কক্সবাংলা ডটকম :: ২০২৩ ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলার হিসেবে অনেক বিশ্লেষকের বিচারেই আর্লিং হালান্ড ছিলেন এগিয়ে। এই পুরস্কারের জন্য বিবেচিত সময়ে হালান্ড ম্যানসিটির হয়ে জিতেছিলেন ট্রেবল। কিন্তু পুরস্কারটি শেষ পর্যন্ত জিতেছেন লিওনেল মেসি। মেসি ও হালান্ডের মধ্যে ভোটের লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। দুজনেরই পয়েন্ট সমান ৪৮। তবে মেসি জিতেছেন জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে প্রথম পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থাকায়। এবারই প্রথম ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচনের ভোটাভুটিতে টাই হলো।
৮ আগস্ট থেকে ২০২১ থেকে ১৮ ডিসেম্বর ২০২২-এর পারফরম্যান্সের বিবেচনায় মেসি আগেরবারের ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ জিতেছিলেন। সে সময়ে তার বড় পারফরম্যান্স ছিল বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেওয়া। সেবার ৫২ পয়েন্ট পেয়ে সেরা হয়েছিলেন তিনি। ৪৪ পয়েন্ট দ্বিতীয় হয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। ওই সময়ের পর থেকে ২০ আগস্ট ২০২৩ পর্যন্ত সময়ে মেসি জিতেছেন ফ্রেঞ্চ লিগ, আর পিএসজি ছেড়ে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়ে দলটিকে এনে দেন লিগস কাপ (যা ক্লাবটির ইতিহাসের প্রথম শিরোপা)। বিবেচিত সময়ে মোট ৩২ ম্যাচ খেলে মেসি করেন ২৪ গোল।
অন্যদিকে, বিবেচিত সময়ে হালান্ড করেন ৩৩ ম্যাচে ২৮ গোল, ম্যানসিটির হয়ে জেতেন ট্রেবল (ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ ও চ্যাম্পিয়নস লিগ)।
ফিফা দ্য বেস্টে ভোট হয় চার ভাগে। ফিফার ওয়েবসাইটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অধিনায়ক এবং ভক্তদের ভোটে সেরা ছিলেন মেসি। আর কোচ এবং সাংবাদিকদের ভোটে শীর্ষ ছিলেন হালান্ড। অধিনায়কদের ৬৭৭ পয়েন্টের ভিত্তিতে মেসি পেয়েছেন ১৩ স্কোরিং পয়েন্ট। হালান্ড অধিনায়কদের ভোটের ভিত্তিতে পেয়েছেন ১১ পয়েন্ট। তার পক্ষে ছিল ৫৫৭ পয়েন্ট।
কোচ এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাওয়া ভোটের ভিত্তিতে হালান্ড পেয়েছেন ১৩ পয়েন্ট। মেসি সেখানে পান ১১ পয়েন্ট। আর ভক্তদের পক্ষ থেকে পাওয়া ভোটের ভিত্তিতে মেসি পান ১৩ পয়েন্ট। হালান্ড ১১ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে পয়েন্ট সমান ৪৮ হয়। দুজনের টাইয়ের কারণে ভাগ্য নির্ধারণ হয় জাতীয় দলের অধিনায়কদের ভোটে। ফিফার ‘রুলস অব অ্যালোকেশন’ ১২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত।
যেখানে বলা হয়েছে, অধিনায়কদের দেওয়া সর্বোচ্চ সংখ্যক পাঁচ পয়েন্টের ভোট বা প্রথম স্থানের অধিকারীই হবেন বর্ষসেরা। সেখানে আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ১০৭ বার প্রথম স্থানে ছিলেন, হালান্ড প্রথম স্থানে মোটে ৬৪ বার। আর এতেই প্রথম পছন্দের তালিকায় এগিয়ে থেকে মেসির হাতে উঠেছে বর্ষসেরার পুরস্কার।
২০১৬ থেকে দিয়ে আসা ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ পুরস্কার তৃতীয়বার জিতলেন মেসি। প্রথমবার জিতেছিলেন ২০১৯-এ, এরপর ২০২২-এ। ২০১০-১৫ পর্যন্ত ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার ব্যালন ডি’অরের সঙ্গে একসঙ্গে ছিল। তখন মেসি জিতেছিলেন চার বার। আর ১৯৯১-২০০৯ পর্যন্ত ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় পুরস্কার দিত ফিফা প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার নামে। যা ২০০৯-এ জেতেন মেসি। অর্থাৎ, ৮ বার মেসি জিতলেন ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার। মেসি ব্যলন ডি’অরও জিতেছেন আটটি।
তবে এই পুরস্কার নিতে লন্ডনে অনুষ্ঠিত মেসি-হালান্ড-এমবাপ্পেদের কেউই ছিলেন না। মেসি লন্ডনে এলে এমএলএস-এর হয়ে বেশ কয়েকটি অনুশীলন মিস হতো বলে আসেননি বলে জানিয়েছে আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম। তার হয়ে পুরস্কার নিতে গিয়ে ফরাসি তারকা থিয়েরি অঁরি মজা করে বলেন, ‘আমি নিচ্ছি। কারণ কখনো এটা জিততে পারিনি।’
বাংলাদেশ সময় সোমবার দিবাগত রাতে ফিফা দ্য বেস্টে দেওয়া হয় আরও পুরস্কার। বর্ষসেরা কোচ হয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটিকে ট্রেবল জেতানো পেপ গার্দিওলা। তিনি পেছনে ফেলেন নাপোলির সাবেক এবং বর্তমানে ইতালি জাতীয় দলের কোচ লুসিয়ানো স্পালেত্তি এবং ইন্তার মিলানের কোচ সিমন ইনজাঘিকে। রিয়ালের থিবো কর্তোয়া এবং মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বুনোকে পেছনে ফেলে সেরা গোলকিপার হয়েছেন সিটির ব্রাজিলিয়ান এদেরসন। ফিফা ফেয়ার প্লে পুরস্কার জেতে ব্রাজিল জাতীয় দল।
নারীদের বর্ষসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা আইতানা বোনমাতি। সবশেষ ব্যালন ডি’অরও জিতেছিলেন তিনি। এছাড়া সেরা নারী গোলকিপার হন ইংল্যান্ডের মারি ইয়ার্পস। বর্ষসেরা নারী কোচও হন ইংল্যান্ডের বর্তমান কোচ সারিনা উইগমান। এ নিয়ে চারবার ফিফা দ্য বেস্ট কোচের পুরস্কার পেলেন তিনি।
এছাড়া বর্ষসেরা গোল (ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড) জেতেন ব্রাজিলের গুইলহেরমে মাদরুগা। নারী ফুটবলে অবদান রাখায় বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয় ব্রাজিলিয়ান নারী ফুটবলার মার্তাকে। গেল বছর এটি পেয়েছিলেন পেলে। এছাড়া ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
Posted ৩:৪৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta