কক্সবাংলা ডটকম(৯ এপ্রিল) :: প্রকৃতিতে বজ্রপাত হচ্ছে অন্যতম শক্তিশালী প্রাকৃতিক ঘটনা। বজ্রপাতে যেমন প্রচন্ড শক্তির বিদ্যুতের প্রবাহ তৈরী হয় তেমনি সৃষ্টি হয় চোখ ধাঁধানো আলোক রশ্মির। তবে বজ্রপাতের সময় আমরা কেবল আকাশ থেকে মাটির দিকে ছুটে আসা আলোকরশ্মি দেখতে পারি।
এই রশ্মির চেহারা আমাদের কাছে পরিচিত। অথচ মেঘের উপরের দিকে যে রহস্যময় সব আলোকরশ্মি তৈরী হয় তা রয়ে যায় আমাদের চোখের আড়ালে। যারা এধরনের আলো দেখেছেন তারা এর উত্স নিয়ে ধাঁধায় পড়ে যান।
মার্কিন ও কানাডার গবেষকরা এবার সেই আলোর উৎস সন্ধান করে বেড়াচ্ছেন। বিমানের পাইলটরা যখন মেঘের উপর দিয়ে বজ্রপাতের সময় উড়ে যান তখন তাদের অনেকে এ ধরনের আলো দেখতে পেয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন স্যাটেলাইটে ধারণ করা ছবিতেও ধরা পড়েছে এই রহস্যময় আলো।
গত সোমবার ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে উৎক্ষপণ করা এটমোসফিয়ার স্পেস ইন্টার-অ্যাকশন মনিটর (এএসআইএম) বজ্রঝড়ের সময় সৃষ্টি হওয়া এ ধরনের আলো নিয়ে গবেষণা করবে। ৪০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থানরত স্পেস স্টেশন থেকে রহস্যময় আলো ধরা এএসআইএমের জন্য খুব সহজ হবে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, ভূমিতে বজ্রপাতের সময় মেঘের উপরের দিকে যে রহস্যময় আলো তৈরী হয় তার একটি হচ্ছে ‘স্প্রাইট’। এটি মাত্র কয়েক মিলিসেকেন্ড স্থায়ী হয়। কিন্তু এটির রঙ এবং চেহারা বড় অদ্ভুত।
অনেকটা গাছের আকৃতি নিয়ে তৈরী হয় এই আলো। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে নিচের দিকে আবার শিকড়ের আকৃতিও তৈরী হয়। গাঢ় লাল রঙের এই আলো মাঝের স্তরে তৈরী হয়। সবচে উপরে আয়োনস্ফিয়ারে তৈরী হওয়া রহস্যময় আলোর নাম এলভিস।
এটির আকৃতি অনেকটা চাকতির মতো। বজ্রপাতের সময় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পালসের কারণে খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য এটি সৃষ্টি হয়। এর রং হয় নীল। আর স্ট্রাটোসফিয়ারে তৈরী হয় ব্লু জেটস নামের আলো।
নীল রঙের এই আলোকরশ্মির আকৃতি অনেকটা জেটবিমানের মতো। একারণে হয়তো এর এমন নামকরণ। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো এসব আলোর রহস্যভেদ করা সম্ভব হবে।
-বিবিসি