বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বৃহস্পতিবার ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

ব্রুস লি : মার্শাল আর্টের এক কিংবদন্তী

শুক্রবার, ২৩ জুন ২০১৭
755 ভিউ
ব্রুস লি : মার্শাল আর্টের এক কিংবদন্তী

কক্সবাংলা ডটকম(২৩ জুন) :: ব্রুস লি’র নাম জানে না বা শোনে নি এমন মানুষ খুব বেশি একটা পাওয়া যাবে না। অসামান্য প্রতিভাধর এক ব্যক্তি ছিলেন তিনি। সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে তার কোটি কোটি ভক্ত। তাদের কাছে তিনি ‘কুংফুর এক ও অদ্বিতীয় সম্রাট’। মার্শাল আর্টকে তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিয়ে গিয়েছিলেন চলচ্চিত্র ও দেশ-বিদেশে তার মার্শাল আর্টের নানা প্রদর্শনীর সুবাদে। তিনি ছিলেন অনেকের আদর্শ। টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত বিংশ শতাব্দীর একশো জন প্রভাবশালী ব্যক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য এক নাম ছিল ব্রুস লি।

ব্রুস লি’র ফ্লাইং কিক, হাতের মুভমেন্ট ছিল চোখের পলক ফেলার চেয়েও দ্রুত, যা শুধু তার ভক্তদেরই নয়, আপামর জনসাধারণকেও মুগ্ধ করতো। অসাধারণ ছিল তার ফিটনেস। সতেজতা এবং তারুণ্যের প্রতীক ছিলেন তিনি। কাজ ছাড়া কিছুই বুঝতেন না তিনি। মার্শাল আর্ট আর অভিনয় ছাড়াও নানা বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ছিলো তার। অবসরে আঁকতেন ছবি। কবিতা লেখার প্রতিও ছিল ঝোঁক। তার একটি কবিতা সংকলনও বের হয়েছিল। সারা জীবন এক মনে নিজের কাজটি করে গেছেন। তাকে পর্দায় দেখা ছিল ভক্তদের কাছে চরম আনন্দময় এক মুহূর্ত। তবে পর্দার বাইরে ছিলেন সম্পূর্ণ ভিন্ন রকম একজন ব্যক্তিত্ব। আত্মকেন্দ্রিক, উদ্ধত এবং প্রচন্ড বদমেজাজী একজন মানুষ।

ব্রুস লি’র সেই অসামান্য ফ্লায়িং কিক। ছবিসূত্রঃ kbcs.fm

সত্তর দশকের শুরুর দিকে অভিনয়ের জগতে তার পথচলার সূচনা ঘটে। কিন্তু মাত্র দু’বছরের মধ্যে অসাধারণ কলাকৌশল আর অভিনয় দক্ষতায় বিশ্বের স্বনামধন্য তারকাদের সারিতে নিজের নামটি অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন ব্রুস লি। শুধু কি তাই? তিনিই এশিয়ার প্রথম অ্যাকশন হিরো, যিনি পারিশ্রমিক পেতেন মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ব্রুস লি তার সমস্ত ছবিতেই একক নায়ক হিসেবে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চরিত্রের ভূমিকায় অভিনয় করে গেছেন। দর্শক তার ছবির দুর্ধর্ষ পাঞ্চ, অ্যাকশন এবং ফ্লায়িং কিকের দৃশ্যগুলো উপভোগ করার জন্য অধীর আগ্রহে প্রেক্ষাগৃহে অপেক্ষা করতো।

অনেকেই ব্রুস লিকে চীনা মনে করলেও তিনি কিংবা তার পরিবার কখনই চীনের অধিবাসী ছিলেন না। লি জন্মেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে, ১৯৪০ সালের ২৭ নভেম্বর। পিতা লি হুই চোয়েন ছিলেন একজন জনপ্রিয় পেশাদার নাট্যশিল্পী। হংকংয়ের অধিবাসী হুই চোয়েন বসবাসের উদ্দেশ্যে সপরিবারে আমেরিকায় পা রাখেন। ব্রুস লি’র মা গ্রেস নবজাতকের নাম রাখতে চেয়েছিলেন ‘ইউমেন ক্যাম’, কিন্তু হাসপাতালের নার্সের কাছে নামটির উচ্চারণ লেগেছিল বেশ খটমটে। তাই তিনি নবজাতকের বার্থ সার্টিফিকেটে নাম লেখেন ব্রুস লি। নামটি ব্রুসের বাবা-মায়ের পছন্দ হওয়ায় তারা আর নাম বদলানোর কথা ভাবেননি। ব্রুসের যখন মাত্র এক বছর বয়স, তখন পরিবারের সকলে আবার চলে আসেন হংকং-এ।

পিতা-মাতার সাথে শিশু ব্রুস লি। ছবিসূত্রঃ weibodaily.com

ছোটবেলা থেকেই ব্রুস লি মারামারিতে ছিলেন ওস্তাদ। সমবয়সী বন্ধুদের নিয়ে মারামারি করার জন্য গড়ে তোলেন একটি দল। কিন্তু হালকা পাতলা ব্রুস লি মারাামারিতে সবসময় পেরে উঠতেন না। আর তাই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য তিনি শেখা শুরু করেন মার্শাল আর্ট।

‘দ্য বিগিনিং অফ অ্যা বয়’ চলচ্চিত্রে ব্রুস লি অভিনীত একটি দৃশ্য। ছবিসূত্রঃ Pinterest

কুংফুর পাশাপাশি ছোটবেলা থেকেই তার অভিনয়ের নেশা জন্মায়। বাবার সাথে স্টুডিওতে যেতেন। স্টুডিওতে শিল্পীদের অভিনয় দেখে তার অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জন্মায়। মাত্র ছ’বছর বয়সেই ব্রুস লি ‘দ্য বিগিনিং অফ অ্যা বয়’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। ব্রুস লি’র একজন আত্মজীবনীকার এ প্রসঙ্গে বলেছেন- “সাত বছর বয়সেই লি’র পর্দায় উপস্থিতি ছিল বেশ সাবলীল ও শক্তিশালী। সঙ্গে ছিল তার বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থাপনা।” হংকং-এর সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার স্কুলে পড়াশোনার সময় ব্রুস লি কুংফুর পাশাপাশি উইং-চানও শিখতে শুরু করেন। এটি চাইনিজদের আত্মরক্ষার অতি উন্নত এক কৌশল। এর জন্য দরকার খুব কঠিন অনুশীলন। ধীরে ধীরে লি এ শিল্পেও পারদর্শী হয়ে ওঠেন।

শিক্ষক ইপ ম্যানের কাছে ব্রুস লি শিখেন উইং-চান। ছবিসূত্রঃ pinterest

ব্রাদার এডওয়ার্ড নামের এক স্কুল শিক্ষক ব্রুস লির আচার-আচরণে দুর্বিনীত ভাব দেখে তাকে শাস্তি দেয়ার জন্য একদিন স্কুলের বক্সিং রুমে নিয়ে যান এবং তার সঙ্গে বক্সিং লড়তে বলেন। লি জীবনে কোনোদিনও বক্সিং শেখেননি। কিন্তু উইং চান-এর কৌশল জানা থাকায় তা অবলম্বন করে খুব সহজেই অভিজ্ঞ প্রতিদ্বন্দ্বী শিক্ষককে ধরাশায়ী করে দেন। তিনি লি’র কৌশল দেখে খুবই খুশি হন এবং তাকে বক্সিং টিমে যুক্ত করে নেন। আর সেই বছরই জীবনের প্রথম টুর্নামেন্টে ব্রুস লি ধরাশায়ী করেন স্কুলের একটানা তিন বছরের বক্সিং চ্যাম্পিয়নকে।

স্কুল বক্সিং প্রতিযোগীতায়। ছবিসূত্রঃ photobucket.com

লি পড়াশুনার সাথে সাথে বক্সিং ও সিনেমার অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অনেক সমালোচকই বলতেন, ব্রুস লি’র মারামারিতে নাচের স্বাদ পাওয়া যায়। হবেই না বা কেন? নাচ ছিল ব্রুসের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একটি বিষয়। জনপ্রিয় প্রায় সব রকম নাচেই তার দক্ষতার প্রতিফলন দেখা যেত। ল্যাটিন আমেরিকার নাচ ‘চা-চা’-তে তিনি ছিলেন পারদর্শী। শুধু তা-ই নয়, এই নাচে তিনি হংকং-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। বহু পুরস্কার পেয়েছেন এই ‘চা-চা’ নাচের প্রতিযোগিতায়।

ল্যাটিন আমেরিকার ‘চা-চা’ নাচের প্রতিযোগিতায় ব্রুস ‍লি। ছবিসূত্রঃ Taringa

মাত্র ১৮ বছর বয়সেই বিশটিরও বেশি হংকং-এর চলচ্চিত্রে অভিনয় করে ফেলেছিলেন ব্রুস ‍লি। দর্শকদের কাছে তিনি ‘লি সিউ লুং’ বা ‘খুদে ড্রাগন’ হিসেবে পরিচিতি পান। ধীরে ধীরে যখন তার জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে, সেই সময় এশিয়ার প্রভাবশালী প্রযোজক রান লিকে তার ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবে লি এত রোমাঞ্চিত হন যে, মাকে বলেই ফেলেন তিনি আর পড়াশুনা করবেন না! চলচ্চিত্রকেই তিনি পেশা হিসেব নিতে চান। কিন্তু ব্রুস লি’র মায়ের তাতে মোটেই মত ছিল না। তার মা চাইতেন আগে হাই স্কুলের পড়াশুনা শেষ হোক, তারপর যা করার লি করুক।

১৮ বছর বয়সে ব্রুস লি অভিনীত চলচ্চিত্রের একটি ‍দৃশ্য।  ছবিসূত্রঃ wikimedia commons

একবার মারামারির জন্য পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হন লি। এসব নিয়ে তার মা বেশ উদ্বিগ্নই থাকতেন। তাই তিনি পড়াশোনার জন্য ছেলেকে আমেরিকায় পাঠিয়ে দেন। ছাত্র জীবনের বাকি সময়টুকু লি আমেরিকাতেই কাটান। সেখানে হাই স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি ভর্তি হন ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনে। সেখানে কুংফু শিখিয়ে পড়ার খরচ জোগাড় করতেন তিনি। সেই সময় লিন্ডা এমেরি নামের এক সুইডিশ ছাত্রী কুংফু শিখতে ব্রুস লি-র কাছে আসে। আর সেখান তাদের থেকেই প্রেম, অতঃপর বিয়ে। মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও ১৯৬৪ সালে লিন্ডাকে বিয়ে করে লি চলে আসেন ক্যালিফোর্নিয়াতে। ১৯৬৫ সালে জন্ম নেয় তাদের প্রথম সন্তান ব্র্যানডন।

স্ত্রী, পুত্র সহ ব্রুস লি। ছবিসূত্রঃ NY Daily News

মার্শাল আর্ট-এ দক্ষতা বাড়ানোর সাথে সাথে কুংফুতে নিজস্ব কিছু স্টাইল আনেন লি। সেই কৌশলের তিনি নাম দেন ‘জিৎ কুনে দো’ অর্থাৎ ঘুষির সাহায্যে শত্রুকে পরাজিত করা। ব্রুসের এই নতুন কৌশল ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। হলিউডের তারকা অভিনেতা স্টিভ ম্যাককুইন এবং জেমস কোবার্ন ছিলেন তার ছাত্র। এক ঘন্টা মারামারি শেখানোর পারিশ্রমিক হিসেবে তিনি নিতেন ২৫০ ডলার। রিচার্ড গোল্ডস্টাইন তার বই ‘দ্য ভিলেজ ভয়েস’-এ একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। ঘটনাটি ঘটেছিল হংকং-এর একটি লেট নাইট শো-তে। সেই শো-তে মার্শাল আর্টের কয়েকজন শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন ব্রুস লিও। মার্শাল আর্টের এক অভিজ্ঞ শিক্ষক অন্যদের চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছিলেন, সেখানে তার চেয়ে কেউ শক্তিশালী থাকলে তাকে যেন স্টেজ থেকে ছুড়ে ফেলে দেখায়। কেউই পারেননি। এরপর ব্রুস লি উঠে দাঁড়ান এবং দুম করে শিক্ষকের মুখে ঘুষি মেরে দেন। এক ঘুষিতেই ডিগবাজি খেয়ে পড়ে যান সেই অভিজ্ঞ শিক্ষক। এমনই ঘুষির জোর ছিল ব্রুস লি’র জিৎ কুনে দো-র।

ব্রুস লি-র জিৎ কুনে দো-র স্টাইল। ছবিসূত্রঃ Acadoceo

ইন্সট্রাক্টর হিসেবে লির নাম-ডাক ছড়িয়ে পড়লেও চলচ্চিত্র জগতে তেমন সাফল্য পাচ্ছিলেন না তিনি। কারণ ঐ সময়ে আমেরিকান চলচ্চিত্রে এশিয়ানদের কাজ করার খুব একটা সুযোগ থাকতো না। ছোটখাট চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেতেন এশিয়ান অভিনেতারা। ১৯৬৬ সালে ব্রুস লি টিভি সিরিজ ‘দ্য গ্রিন হর্নেট’-এ অভিনয়ের সুযোগ পান। অ্যাকশনধর্মী এই সিরিজটিতে অভিনয় করে ব্রুস লি প্রচুর পরিচিতি লাভ করেন। গ্রিন হর্নেট-এর প্রধান চরিত্র ‘কোটো’র ভূমিকায় লির দুর্দান্ত অ্যাকশনে ভরপুর অভিনয় দেখার জন্য দর্শকেরা টিভির সামনে মুখিয়ে থাকতো।

গ্রিন হর্নেট-এর প্রধান চরিত্র ‘কোটো’র ভূমিকায় লি। ছবিসূত্রঃ worldsgreatestcritic.com

লির ইচ্ছা ছিল কুংফু নামে একটি টিভি সিরিয়ালে নায়ক হওয়ার। সেই সিরিয়ালের গল্পটি গড়ে উঠেছিল এমন একজন মার্শাল আর্ট হিরোকে নিয়ে, যিনি পশ্চিমা দেশে এসে গুন্ডাদের শায়েস্তা করেন বুদ্ধি আর কুংফুর মার দিয়ে। সম্ভবত ব্রুস লি’র উচ্চতা মাত্র পাঁচ ফুট সাড়ে সাত ইঞ্চি হওয়াতে সেই চরিত্রের জন্য অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান ডেভিড ক্যারাডিন। তার উচ্চতা ছিল ছ’ফুটেরও বেশি। শুধু তা-ই নয়, ব্রুস লি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন যে এশিয়ান বলে হলিউডের ছবিতে তিনি সুযোগ পাচ্ছেন না। তবুও জেদ চেপে গিয়েছিল তার মাথায়। শুধু অভিনেতা বলেই নয়, তারকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি।

এরপর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য সপরিবারে চলে আসেন হংকং। হংকং-এ এসে তিনি প্রযোজক রেমন্ড চো‘র সঙ্গে জুটি গড়ে তোলেন। লিকে নিয়ে রেমন্ড ‘দ্য বিগ বস’ নামে একটি কুংফু ছবি তৈরি করেন। ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর ব্রুস লি নিজে দর্শকদের প্রতিক্রিয়া দেখতে নিজেই সিনেমা হলে গিয়ে হাজির হন।

প্রযোজক রেমন্ড চো’র সঙ্গে ব্রুস লি। ছবিসূত্রঃ imdb

হংকং এর দর্শকরা বিভিন্ন কুংফুর ছবি দেখে অভ্যস্ত। তাই ভিন্ন কিছু দেখাতে না পারলে তাদের খুশি করা সম্ভব না লি তা জানতেন। দেখা গেলো পর্দায় ব্রুসের দুর্দান্ত ফ্লাইং কিক আর ঘুষি দেখেই দারুণ মুগ্ধ দর্শকেরা। তারা ব্রুসের মারামারি দেখতে দেখতে এতটাই উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠছিল যে লাফিয়ে কেউ কেউ সিটের উপরেই উঠে পড়েছিল!

দ্য বিগ বস সিনেমার একটি দৃশ্য। ছবিসূত্রঃ martialartsactionmovies.com

‘দ্য বিগ বস’-এর মুক্তির পরে ব্রুস লি’র ‘দ্য চাইনিজ কানেকশান’ মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে এবং ‘রিটার্ন অফ দ্য ড্রাগন’ ১৯৭৩ সালে। এসব ছবি বক্স অফিসে এতটাই হিট হয় যে ব্রুস লি’র জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়তে থাকে। তিনি প্রথম সারির এশিয়ান ফিল্ম স্টার হয়ে উঠেন। সেই সাথে ইউরোপ এবং আমেরিকায়ও তার ভক্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। লি সে সময় শুধু অভিনয় নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন না, তিনি চিত্রনাট্য লেখাও শিখেছিলেন এবং ছবি পরিচালনাও করছিলেন।

ব্রুস লি-র অফস্ক্রিন ফাইটিংয়ের একটি দৃশ্য। ছবিসূত্রঃ nydailynews

‘রিটার্ন অফ দ্য ড্রাগন’ চলচ্চিত্রটি অনেকেরই দেখা। এ ছবিতে আমেরিকান কারাতে চ্যাম্পিয়ান চাক নোরিস অভিনয় করেছিলেন। ছবিটিতে রোমান কলোসিয়ামে ব্রুস এবং নোরিসের একটি ফাইটিং দৃশ্যকে ক্লাসিক সিন হিসেবে অভিহিত করা হয়।

‘রিটার্ন অফ দ্য ড্রাগন’ চলচ্চিত্রে ব্রুস এবং নোরিসের একটি ফাইটিং দৃশ্য। ছবিসূত্রঃ channelawesome.com

একবার চাক নোরিসকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ব্রুসের কৌশল কারো পক্ষে নকল করা সম্ভব কিনা। এর উত্তরে চাক নোরিস বলেছিলেন,”ব্রুসের স্টাইল একান্তই তার নিজস্ব।” ব্রুসের চতুর্থ ছবি ‘রিটার্ন অফ দ্য ড্রাগন’ মুক্তি পায় ‘এন্টার দ্য ড্রাগন’ এর পরে। তবে এন্টার দ্য ড্রাগন ছবিটির মুক্তি দেখে যেতে পারেন নি লি।

‘এন্টার দ্য ড্রাগন ’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য। ছবিসূত্রঃ IMDb

তখন তার বয়স মাত্র বত্রিশ, প্রচুর পরিশ্রম করে হংকং এ ‘গেম অফ ডেথ’ ছবিটি করেছিলেন এবং সে সময়ই করুণ ঘটনাটি ঘটে। ১৯৭৩ সালের ২০ জুলাই হংকংয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্টে তার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।

তার এ মৃত্যু এখনো রহস্যে মোড়া। কিন্তু সে অন্য এক গল্প। সনাতন মার্শাল আর্টকে বহির্বিশ্বে জনপ্রিয় করে তোলা, পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে এশীয় সংস্কৃতি, বিশেষ করে চীনা সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছিলেন ব্রুস লি। তার কারণে চলচ্চিত্র জগতে তৈরি হয়েছিল নতুন এক ধারা। এ ক্ষণজন্মা শিল্পীর মৃত্যুর এত বছর পরও তার ভক্তের সংখ্যা কমেনি, বরং দিনদিন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের কাছে তিনি এখনও চির নতুন জীবন্ত এক কিংবদন্তি।

ব্রুস লি-র স্মৃতি সংরক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে স্থাপিত ব্রুস লি-র ভাস্কর্য।

755 ভিউ

Posted ৭:০২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৩ জুন ২০১৭

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com