মো: ফারুক,পেকুয়া(২ ডিসেম্বর) :: পেকুয়া উপজেলা জামাতের শীর্ষ নেতা ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জাম্মান মঞ্জুসহ ৩জনকে নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। তিনি উত্তর মেহের নামা এলাকার মো: কালুর পুত্র। আটককৃত অন্যারা হলেন, টইটং এলাকার মৃত শফিকুর রহমানের পুত্র মেজবাহ উদ্দিন ও বদরুল আলমের পুত্র মো: জসিম উদ্দিন।
রবিবার (২ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় জামাত নেতা মঞ্জুকে তার বাসায় থেকে আটক করে পেকুয়া থানা পুলিশ। ওই সময় নাশকতার পরিকল্পনাকারী বিএনপি-জামাতের আরো কয়েকজন নেতা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় বলে পুলিশ নিশ্চিত করেন।
পেকুয়া থানা পুলিশের ওসি জাকির হোসেন ভূইয়ার আটকের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জামাত নেতা নুরুজ্জামান মঞ্জু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নাশকতার পরিকল্পনা করছিল। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীসহ জামাতের কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিয়ে তার বাসায় নাশকতা পরিকল্পনার মিটিং করছিল। পুলিশ এমন তথ্য পাওয়ার পর তার বাসায় অভিযান চালালে অন্যান্য নেতাকর্মীরা পালিয়ে গেলেও নুরুজ্জামান মঞ্জুসহ ৩জনকে আটক করতে সক্ষম হই।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একদিকে থানা ঘেরাও করে রাখে নেতাকর্মীরা, অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতিকের প্রার্থী হাসিনা আহমেদ, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু ও বিএনপি সভাপতি বাহাদুর শাহসহ আরো কয়েকজন থানায় ওসি জাকির হোসেন ভূইয়ার অফিস কক্ষে গিয়ে উচ্ছস্বরে বিতন্ডা শুরু করে। ওই সময় উপস্থিত বিএনপি নেতারা ওসিকে ধমক দিয়ে উত্তেজিত করার চেষ্টা করলেও তিনি শান্ত কথায় তাদের শান্ত করেন।
এমনকি তারা ওসিকে ধমক দিয়ে বলেন, জামাত নেতা মঞ্জুকে ছেড়ে না দিলে পুরো পেকুয়ায় অশান্তি সৃষ্টি হবে হুমকি দিলেও পুলিশ ছিল সম্পূর্ন নিরব। এছাড়াও পেকুয়া চৌমহুনীতে বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিলসহ থানা ঘেরাও করলেও জামাত নেতাকে আটকের প্রতিবাদে করলেও উপজেলা জামাতের কোন নেতাকর্মী প্রতিবাদে অংশ নেয়নি।
জামাত নেতা নুরুজাম্মান মঞ্জুর স্ত্রীর আয়েশা ছিদ্দিকা বলেন, আমার স্বামী বাড়িতে একাই অবস্থান করছিল। কোন ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা করেনি। তার বিরুদ্ধে কোন ওয়ারেন্ট না থাকলেও ওসি তদন্ত মিজানুর রহমান একদল পুলিশ সাদা পোশাকে তাকে আটক থানায় নিয়ে আসে।
উপজেলা যুবদলের সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট বলেন, ওসি বিনা কারণে ২৩ দলীয় জোট নেতা ও কর্মীদের আটক করে পরিস্থিতি খারাপ করার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় নুরুজ্জামান মঞ্জুকে আটক করে পুলিশ। নেতাকর্মীরা থানায় অবস্থান নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট করে। তাৎক্ষনিক এবিষয়ে আমাদের নেত্রী হাসিনা আহমেদসহ শীর্ষ নেতারা ওসির সাথে বসে আমাদের দাবী উত্থাপণ করি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আমাদের আশস্ত করলে আমরা চলে আসি। সেখানে কোন ধরণের উচ্চবাক্য ব্যবহার হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শাফায়েত আজিজ রাজু এবিষয়ে বলেন, নুরুজ্জামান মঞ্জু নির্বাচিত ভাইস-চেয়ারম্যান ও ২৩ দলীয় জোটের নেতা। গ্রেপ্তারী পরোয়ানা না থাকলেও কোন কারণ ছাড়াই তাকে আটক করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের কারণ জানতে নেত্রীসহ আমরা ওসির সাথে সাক্ষাত করি। সিইসি’র নির্দেশ আছে গ্রেপ্তারী ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার না করতে। তারপরও গ্রেপ্তার করায় নেতাকর্মীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন মাত্র। ওসির সাথে কোন ধরণের বিতন্ডা হয়নি বলে তিনি দাবী করেন।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাহাদুর শাহ এ বিষয়ে বলেন, নুরুজ্জামান মঞ্জু জোটের নেতা ও নির্বাচিত জনপ্রিতিনিধি। তাকে বিনা কারণে আটক করায় নেত্রীসহ আমরা ওসির সাথে সাক্ষাত করি। ওসি তার বিরুদ্ধে সুনিদৃষ্টি অভিযোগ থাকার কথা বললে আমি তাৎক্ষনিক অভিযোগের বিষয়টি জানতে চেয়েছি মাত্র। ওখানে কোন ধরণের বাকবিতন্ডা হয়নি।
বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, জামাত নেতাকে নাশকতার অভিযোগে আটক করা হয়। আটকের প্রতিবাদে চৌমহুনীতে বিক্ষোভ করার পর বিএনপি নেত্রী হাসিনা আহমেদ, উপজেলা বিএনপির সভাপতি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবদল সাধারণ সম্পাদকসহ আরো কয়েকজন জামাত নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় আসে।
উপস্থিত নেতারা উচ্চস্বরে ধমক দিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে কথা বললেও পেকুয়ার পরিস্থিতি শান্ত রাখার স্বার্থে পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে। তাৎক্ষনিকভাবে আমি আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি।
Posted ৩:০০ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta