কক্সবাংলা ডটকম(২৫ জুন) :: অপু বিশ্বাসের সঙ্গে বিবাহ নাটকের পর শাকিব খানের ছবির প্রতি দর্শকদের বাড়তি আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল, প্রায় বিপর্যস্ত চলচ্চিত্র জগতে শাকিব খান তাই ছিলেন ভরসার প্রতীক। কিন্তু যৌথ প্রযোজনার ছবির প্রতি তার অতি আগ্রহই এখন বুঝি কাল হতে চলেছে। তার আজীবন নিষিদ্ধ হওয়া কি পতনেরই সূচনা?
ঈদ কিংবা যেকোনো উত্সব ঘিরে সিনেমা হলগুলোর সামনে ঝুলতে থাকে নতুন নতুন সিনেমার পোস্টার-ব্যানার। আর নতুন সিনেমার বাজার অনেকাংশেই বগলদাবা করে রেখেছে যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো। যদিও এই সিনেমাগুলো নিয়ে নানা বিতর্ক চলছেই। এবার বিতর্কের সেই সলতেতে বাড়তি আগুন জুগিয়েছে যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘বস-টু’ ও ‘নবাব’। এই ছবি দুটোর বিরুদ্ধে যৌথ প্রযোজনার নীতি সঠিকভাবে মানা হয়নি বলে মাঠ গরম ছিল বেশ কিছু দিন ধরে, এ অভিযোগের অগ্রভাগে আছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোট। এই ঐক্যজোটের নেতৃত্বে রয়েছেন চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি, শিল্পীসমিতিসহ মোট ১৭টি সংগঠনের নেতারা।
২১ জুন যৌথ প্রযোজনার বস-টু ও নবাব চলচ্চিত্র দুটো বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে— এ খবরের পর পরই যৌথ প্রযোজনার ছবিবিরোধী আন্দোলনের পালে জোর হাওয়া লেগেছে: তুঙ্গ পরিস্থিতিতে নায়ক শাকিব খানকে আজীবনের বহিষ্কারাদেশ জারি হয়েছে, দেশে যৌথ ছবি চালানোর মূল পরিকল্পক হিসেবে অভিযোগের আঙুল বরাবর যে ব্যক্তির দিকে জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার সেই আব্দুল আজিজকেও পরিচালক সমিতি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে বিনা কর্তনে সেন্সর ছাড়পত্র পাওয়ার পর গেল শুক্রবার এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের নেতারা। সেখানেই শাকিব খান ও আব্দুল আজিজকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন চলচ্চিত্র পরিবারের নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানান চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার।
বিতর্কিত এ ইস্যু নিয়ে মুশফিকুর রহমান গুলজারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে যৌথ প্রযোজনার নামে দেশীয় চলচ্চিত্র ধ্বংসের মুখে নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দেশীয় চলচ্চিত্র ধ্বংসের প্রক্রিয়ায় যারা নেমেছে, তাদের আমরা আমাদের সিনেমার বাজারে ঢুকতে দেব না। ঈদের ছুটির পর তাদের লিখিত চিঠি পাঠানো হবে। কিন্তু আজ এই মুহূর্ত থেকেই ওরা এফডিসিতে নিষিদ্ধ।’
সেসঙ্গে তিনি আরো কিছু বিষয় স্পষ্ট করেন। তিনি জানান, জাজ মাল্টিমিডিয়া থেকে বারবার বলা হচ্ছে যে, আমরা যৌথ প্রযোজনার বিরুদ্ধে লড়ছি বিষয়টি কিন্তু এমন নয়। বরং আমাদের আন্দোলন মূলত যৌথ প্রযোজনার ছবিতে নিয়ম না মানা নিয়ে। আর এই অনিয়ম কিন্তু বেশ কয়েক বছর ধরেই করে আসছে জাজ। আমরা এর প্রতিবাদই করছি। এজন্যই যৌথ প্রযোজনার ছবির শিল্পী, কলাকুশলীদের এফডিসিতে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তার দেয়া তথ্যমতে, অনিয়মে ভরা যৌথ প্রযোজনার ছবি মুক্তির বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু তাদের সাহায্য করে যাচ্ছেন। শাকিব খানও তাদের পক্ষ হয়ে চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিকে অসম্মান করে নানা কথা বলছেন। শুধু তাই নয় শাকিব খান প্রবীণ অভিনেতা ফারুককে হেয় করে মন্তব্য করার অভিযোগেও তার ওপর ক্ষুব্ধ চলচ্চিত্র ঐক্যজোট। সব মিলিয়েই চলচ্চিত্র পরিবারের পক্ষ থেকে শাকিব খান ও আবদুল আজিজকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে বলেই বলেন তিনি।
