রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম

শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
101 ভিউ
বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম

কক্সবাংলা ডটকম :: ডিম, আলু ও পেঁয়াজের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। প্রতি পিস ডিমের দাম ১২ টাকা, আলুর কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং পেঁয়াজের দাম ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোজ্যতেল ও চিনির দাম আগে থেকেই সমন্বয় করা হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে ভোক্তা অধিদপ্তর থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসকরা (ডিসি) বাজার মনিটরিং করবেন বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। জেলা-উপজেলাসহ বড় বড় শহরে মনিটরিং চলবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী জানিয়েছেন, এ ঘোষণার পর সর্বাত্মক শক্তি নিয়ে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন, পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। এজন্য পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর পাশাপাশি বাজার তদারকিতেও জোর দিতে হবে।

এর আগে গত বছরের আগস্টে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এমনকি বেশি দাম দিয়েও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়নি অনেক ক্ষেত্রে। এমন পরিস্থিতিতে সে সময় চাল, আটা, ময়দা, তেল, চিনি, মসুর ডাল, ডিম, সিমেন্ট, রড- এই ৯টি অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম নির্ধারণ করে সরকার।

ঘোষিত দাম মানা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীর তিন বছরের জেল হতে পারে বলেও হুমকি দেয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে কোনো আইনের প্রয়োগ দেখা যায়নি বলে বিশ্লেষকরা জানান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়। কারণ সরকার যে দাম নির্ধারণ করে দেবে, সেই দামে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। ব্যবসায়ীরা যখন বেশি দামে কিনবে তখন তারা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করবে। আর এই সুযোগটা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা নেবে।

তিনি বলেন, চেষ্টা করতে হবে বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা। তবে তাতেও খুব বেশি সাফল্য আসবে বলে মনে হয় না।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমাদের মন্ত্রীরা মাঝে মাঝে ওহি নাজিল করেন। কিন্তু শুধু ওহি নাজিল করলেই হবে না, এর বাস্তবায়নও করতে হবে। বিগত দিনে আমরা দৃশ্যত এর কোনো প্রয়োগ দেখিনি।

গোলাম রহমান বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সহজ নয়। যদিও এ সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কিন্তু এ পদক্ষেপকে বাস্তবায়ন করতে হলে সরবরাহ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হবে, যেন নির্ধারিত মূল্যেই বা তার কমে বেচাকেনা করা সম্ভব হয়।

এ অর্থনীতিবিদ বলেন, সরবরাহ সংকট থাকলে এ পদক্ষেপ কোনো কাজে আসবে না। তাই সরকারকে প্রথমেই বাজার তদারকি বাড়াতে হবে যেন কেউ কৃত্তিমভাবে সংকট সৃষ্টি করতে না পারে। তাছাড়া বাজারে পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেই এ সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন সম্ভব। তা না হলে দেখা যাবে- কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই।

গোলাম রহমান বলেন, সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি না করেই কেবল মূল্য নির্ধারণ করে দিলে সেটা কার্যকর করা দুরূহ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে বর্তমানে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং মূল্যস্ফীতি। যে কারণে মুদ্রাস্ফীতি হয় সেসব কারণগুলো যদি নির্ধারণ করা না হয় এবং সেসব অবস্থা দূরীকরণে যদি সঠিক ব্যবস্থা নেয়া না হয় তবে ওহি নাজিল করে এবং বাজার মনিটরিং করে মূল্য নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।

লম্বা সময় ধরে দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। তবে সা¤প্রতিক সময়ে যে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে, তা দেখা যাচ্ছে সরকারের পরিসংখ্যানেই। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি হালনাগাদের যে তথ্য সম্প্রতি প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, খাদ্য মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

বিবিএসের হিসাবে, গত আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৭ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৭৩ শতাংশে উঠেছিল। এক দশকের মধ্যে গত আগস্ট মাসে হঠাৎ খাদ্যে মূল্যস্ফীতি প্রথমবারের মতো দুই অঙ্কের ঘরে উঠে যায়। বিবিএস ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে একটি পরিবারে যে আয় হয়, তার প্রায় অর্ধেকই চলে যায় খাদ্যপণ্য কিনতে। শতাংশের হিসাবে খাদ্যপণ্য কেনায় একটি পরিবারে ব্যয় হয় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ। বুধবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে দারিদ্র্যের হার নির্ধারণে কাজ করা সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এমন পরিস্থিতিতে বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো তিনটি কৃষিপণ্যের দাম বেঁধে দিল সরকার। সেগুলো হচ্ছে- ডিম, আলু ও দেশি পেঁয়াজ।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা গত (বুধবার) একটি মিটিং করেছি। সেখানে আমরা তিনটি কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পেঁয়াজ, আলু এবং ডিম- এই তিনটি কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করছি। কৃষি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এ দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত কিন্তু আমরা কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেইনি। আজকেই প্রথম কৃষিপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলাম। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই করা হয়েছে। আশা করছি এটা আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব।

বেঁধে দেয়া দাম অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিটি ফার্মের ডিম ১২ টাকা, আলু খুচরা পর্যায়ে ৩৫-৩৬ টাকা (হিমাগার পর্যায়ে ২৬-২৭) এবং দেশি পেঁয়াজের দাম হবে ৬৪-৬৫ টাকা।  বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী এ দাম নির্ধারণ করে দেন।

এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১২ টাকায় বিক্রির সিদ্ধান্ত যদি ব্যবসায়ীরা না মানেন, তাহলে পণ্যটি আমদানির অনুমতি দেয়া হবে। ইতোমধ্যে ডিম আমদানির অনুমতি চেয়ে ব্যবসায়ীদের আবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা আছে।

এছাড়া আলুর বিষয়ে তিনি বলেন, হিমাগার থেকে বেশি দামে আলু বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেলে নিলাম করে নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি করে দেয়া হবে।

টিপু মুনশি বলেন, উৎপাদন খরচ হিসাব করে আমরা দেখেছি ডিম, আলু ও পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। সেজন্য আমরা কৃষি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে এই দাম নির্ধারণ করেছি। তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে প্রতি হালি ফার্মের ডিম ৫০-৫৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭০-৮০ টাকা।

তবে এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসেইন।  তিনি বলেন, বর্তমানে যে কটি পণ্য নিয়ে বাজারে অস্থিরতা চলছে- সেসব পণ্যগুলোর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। আমরা এজন্য সাধুবাদ জানাই। এটা অনেক আগেই হওয়া উচিত ছিল।

তিনি বলেন, কোনো পণ্যের আমদানির ক্ষেত্রে ফিক্সড নীতিমালা থাকা ঠিক নয়। যখনই কোনো পণ্য নিয়ে কারসাজি হবে বা সংকট তৈরি হবে তখনই তা আমদানির জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। আবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। তাহলে সময়ে সময়ে জিম্মিদশার অবসান ঘটবে।

নাজের হোসেইন বলেন, শুধু দাম নিয়ন্ত্রণ করে দিলেই হবে না। মাঠপর্যায়ে তদারকি করতে হবে। এর আগে কৃষি বিপনন অধিদপ্তর দাম নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু তদারকির অভাবে মাঠপর্যায়ে এর কোনো সুফল মেলেনি।

101 ভিউ

Posted ১:০২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com