কক্সবাংলা রিপোর্ট(১ এপ্রিল) :: বর্ষা মওসুমের আগে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ঘিঞ্জি উদ্বাস্তু শিবির থেকে এক লাখ রোহিঙ্গাদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করেছে বাংলাদেশ সরকার। বর্তমান কাম্প এলাকায় ভূমিধসের আশংকায় এই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা রোববার (১ এপ্রিল) এএফপি’কে জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের হিসাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের মধ্যে অন্তত দেড় লাখ রোগ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে অসহায় অবস্থায় রয়েছে। সেখানে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে।
গত বছর মিয়ানরারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর শুদ্ধি অভিযানের মুখে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মুসলিম রোহিঙ্গাদের মৌলিক আশ্রয় জোরদার করতে মানবিক ত্রাণ সংস্থাগুলো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
গত বছর আগস্ট থেকে অন্তত সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নিয়েছে। এরা পাহাড়ের পাদদেশে বস্তিঘর তুলতে গিয়ে গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ফলে সেখানে ভূমিধসের আশংকা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের উদ্বাস্তু বিষয়ক কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, বন্যা ও ভূমিধসের মুখে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এক লাখ লোককে জুনের আগে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে।
ইতোমধ্যে ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজারের প্রায় ১৪ বর্গ কিলোমিটার বন এলাকা নবাগত রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ করে বাংলাদেশ। তবে কালাম বলেন, প্রতিদিন চারটি ফুটবল মাঠের সমান বন উজাড় হচ্ছে।
জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে গিয়ে রোহিঙ্গারা ইতোমধ্যে ৫,০০০ একর বন উজার করে ফেলেছে বলে উল্লেখ করেছেন কক্সবাজারের উপ প্রশাসক মহিদুর রহমান।
তিনি বলেন, পাহাড়ের পাদদেশ যখন বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়বে তখন টপসয়েল উন্মুক্ত হয়ে ভারি বর্ষণের সময় ভূমিধসের আশংকা অনেক বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, প্রায় দুই লাখ মানুষ ভূমিধসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
কক্সবাজার ও আশপাশের পার্বত্য জেলাগুলোতে প্রতিবছর ভূমিধসের আতংক দেখা দেয়। নিরক্ষীয় এই এলাকাটি বন্য হাতির আবাস।
গত বছর এই এলাকায় ভূমিধসে প্রায় ১৭০ জন প্রাণ হারায়। বিশেষজ্ঞদের মতে বন উজার ভূমি ধসের আশংকা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
২০১২ সালেও এই এলাকায় ভূমি ধসে ১০০ জন প্রাণ হারায়। এর দুবছর পর নিহত হয় প্রায় ৫০ জন।
গত সপ্তাহে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেস আশংকা ব্যক্ত করে বলেন, বর্ষা মওসুমে রোহিঙ্গারা চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়বে।
এর আগে ঢাকা জানিয়েছিলো যে মিয়ানমার থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পলিয়ে আসা ১,০০,০০০ রোহিঙ্গাকে বঙ্গোপসাগরের একটি দ্বীপে স্থানান্তর করা হবে। সেখানে রোহিঙ্গাদের জন্য আশ্রয় শিবির নির্মাণ করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
Posted ১০:০২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta