কক্সবাংলা ডটকম(১৩ মার্চ) :: নেপালে বিধ্বস্ত ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমানের দুর্ঘটনার দ্বিতীয় দিনে বিমানটির প্রধান বৈমানিক আবিদ সুলতানের পর আরেক যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো মোট ৫১। খবর কাঠমন্ডু পোস্ট।
সরকারি সংবাদসংস্থা ‘রাষ্ট্রীয় সমাচার সমিতি’র বরাত দিয়ে নেপালের গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় জানিয়েছে বিমান দুর্ঘটনায় ২২ জন নেপালি, ২৮ জন বাংলাদেশী ও একজন চীনা নাগরিক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশে ইউএস-বাংলার প্রধান কার্যালয় থেকে বিমানটির প্রধান বৈমানিক আবিদ সুলতানের মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়।
খবরে বলা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে মোট ৩১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে বিভিন্ন হাসপাতালে আহতাবস্থায় আরো ১৮ জন মারা যায়। সবমিলে সোমবার মোট ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়।
হতাহত বাংলাদেশীদের তালিকা প্রকাশ
এদিকে নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় হতাহত বাংলাদেশী যাত্রী ও ক্রুদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাস গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে এ তালিকা প্রকাশ করে। ওই ফ্লাইটে বাংলাদেশীদের মধ্যে ৩২ জন যাত্রী এবং চারজন পাইলট ও ক্রু ছিলেন।
নেপাল বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী নিহতরা হলেন— মো. ফয়সাল আহমেদ, আলিফুজ্জামান, বিলকিস আরা, বেগম হুরুন নাহার বিলকিস বানু, নাজিয়া আফরিন চৌধুরী, মো. রকিবুল হাসান, সানজিদা হক, মো. হাসান ইমাম, মো. নজরুল, আখতারা বেগম, আঁখি মনি, মিনহাজ বিন নাসির, এফএইচ প্রিয়ক, তামাররা প্রিয়ংময়ী, মো. মতিউর রহমান, এসএম মাহমুদুর রহমান, তাহিরা তানভিন শশী রেজা, পিয়াস রায়, অনিরুদ্ধ জামান, উম্মে সালমা, মো. নুরুজ্জামান, মো. রফিকুজ্জামান, আবিদ সুলতান, প্রিথুলা রশিদ, খাজা হুসেইন, কেএইচএম শাফি। তবে ইমরানা কবির হাসিও মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া জীবিতদের মধ্যে সাহরীন আহমেদ কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজ (কেএমসি) হাসপাতালে, ইয়াকুব আলি নরভিক হাসপাতালে, আলমুন নাহার অ্যানি কেএমসিতে, মো. রেজওয়ানুল হক ওএম হাসপাতালে, মেহেদী হাসান কেএমসিতে, মো. কবির হোসেন কেএমসিতে, মো. শাহীন ব্যাপারী কেএমসিতে, শেখ রাশেদ রুবাইয়াত কেএমসিতে ও সৈয়দা কামরুন্নাহার স্বর্ণা কেএমসিতে চিকিৎসাধীন।
এদিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো গতকাল ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে (টিইউটিএইচ) নেয়া হয়েছে। কাঠমান্ডু পুলিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে মরদেহগুলো সংগ্রহ করে টিইউটিএইচে পাঠানো হয়েছে। নিহতদের স্বজনরাও সেখানে পৌঁছেছেন।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল হাসান বলেন, ফরেনসিক প্রতিবেদনসহ মেডিকেল প্রসিডিউর শেষ হওয়ার পর তাদের মরদেহ বাংলাদেশে আনা হবে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসার সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত আছে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ।
সোমবার দুপুর ১২টা ৫১মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৬৭ জন যাত্রী ও চারজন ক্রুসহ মোট ৭১ জনকে নিয়ে ইউএস-বাংলার এ বিমানটি ছেড়ে যায়। নেপালের স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে কাঠমান্ডু ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
ইউএস-বাংলার মোট আটটি বিমান রয়েছে। এর মধ্যে চারটি ড্যাশ এইট ও চারটি বোয়িং। তবে একটি ড্যাশ এইট নষ্ট থাকার কারণে কিছুদিন যাবত সেটি হ্যাঙ্গারে পড়ে রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন গন্তব্য ছাড়াও কোলকাতা, কাঠমান্ডু, ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, দোহা এবং মাসকট রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছে ইউএস বাংলা। এছাড়া আগামী এপ্রিল থেকে চীনের গুয়াংঝু শহরে ফ্লাইট পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ইউএস-বাংলা।
Posted ৭:০৬ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta