কক্সবাংলা ডটকম(২৬ মে) :: করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বৈ কমছে না। মার্কিন মুলুক ও ইউরোপের বেশ কিছু দেশে সংক্রমণ কমলেও সারা বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে যাচ্ছে। তবে এরই মধ্যে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে মিলল বড় সাফল্য। মানব দেহে একটি করোনার ওষুধের প্রয়োগ সফল হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আমেরিকান বায়োটেকনোলজি সংস্থা মোদারনা ইনক দাবি করেছে, করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রথম পরীক্ষা সফল হয়েছে। বলা হয়েছে, ভ্যাকসিন দিয়ে শরীরে অ্যান্টিবডি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই অ্যান্টিবডিগুলি ভাইরাসের আক্রমণকে অনেক দুর্বল করে তোলে। প্রথম মানব পরীক্ষার সাফল্যের পরে এখন দ্বিতীয় পর্বের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে ওই সংস্থা।
জানানো হয়েছে, প্রথম বার এই হিউম্যান ট্রায়াল অল্প সংখ্যক লোকের ওপর চালানো হয়েছিল। কিন্তু এবার পরিধি বাড়ানো হবে। করোনা প্রাণহানির মাঝে নিঃসন্দেহে এটি বড় সুসংবাদ।
কীভাবে ট্রায়াল চলছে:
ভ্যাক্সিনের পরীক্ষা নানান ধাপে ধাপে হয়। এতে দেখা হয় এই ওষুধের ফলে শরীরে কী কী প্রভাব পড়ছে। এছাড়া সংক্রমণ কমাতে কত সময় লাগে তার দিকেও নজর দেওয়া হয়। পাশাপাশি এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার দিকেও কড়া নজর দেওয়া হয়। ৪৫ জন সুস্থ ব্যক্তির উপর পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাঁদেরকে ভ্যাকসিনের দুটি লো-ভলিউম শট দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ভ্যাক্সিনের মাত্রা ছিল অপেক্ষাকৃত অনেক কম। এই ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে তাঁদের দেহে মিলেছে কিছু অ্যান্টিবডি, যা কিনা করোনার সঙ্গে লড়াই করতে পারে। মোরদানার সিইও স্টিফেন বেনসেলের মতে, অ্যান্টিবডি তৈরি করা ভাল লক্ষণ, এটি ভাইরাসের বৃদ্ধি রোধ করতে পারে। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এই ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছেন।
ভ্যাকসিনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া:
সংস্থাটি ভ্যাকসিনের কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথাও জানিয়েছে। যখন যখন ভ্যাকসিনের ডোজ বাড়ানো হয়েছিল তখন জ্বর, বমিভাব, পেশী ব্যথা, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথার মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলির উপস্থিতি লক্ষ্য করেছে ওই সংস্থা। এছাড়াও মাঝারি ডোজের ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে ত্বক লাল হয়ে গিয়েছিল। যদিও এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল।
কবে হবে ট্রায়ালের দ্বিতীয় পর্ব:
জুলাইয়ে শুরু করা হতে পারে এই ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় পর্ব। ওই সংস্থা জানিয়েছে, তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি করার চেষ্টা করবে। এবার ৬০০ জনের ওপর করা হবে এই পরীক্ষা। সাধারণত প্রথম ধাপে সফল হওয়া মারাত্মক উল্লসিত হবার মতো কোনও তথ্য না। কারণ ওটিই সঠিক ভ্যাকসিন মানতে হলে, আরও অনেক পরীক্ষা পার করতে হবে ওই ভ্যাকসিনটিকে। তবুও সারা বিশ্ব যখন করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে, তখন প্রথম ধাপে সফলতাও আশা জাগাচ্ছে বিশ্বকে।
মোট ৩ পর্যায়ে ট্রায়াল হবে:
দ্বিতীয়বার সফল হলে করা হবে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। এই ভ্যাকসিনের আরও কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে কিনা তার দিকে দ্বিতীয় ধাপে কড়া নজর দেবেন গবেষকরা। এছাড়াও কীভাবে ওষুধ দেওয়া যায় ও তার মাত্রা কেমন হবে, তাও দেখা হবে।
Posted ২:৪০ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ২৭ মে ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta