বাড়ছে কর্মী ছাঁটাই ও পদত্যাগ। এতে কর্মকর্তাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে আতঙ্ক। সাম্প্রতিক কয়েকটি ব্যাংকে কর্মী ছাঁটাই নিয়ে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। গত এক বছরেই ব্যাংকিং খাতে ৯ হাজার কর্মী ছাঁটাই ও পদত্যাগের ঘটনা ঘটেছে।
২৪ মে বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।
স্বাগত বক্তব্যে আয়োজনের উদ্দেশ্য বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শুরু করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। তিনি দক্ষতার সঙ্গে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই খাতে প্রশিক্ষণের ওপর জোরারোপ করেন তিনি।
কর্মশালার উদ্বোধন করে ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল বলেন, ব্যাংকিং খাতের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয় বেশ কিছু সার্কুলার জারি করেছে। এসব সার্কুলার যথাযথ পরিপালনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নজরদারি করা হয়। তিনি বলেন, ব্যাসেল-৩ বাস্তবায়নের পর্যায়ে রয়েছে। এতে মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত ২০১৬ সালে ব্যাংকিং খাতে মোট কর্মকর্তা ছিল ৯০ হাজার ২৬৫ জন। ছাঁটাই, পদত্যাগসহ বিভিন্ন কারণে ২০১৭ সালে এসে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার ২৪৫ জন। এক বছরে কর্মকর্তা কমেছে ৯ হাজার ২০ জন।
কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
গবেষণা দলে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক মাসুদুল হক, বিআইবিএমের সহকারি অধ্যাপক রেক্সোনা ইয়াসমিন, বিআইবিএমের প্রভাষক আনিলা আলী, বিআইবিএমের প্রভাষক লামিয়া রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম এবং আল- আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান মো. মাজহারুল ইসলাম।
বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকিং খাতের নৈতিকতার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নৈতিকতা বজায় রাখতে পারলে ব্যাংকিং খাতের সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে। তিনি ব্যাংকের কর্মীদের দক্ষতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দেন।
বিআইবিএমের সাবেক চেয়ার প্রফেসর এস এ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকিং খাতে চাকরির জন্য লাইসেন্স ব্যবস্থার প্রবর্তন করলে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে। বিশেষ করে বিভিন্ন পেশাদারি খাতে লাইসেন্সের প্রয়োজন থাকলেও ব্যাংকিংয়ে এই ব্যবস্থা নেই। ব্যাংকিং খাতে এখন বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন সুতরাং এ বিষয়টি বিবেচনা করলে এই লাইসেন্স পদ্ধতি অবশ্যই কাজে লাগবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, নারী কর্মীদের সন্ধ্যা ছয়টার পর ব্যাংকের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখার নির্দেশনা থাকলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। আবার ব্যাংকের পরিচালকদের একটি অংশ ব্যাংক কর্মীদের সঙ্গে কিভাবে আচরণ করতে হবে তা জানে না। এজন্য ব্যাংক পরিচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, বর্তমানে অনেক ব্যাংকেই এখন পুরানো কর্মকর্তা পাওয়া যাবে না। অধিকাংশ ব্যাংকেই ১৮ বছর হয়েছে এমন কর্মকর্তা পাওয়া যাবে না। অনেক ব্যাংকে পদ খালি রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকেই ১৬ হাজার পদ খালি রয়েছে।
Posted ২:৩৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ মে ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta