কক্সবাংলা ডটকম(২৩ ডিসেম্বর) :: ভারতের আসাম রাজ্যে প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর তৈরি হয়েছে দ্বিতল সেতু। দীর্ঘ দুদশকের অপেক্ষার পর শেষমেশ তৈরি হল ডবল ডেকার রেল অ্যান্ড রোড ব্রিজ। ব্রহ্মপুত্র নদের উপর এই সেতু নির্মাণের দাবি বহুদিন ধরেই করে আদছিলেন অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের মানুষ। সেই মতো ১৯৯৭ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচডি ডি দেবেগৌড়া রেল- রোড ব্রিজের শিলান্যাস করেন। কয়েক বছর আটকে থাকার পর ২০০২ সালে নির্মাণ কাজের সূচনা করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অধুনা প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ী।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ২১ বছর পর আগামী ২৫ ডিসেম্বর উদ্বোধন করা হবে ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।.
আসামের ডিব্রুগড় জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তৈরি হওয়া ৪.৯৪ কিলোমিটার ‘বগিবিল সেতু’ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দৈর্ঘ্যের দিকে থেকে এটি এখন ভারতের সবচেয়ে বড় দোতলা সেতু।
বগিবিল দোতলা সেতুকে নির্মাণশৈলী এবং প্রযুক্তির দিক দিয়ে অভিনব উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, এর উপরের তলায় থাকবে সড়কপথ। তিন লেনের এই পথে চলবে বাস, ট্রাক, লরিসহ যাবতীয় যানবাহন। আর নীচে দিয়ে চলবে ট্রেন। সেখানে পাতা হয়েছে ডাবল লাইন। এটি অসমের ডিব্রুগড় জেলার সঙ্গে অরুণাচল রাজ্যের ধেমাজি জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে।
ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘ দোতলা সেতুটি তৈরিতে খরচ হয়েছে ৫,৯২০ কোটি রুপি। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, ১৯৯৭ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। এরপর, সম্ভাব্যতা যাচাই করার পর ২০০২ সালে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি।
প্রয়াত বাজপেয়ির জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরে এই সেতুটি উদ্বোধন করবেন দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী।
নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা ভারতীয় গণমাধ্যমকে জানান, স্থাপত্য ও নির্মাণ শিল্পের এক অনন্য নজির এই বগিবিল ব্রিজ। শুধু যোগাযোগই নয়, উত্তর-পূর্বের সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নেবে এই সেতু। তিনি বলেন, ‘‘খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের বুকে যে কোনও ব্রিজ তৈরি করাই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এটি অতিবর্ষণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। তার উপর আবার ভূমিকম্প প্রবণ। ফলে সব দিক দিয়েই এই ব্রিজ স্বতন্ত্র।”
উদ্বোধনের পরই সেতুটি খুলে দেওয়া হবে। গোটা ব্যাপারটাই অনেকর কাছে প্রত্যাশা পূরণের মতো। কথা হচ্ছিল গোপাল গগৈয়ের সঙ্গে। তিনি জানান অটলবিহারী বাজপেয়ী যখন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তখন আমি স্কুলে পড়তাম। সেই দিনটার কথা মনে আছে এখনও।
এই সেতু চালু হয়ে গেল সুবিধা হবে বহু মানুষের। যাতায়াতের সময় কমবে। অসমের তিনসুকিয়া থেকে অরুণাচল প্রদেশের নাহারলাগুন পর্যন্ত যেতে এখনকার চেয়ে অন্তত দশ ঘণ্টা কম সময় লাগবে। এই বগিবেল ব্রিজ সেনা জওয়ানদেরও সাহায্য করবে। ভারতীয় রেলের তৈরি এই ডবল ডেকার সেতুতে দুটি রেললাইন থাকছে। তার অনেকটা উপর দিয়ে যাবে তিন লেনের রাস্তা।
প্রসঙ্গত বাংলাদেশে প্রমত্তা পদ্মা নদীর ওপর তৈরি হচ্ছে ৬.১৫ কিমি দৈর্ঘ্যের দ্বিতল পদ্মা বহুমুখী সেতু। সরকারি খরচে সেতুর প্রথম জরিপ কাজ শুরু হয় ১৯৯৮-৯৯ সালে। ৭২ ফুট প্রস্থ সেতুটিতে থাকবে চার লেনের সড়ক। রেললাইন স্থাপন হবে সেতুটির নিচ তলায়। এর মোট বায় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার কোটির ওপরে।