কক্সবাংলা ডটকম(১৭ ফেব্রুয়ারি) :: ২৮ কার্যদিবস পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন নেমেছে ৩৫০ কোটি টাকার নিচে। বাজার সংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকরা একে গতি প্রবাহে প্রতিবন্ধকতার প্রভাব হিসেবে দেখছেন। আবার অনেকে সূচক ও অথনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি স্বাভাবিক মনে করছেন। লেনদেন ও সূচকের এমন গতির ফলে অনেকটা নিবু নিবু হারিকেনের আলোর মতো শেয়ারবাজার চলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে আবারও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে ৪ কোটি ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩০ শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হয় ৩৪০ কোটি ৩৩ লাখ ১ হাজার টাকা, যা ৯ জানুয়ারির পর সর্বনিম্ন। ওই দিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৩৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। বুধবার লেনদেন হয় ৪৩১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। তবে বৃহস্পতিবার সূচকে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়ায় ৬ হাজার ২২৪ পয়েন্টে। শরিয়াভিত্তিক সূচক শূন্য দশমিক ২২ পয়েন্ট কমেছে এবং বাছাই করা ৩০ কোম্পানির সূচক বেড়েছে ২ পয়েন্ট।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬ পয়েন্ট কমে ১৮ হাজার ৪২৭, সিএসসিএক্স ৪ পয়েন্ট কমে ১১ হাজার ৪৬ এবং সিএসই ৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৩১৯ পয়েন্ট হয়েছে।
শেয়ারবাজারের এমন পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি গণভবনে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেয়ারবাজারের উন্নয়নে দিক-নির্দেশনা দেন।
কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিএসইসির চেয়ারম্যান শেয়ারবাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময়ে শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শেয়ারবাজার বিকশিত করতে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। এ সময় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের শেয়ারবাজারের ব্যাপ্তি বাড়ানো ও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার লক্ষে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে রোড শোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
সম্প্রতি এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী সূচক ভালো অবস্থানেই আছে। ৬ হাজারের উপরে অবস্থান করছে উপরে সূচক। বাকি পরিস্থিতি অন্যান্য ইন্ডিকেটরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
তবে অধ্যপক আবু আহমেদের দাবি, ফ্লোর প্রাইসসহ অন্যান্য প্রতিবন্ধকতায় বাজারের স্বাভাবিক প্রবাহ নেই। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর না হলে বাজার ভালো হবে না। বাজারের স্বাভাবিক গতির জন্য প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে। ফ্লোর প্রাইস তুলে নিতে হবে। পুঁজিবাজারকে তার নিজস্ব গতিতে চলতে দিতে হবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বাংলাদেশের বাজার নিয়ে তেমন গবেষণা নেই। সবাই নিজস্ব মতামত দিয়ে যাচ্ছে। অনেকে ফ্লোর প্রাইস নিয়েও কথা বলছেন। এটি অযৌক্তিক নয়। তবে ফ্লোর প্রাইস থাকা সত্ত্বেও ২ হাজার কোটির বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এখন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে চেষ্টা করছে কমিশন। পাশাপাশি বিদেশি ও নতুন বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। এ ছাড়া দেশের মধ্য থেকে দীর্ঘ মেয়াদি বিনিয়োগে আগ্রহীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। যারা বাজারে আছেন—তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণে বাজার আরও ভালো হবে বলে আশা করছি।
Posted ১২:৩১ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta