বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

পুঁজিবাজারে করুণ চিত্র : ফ্লোর তোলার পরও লেনদেন ফের ২০০ কোটির ঘরে

বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২
78 ভিউ
পুঁজিবাজারে করুণ চিত্র : ফ্লোর তোলার পরও লেনদেন ফের ২০০ কোটির ঘরে

কক্সবাংলা ডটকম(২২ ডিসেম্বর) :: সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস (বৃহস্পতিবার) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের সামান্য উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে ডিএসইতে টাকার অংকে লেনদেন কমে ২০০ কোটির ঘরে এসেছে।

আর ১৬৯টি কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের পর দিন পুঁজিবাজারে লেনদেন কমল আরও। বৃহস্পতিবার যে লেনদেন হয়েছে, তা গত দুই বছরেও দেখেনি বিনিয়োগকারীরা।

সারাদিনে লেনদেন হয়েছে ২২৭ কোটি ৭৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার। চলতি বছরের তো বটেই, ২০২০ সালের ১৬ জুলাইয়ের পর এত কম লেনদেন কখনও দেখেনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।

সেদিন লেনদেন হয়েছিল ২২৫ কোটি ৯৭ লাখ ২১ হাজার টাকা।

চলতি বছর সর্বনিম্ন লেনদেন ছিল গত ৬ ডিসেম্বর। সেদিন হাতবদল হয় ২৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা।

অর্ধেকের কিছু বেশি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত আসার দিন লেনদেন ছিল ৩৩৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ১০৫ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৩১ দশমিক ৭২ শতাংশ।

পাঁচ কর্মদিবস পর সূচকের পতন থামল। দিনের শুরুতে সূচক কমে গেলেও শেষ বেলায় বেড়েছে ৩ পয়েন্ট। তবে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে।

বেড়েছে মোট ৫২টি কোম্পানির শেয়ারদর, কমেছে ১০১টির। ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে ১৫২টি কোম্পানির। ফ্লোর প্রাইসে গত কয়েক মাসে এটিই সবচেয়ে কম সংখ্যক কোম্পানি দেখা গেছে। এদিনও ৮১টি কোম্পানির একটি শেয়ারেরও লেনদেন হয়নি।

করোনার কারণে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় বিধিনিষেধ বা লকডাউন দেয়ার ঘোষণায় বাজারে যে আতঙ্ক ছিল, এখনকার পরিস্থিতি তার চেয়ে খারাপ। এই বিধিনিষেধে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে, এমন শঙ্কায় তার আগের দিন হাতবদল হয় হাতবদল হয় কেবল ২৩৬ কোটি ৬০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। তবে লেনদেন চলবে, এমন ঘোষণার পর পরদিন থেকে ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার।

বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কার মধ্যে গত জুলাইয়ে পুঁজিবাজারে ক্রমাগত দরপতনের মধ্যে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে যায়। এরপর ৩১ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়।

১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়ে দরপতনের সীমা এক শতাংশ করে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার ডিএসইর লেনদেনের চিত্র

করোনার সময় ফ্লোর প্রাইস পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক হলেও এবারের চিত্রটি অন্য রকম। শুরুর দুই মাস বাজারে লেনদেন ও সূচক বাড়লেও তা ভারসাম্যপূর্ণ ছিল না। সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৮০টি কোম্পানির দর বাড়লেও বেশির ভাগ কোম্পানির লেনদেনে ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি।

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার শঙ্কা, দেশের অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়া কোম্পানিগুলোর শেয়ারদরও যখন কমতে থাকে, তখন লেনদেনও নামতে থাকে।

কিন্তু ফ্লোরের বাধায় লেনদেন যে কমে যাচ্ছে, সেটি স্পষ্ট। এই মুহূর্তে তিন শতাধিক কোম্পানির শেয়ারদর ফ্লোরে অবস্থান করছে। বুধবার ১৬৯ কোম্পানির ফ্লোর প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত আসার দিন একটি শেয়ারও হাতবদল হয়নি ১০২টি কোম্পানির। ২০৩টি কোম্পানির লেনদেন হলেও তা ছিল নামমাত্র। এই দুই শতাধিক কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন ছিল ছয় কোটি টাকার কিছু বেশি।

একপর্যায়ে পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিএসইসির কাছে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার দাবি জানালে নিয়ন্ত্রক সংস্থা জানায়,অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সুবিধা বহাল থাকবে।শেষমেশ সেই অবস্থান থেকে সরতে হলো তাদের।

তবে এসব কোম্পানির শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা এক শতাংশ নির্ধারণ করে দেয়ার কারণে ১০ টাকার নিচের শেয়ারের দরপতন সম্ভব নয়।

কোম্পানিগুলোর এদের সম্মিলিত মূলধন মোট বাজার মূলধনের ৫ শতাংশ মাত্র। ফলে এদের নূন্যতম দরপতনে সূচকে তেমন প্রভাব পড়ার কোনো কারণ ছিল না।

তবে দেখা গেছে, গত কয়েকদিনে যেসব কোম্পানির দর বেশি হারে কমছিল, সেগুলোর দর এদিন কমতে পেরেছে এক শতাংশের কম। এসব কোম্পানির বেশ কিছুর দর পুঁজিবাজারের মন্দার মধ্যেও বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। ফলে ফ্লোর প্রত্যাহারেও মূলত লাভবান হয়েছে কোম্পানিগুলো।

বিশ্লেষক মত

দিয়েছি ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মানুষ এখনও অবজার্ভ করছে। সার্কিট ব্রেকার শতাংশ কমার কারণে কী হয় সেটা দেখছে। নতুন সিদ্ধান্ত মার্কেট অ্যাবজর্ব করতে পারে কি-না, কী হয়, তা দেখতে চাচ্ছে।

‘যদি মার্কেট ডাউন ট্রেন্ডে চলে যায়, এবং বর্তমান দর থেকে ১০ বা ২০ শতাংশ কমে যায় তাহলে রিজনেবল প্রাইসে শেয়ার কেনার জন্য হয়তো বায়ার দাঁড়িয়ে যাবে।’

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি রিচার্ড ডি রোজারিও বলেন, ‘১ শতাংশ সার্কিট দিয়ে ১৬৯টির ফ্লোর তোলা হয়েছে। ইম্প্যাক্ট এত তাড়াতাড়ি আসা করা যায় না। আর যে ফ্লোর প্রাইসে শেয়ার কিনতে আগ্রহী না সে ১ শতাংশ কমে কি আগ্রহী হবে? হবে না।

‘বাজারকে কোনো কিছু দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক না। স্বাভাবিকভাবে চলতে দিলে প্রত্যেকটা শেয়ার রিজনেবল প্রাইসে বাজার খুঁজে নেবে। শেয়ারের প্রকৃতি অনুযায়ী ১০, ২০, ৫০ শতাংশ বা তারও বেশি কমে সেটা হতে পারে।’

বেশি বাড়ল যাদের দর

একটি মাত্র কোম্পানির দর দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়েছে। এটি হলো নতুন তালিকাভুক্ত ইসলামিক কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স। ১০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারদর ছয় কর্মদিবসে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেল। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৩০ পয়সা। তবে এই দরে বিক্রেতা ছিল না বললেই চলে। হাতবদল হয়েছে কেবল ৫৪০টি শেয়ার।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ফ্লোর প্রত্যাহার করে নেয়া কোম্পানি ইউনিয়ন ক্যাপিটাল। ৮.৯ শতাংশ বেড়ে ৭ টাকা ৮০ পয়সা থেকে বেড়ে দর দাঁড়িয়েছে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। কোম্পানিটির দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা যেহেতু এক শতাংশ, তাই আসলে এটির দাম আর কমতে পারবে না।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ৬.৮৭ শতাংশ দর বেড়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিংয়ের।

ফ্লোর তুলে দেয়া সোনালী আঁশের দর বেড়েছে চতুর্থ সর্বোচ্চ ৫.৪৫ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৪৪৩ টাকা ৮০ পয়সা। বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৮ টাকা।

ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৫.১১ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৫২ টাকা ৮০ পযসা। বেড়ে হয়েছে ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।

ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা এডিএন টেলিকমের দর ৫.০২ শতাংশ, সপ্তম স্থানে থাকা বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের দর ৪.৭৯ শতাংশ, অষ্টম স্থানে থাকা সি পার্ট হোটেল ও রিসোর্টের দর ৪.৪৯ শতাংশ বেড়েছে।

নবম স্থানে ছিল ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া মুন্নু অ্যাগ্রোর দর। এটির বেড়েছে ৪.৩০ শতাংশ। আর দশম স্থানে ছিল ফ্লোর প্রত্যাহার করে নেয়া জুট স্পিনার্সের দর, যা বেড়েছে ৪.২৯ শতাংশ।

সর্বোচ্চ পতন যাদের

সবচেয়ে বেশি ৭.৪৯ শতাংশ দর হারিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের দর। আগের দিন দর ছিল ৫৭১ টাকা ১০ পয়সা। নামতে পারত ৫২৮ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত। কমেছে এতটাই।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪.৭৮ শতাংশ দর হারিয়েছে ফরচুন সুজ। আগের দিন দর ছিল ৭৯ টাকা ৫০ পয়সা। দিন শেষে দর দাঁড়িয়েছে ৭৫ টাকা ৭০ পয়সা।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩.৯০ শতাংশ দর হারিয়েছে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ। আগের দিন দর ছিল ৩৮ টাকা ৪০ পয়সা। দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ৯০ পয়সা।

এছাড়া কোহিনূর ক্যামিকেলসের দর ২.৩২ শতাংশ, এটলাসের দর ২.০৬ শতাংশ, ওয়ান ব্যাংকের দর ১.৯০ শতাংশ, মুন্নু সিরামিকদের দর ১.৬৫ শতাংশ, ফ্লোর প্রত্যাহার করা তিন কোম্পানি ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের দর এক শতাশং, দেশ গার্মেন্টসের দর ০.৯৯ শতাংশ এবং ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের দর কমেছে সমান হারে।

সূচকে প্রভাব বেশি যাদের

সূচকে সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছে বিকন ফার্মা। শেয়ারদর ২.০৪ শতাংশ বাড়ার কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ১.৮৩ পয়েন্ট।

দ্বিতীয় সর্ব্চোচ ১.৩৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে শেয়ারদর ৪.৪৯ শতাংশ বাড়া সি পার্ল হোটেল।

আর কোনো কোম্পানি সূচকে এক পয়েন্টও যোগ করতে পারেনি। এর মধ্যে এডিএন টেলিকম ০.৪৮ পয়েন্ট, অলিম্পিক ০.৪১ পয়েন্ট, ইন্ট্রাকো ০.৩৬ পয়েন্ট, বসুন্ধরা পেপার ০.৩৩ পয়েন্ট, ইউনিক হোটেল ০.২৪ পয়েন্ট, ইস্টার্ন কেবলস ০.২১ পয়েন্ট, বিডিথাই ফুড এবং বিজিআইসি বাড়িয়েছে ০.২০ পয়েন্ট করে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সম্মিলিতভাবে সূচকে যোগ করেছেন ৫.৬১ পয়েন্ট।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি সূচক কমিয়েছে এমন ১০টি কোম্পনির কারণে সূচক পড়েছে মোট ৪ পয়েন্ট।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১.১৯ পয়েন্ট সূচক ফেলেছে ওরিয়ন ইনফিউশন। অন্য কোনো কোম্পানি এক পয়েন্ট কমাতে পারেনি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফরচুর সুজ ০.৮৪ পয়েন্ট, কোহিনূর ক্যামিকেলস ০.৩৪ পয়েন্ট, পূবালী ব্যাংক ০.২৮ পয়েন্ট, ওয়ান ব্যাংক ০.২৭ পয়েন্ট, বেক্সিমেকো ফার্মা ০.২৪ পয়েন্ট, ইসলামী ব্যাংক ০.২২ পয়েন্ট, কপারটেক ০.১৩ পয়েন্ট, ওরিয়ন ফার্মা ০.১৩ পয়েন্ট ও মুন্নু সিরামিকস ০.১১ পয়েন্ট সূচক কমিয়েছে।

78 ভিউ

Posted ৩:৪৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২২

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com