কক্সবাংলা ডটকম(২৭ সেপ্টেম্বর) :: নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত পরাজয়ের পরও প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন ক্ষমতা আঁকড়ে রাখতে পারেন, এ আশঙ্কায় শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করেছে মালদ্বীপের বিরোধীদলীয় জোট।
খবর এএফপি।
গত রোববারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বল্প পরিচিত ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহকে দাঁড় করিয়েছিল চারটি রাজনৈতিক দল নিয়ে গঠিত বিরোধীদলীয় জোট। নির্বাচনে বিজয়ের পর ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জটিতে গণতন্ত্র পুনঃস্থাপনে বৈদেশিক সাহায্য কামনা করছে জোটটি।
একটি বিবৃতিতে জোটটি বলছে, ‘আমরা যেন মালদ্বীপের জনগণের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারি, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কোন ধরনের সহায়তা কামনা করা হচ্ছে, এ বিষয়ে স্পষ্ট করে না বললেও বিরোধী সূত্রগুলো বলছে, ইয়ামিন যেন দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, সেজন্য তার ওপর যেন জোর বিদেশী চাপ প্রয়োগ করা হয়।
ইয়ামিনের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার প্রচেষ্টায় এক টেলিভিশন ভাষণে দেশটির সেনাপ্রধান ও পুলিশপ্রধানের প্রচ্ছন্ন সতর্কতার পর বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় ও মূলধারার গণমাধ্যমে বিরোধীদের প্রচারণায় পক্ষপাত, প্রধান বিরোধী দলগুলোর নেতারা জেলে কিংবা নির্বাসনে থাকলেও গত রোববারের নির্বাচনে সুস্পষ্টভাবে পরাজিত হন ইয়ামিন। বিভিন্ন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর আশঙ্কা ছিল নির্বাচনে বড় কারচুপি করবেন তিনি।
আগামী রোববার নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করা ইয়ামিনকে আগামী ১৭ নভেম্বর পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে, ইয়ামিন পিটিশন দায়ের করে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা প্রলম্বিত করতে পারেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীপ্রধান মেজর জেনারেল আহমেদ শিয়াম বুধবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে হাজির হন এবং প্রতিশ্রুতি দেন, নির্বাচনী ফলাফলকে সম্মান জানানো হবে।
শিয়াম বলেন, ‘জনগণ তাদের সুস্পষ্ট মতামত দিয়েছেন। আমরা মালদ্বীপের জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই, সেনাবাহিনী জনগণের আকাঙ্ক্ষার সুরক্ষা দেবে।’
নির্বাচন কমিশন প্রধান আহমেদ শরীফও জানিয়েছেন, ইয়ামিনের দল থেকে নির্বাচনে অনিয়মের কথা তুলে বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন প্রধান বলছেন, ‘আমরা ওই অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখব।’
তবে তিনি এও জানিয়েছেন, নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশে বিলম্বের কোনো যৌক্তিকতা দেখছেন না তিনি।
বুধবার বিরোধী জোট থেকে ইয়ামিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি সলিহর আহ্বান সত্ত্বেও হাই-প্রোফাইল রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দিতে বিলম্ব করছেন তিনি।
নির্বাচনে পরাজয়ের পর পাঁচ রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দিয়েছেন ইয়ামিন। কিন্তু মামুন আবদুল গাইয়ুমসহ আরো শত শত রাজনৈতিক বন্দি এখনো কারাগারে রয়েছেন।
বিরোধীদের দাবি অনুযায়ী, নেতাকর্মীদের কখন ছাড়া হবে, এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইয়ামিন তার পাঁচ বছরের মেয়াদে বেশির ভাগ রাজনৈতিক বিরোধীকে হয় জেলে পুরেছেন কিংবা নির্বাসনে পাঠিয়েছেন।
তাকে অভিশংসনের চেষ্টায় জড়িত সন্দেহে গত ফেব্রুয়ারিতে শীর্ষ বিচারকসহ রাজনৈতিক বিরোধীদের গ্রেফতার করেন এবং দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি।
Posted ২:৪৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta