কক্সবাংলা ডটকম(১ মার্চ) :: সময় বলে দেয় কখন পক্ষ নিতে হবে, পরিস্থিতি যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে দেয়, তখন সামনে না এগিয়ে উপায়টা কী? পৃথিবীতে যত মানুষ নিপীড়নের শিকার, তার দুই-তৃতীয়াংশই নারী। যারা সামনে এগিয়ে যেতে পারেন, তাদেরও পাহাড়সমান বাধা পেরোতে হয়।
অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়ার ভাষায় তাকেও নাকি এমন নানা বাধা পেরিয়ে আজকের এ অবস্থানে আসতে হয়েছে। নুসরাত এখন সফল, তাই তিনি উদ্যোগ নিয়েছেন পিছিয়ে থাকা নারীকে উৎসাহ দেয়ার। নুসরাত এ নারীদের বোঝাতে চান, শুধু সাহস আর মনোবল দিয়েই ভয়কে জয় করা যায়।
তবে এ অভিনেত্রী নিজের অভিনয় জগৎ থেকে বের হয়ে এসে একেবারে নতুন পরিচয়ে এ বার্তাগুলো দিতে চান। জানতে ইচ্ছা করছে কোন পরিচয়? হ্যাঁ, এ অভিনেত্রী এবার সংগীতশিল্পী পরিচয়ে হাজির হয়ে প্রেরণার গান শোনাবেন।
মুখোমুখি হয়ে নুসরাত ফারিয়া আরো যা বললেন, তা পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো—
উপস্থাপক, অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেছেন। এবার সংগীতশিল্পী পরিচয়ে হাজির হতে যাচ্ছেন!
হ্যাঁ, এপ্রিলে মুক্তি পাচ্ছে আমার গাওয়া প্রথম গানের মিউজিক ভিডিও। ছয় মাস ধরে গোপনে কাজ করছিলাম। এরই মধ্যে গানটির রেকর্ড করে ফেলেছি। তবে অবাক হয়েছি এই ভেবে যে, এতটা দিন ধরে নিজের পেটের মধ্যে কথাগুলো কীভাবে চাপিয়ে রেখেছিলাম। এ সময়ের মধ্যে কতবার আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, নাচ, অভিনয় তো করছেন, গানটা কবে করবেন? শুধু হেসেই বলতাম, করব, করব।
হুট করে গায়িকা হওয়ার বাসনা জাগল মনে?
হুট করে নয়, অনেক দিন ধরেই চাচ্ছিলাম, আমার মনের ভেতর জমে থাকা কিছু কথা বলব। কিন্তু সিনেমায় তা বলা যায় না। কারণ ওখানে চিত্রনাট্য অনুযায়ী সংলাপ বলতে হয়, নিজের কোনো কথা চাইলেই বলা যায় না। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজের মনের কথা গানের সুরেই বলব।
কী সেই মনের কথা?
গানটি নারীদের নিয়ে করা। আমার জীবনে আমি যে বাধাগুলোর মুখোমুখি হয়েছি এবং যেভাবে বাধা পেরিয়ে আজকের এ অবস্থানে এসে পৌঁছেছি, তাই বলার চেষ্টা করব গানের মধ্য দিয়ে। আমি চাই আমার গান নিপীড়িত, পিছিয়ে থাকা নারীদের সাহস হয়ে উঠুক।
গানটি নিয়ে বিস্তারিত বলুন—
গানটির শিরোনাম ‘পটাকা’। এটি লিখেছেন রাকিব রাহুল। মিউজিক করেছেন প্রীতম হাসান। চলতি মাসের ১৬ তারিখ মুম্বাইয়ে গানটির মিউজিক ভিডিও নির্মাণ শুরু হবে। এর কোরিওগ্রাফার হিসেবে থাকছেন বাবা যাদব।
হুট করে তো আর গায়িকা হয়ে যাননি। এর তো একটা শুরু আছে?
আমি যখন উপস্থাপনা করতাম, তখন মাঝে মাঝে দুয়েক লাইন গাইতাম। মনে আছে, ২০১২ সালে যেদিন প্রথম কনা (সংগীতশিল্পী) আপুর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, সেদিন টিভির একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করছিলাম। তো কনা আপু তখন গান গাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন পেছনে, এ সময় হঠাৎ গেয়ে উঠি ‘অনেক সাধনার পরে আমি…’ গানটি। এরপর তো কথায় কথায়, উপস্থাপনায়, সিনেমার প্রমোশনে গান আমাকে গাইতে হয়।
গান শেখাটা কীভাবে আত্মস্থ করলেন?
আমার কখনই গান শেখা হয়ে ওঠেনি। ছোটবেলায় গান শিখতে চেয়েছি কিন্তু আম্মু শিখতে দেয়নি। বড় হওয়ার পর নানা কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে এখন আমার বিশ্বাস অত ভালো গাইতে না পারলেও ভালো অনুভূতি প্রকাশ করতে পারব আমার গান দিয়ে। অবশ্য এ গানটি করার সাহস আমার ছিল না। প্রীতম আমাকে সাহস জুগিয়েছে, সাহায্য করেছে।
এরপর আরো গান গাওয়ার ইচ্ছা আছে?
আগেই বলেছি, আমি যে যে প্লাটফর্মে কাজ করি, সেখানে প্রত্যাশিত বার্তা পুরোপুরি পৌঁছে দিতে পারি না। তাই ভবিষ্যতে আরো গান গেয়ে নিজের জীবনের বাস্তব অনুভূতি প্রকাশ করতে চাই। আমি চাই, সবাই জানুক আমার জীবনে কখনো ভালো অভিজ্ঞতা এসেছে, কখনো খারাপ অভিজ্ঞতা এসেছে, সবই শিখেছি আমার ভুল থেকে। হয়তো একটা সময় ভুল করেছি, যে কারণে কষ্ট পেয়েছি আবার ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাই হয়তো ভালো আছি।
মিউজিক ভিডিওটির নাম পটাকা কেন?
পটাকার মানে এর মধ্যে আগুন আছে। কখন বিস্ফোরিত হবে কেউ জানে না। আমার মনে হয় প্রত্যেক মেয়ের মধ্যে এমন বিষয় আছে।
এরপর নুসরাত নিজেই জানিয়ে দেন এ গান থেকে প্রাপ্ত লাভ কোন খাতে খরচ করবেন। তিনি বলেন, এ গান থেকে যে লাভ আসবে, তার একটা বড় অংশ মেয়েদের স্কুলে দিতে চাই।
Posted ১১:১৮ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ০২ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta