নাজিম উদ্দিন,পেকুয়া(২২ সেপ্টেম্বর) :: পেকুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়েছে বাল্য বিয়ে। ৯ম শ্রেনীর এক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রীর বাল্য বিয়ে হয়েছে। জন্ম নিবন্ধনে বয়স গোপন হয়েছে।
মাদ্রাসায় অধ্যয়রনরত ওই ছাত্রীর বয়স ১৬ বছর। ধুমধাম বিয়ের আয়োজন হয়। খবর পেয়ে পেকুয়ার ইউএনও ও ওসি দ্রুত এ বিয়ে পন্ড করতে তৎপর হয়েছিলেন। এ সময় বিয়ে বাড়িতে পুলিশ পৌছে।
বর পক্ষের বরযাত্রী, পুলিশ উপস্থিতি দেখতে পেয়ে তারা দ্রুত সটকে পড়ে। প্রথম দফায় ওই ছাত্রীর বাল্য বিয়ে পন্ড করে প্রশাসন। তবে দ্বিতীয় দফায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার উপস্থিতিতে এ ছাত্রীর বাল্য বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের নয়াকাটা গ্রামে ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার দুপুরের দিকে এ বিয়ে হয়। ছাত্রীর নাম আনার কলি। তিনি ওই গ্রামের ওমান প্রবাসী আবদু রহমানের মেয়ে ও মৌলভীবাজার ফারুকীয়া আলিম মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী।
স্থানীয় সুত্র জানায়, আনার কলি ও মগনামা ইউনিয়নের কাঁকপাড়ার নুরুল আমিনের এর বিয়ে হয়। আনার কলি ওই মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী। অপরদিকে নুরুল আমিন একজন প্রাপ্ত বয়ষ্ক। বর বিত্তশালী।
পেকুয়া কবির আহমদ চৌধুরী বাজারে এসডি সিটি সেন্টারে প্রতিষ্টিত ব্যবসায়ী। উপযুক্ত পাত্র পাওয়ায় ওই ছাত্রীর মা ও অভিভাবকরা এ বিয়েতে তাকে রাজি করায়। আনার কলি এ বিয়েতে সম্মত ছিল না। পড়ালেখা করে পৃথিবীতে বিকশিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল।
মেধাবী এ শিক্ষার্থীর সেই স্বপ্ন ও বাসনা তার মা বিনষ্ট করে দেয়। অনেকটা জোরপূর্বক এ ছেলেকে কোমলমতি এ মেয়েটিকে তুলে দেয়। বিয়ের দিন দুপুরে কনের বাড়িতে বর যাত্রী প্রবেশ করছিলেন।
এ সময় পেকুয়ার ইউএনওকে বাল্য বিয়ের এ সম্পর্কে অবহিত করা হয়। ইউএনও ও ওসি দ্রুত সময়ে কনের বাড়িতে পুলিশ পাঠায়। এ সময় বিবাহ পন্ড করে দেয়।
স্থানীয়রা জানায়, দ্বিতীয় দফায় কনে পক্ষ ওই বিয়ে সম্পন্ন করতে দৌড়ঝাপ করছিলেন। এ সময় বারবাকিয়া ইউপি চেয়ারম্যান এ,এইচ,এম বদিউল আলম জিহাদী ও উপজেলা মাধ্যমকি শিক্ষা কর্মকর্তা আফম হাসান বিয়ে বাড়িতে যায়। এ সময় এ দ’ুজনের উপস্থিতিতে ছাত্রী আনার কলির বিয়ে সম্পন্ন করে।
সুত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান ছাত্রীর নিকট আত্মীয়। এ ছাড়া মেয়েটি চেয়ারম্যানের প্রতিবেশী।
মৌলভীবাজার ফারুকীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাও: আহমদ ফারুক জানায়, আনার কলি এ মাদ্রাসার ৯ম শ্রেণীর ছাত্রী। আমি বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। বরযাত্রী সহ পেন্ডল গুটিয়ে দিয়েছিলাম। মেয়েটি যেহেতু ৯ম শ্রেণীতে পড়ে তার বিয়ে হওয়ার সুযোগ থাকল না।
পরবর্তীতে কি হয়েছে সে বিষয়ে আমি বোধগম্য নয়। পেকুয়ার ইউএনও মাহাবুব উল করিম জানায়, দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে বলা হয়েছিল। বাল্য বিয়ে সমাজের কুফল।
কোন সন্তানকে এ সামাজিক অপব্যাধিতে সম্পৃত হওয়া দেয়া যায় না। খোঁজ খবর নিচ্ছি এ ধরনের বিয়ে হয়ে থাকলে অবশ্যই আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Posted ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta