রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

মিয়ানমার চলমান সেনাশাসন : হতাশা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
127 ভিউ
মিয়ানমার চলমান সেনাশাসন : হতাশা প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা

কক্সবাংলা ডটকম(১০ ফেব্রুয়ারি) :: মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহনের দুই বছর পূর্ণ হল। ২০২০ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) বিপুল ভোটে জয়লাভ করে।দায়িত্ব গ্রহনের আগেই ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে এবং অং সান সু চিসহ এনএলডি’র জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেফতার করে।মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্তিতে গণতন্ত্রপন্থী সাধারণ মানুষ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থকরা নীরব ধর্মঘট পালন করেছে।

মিয়ানমারের এস্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটি শাসন করছে। ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সেনাবাহিনী দেশজুড়ে স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের মুখে পড়েছে যা এর আগে দেখা যায় নাই। সামরিক শাসনের সময়কালের হতাশা, প্রাপ্তি ও প্রত্যাশার কিছু দিক এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

হতাশাঃ সামরিক অভ্যুত্থান মিয়ানমারকে এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে।দীর্ঘদিন ধরে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিদ্রোহী গোষ্ঠী, প্রতিবাদী সাধারণ মানুষ, জাতীয় ঐক্যের সরকার (এনইউজি)এবং তাদের সশস্ত্র সংগঠন পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) সদস্যরা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছে। সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখলের পর ‘মিয়ানমারে প্রতিদিন যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।

সামরিক বাহিনীর সাথে সংঘর্ষে গত দুই বছরে প্রায় তিন হাজার মানুষ নিহত, ১৫ লক্ষ মানুষ গৃহহীন, ৪০ হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং ৮০ লক্ষ শিশু স্কুলে যেতে পারছে না।জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, দেড় কোটি লোক চরম খাদ্য সংকটে ভুগছে।মিয়ানমার সেনাবাহিনী এখনো দেশটির বেশীরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি। তারা বিভিন্ন অঞ্চলে সশস্ত্র গোষ্ঠী ও পিডিএফের আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছে। জাতিসঙ্ঘের তথ্য অনুসারে অভ্যুত্থানের পর থেকে সেনাবাহিনীর সাথে চলমান সংঘর্ষে ১২ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রতি মাসে এই সংখ্যা কয়েক হাজার করে বাড়ছে। সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি’র বিভিন্ন মামলায় মোট ৩৩ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। সু চি ও তার দলের অন্তত ১৬ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি লোক জান্তার হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ও এদের মধ্যে ১৩ হাজার সদস্য কারাগারে আছে।

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশের জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরি করছে। মিয়ানমারের অস্ত্র তৈরির উপকরণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ করছে জার্মানি, জাপান, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ফ্রান্স সহ প্রায় ১৩টি দেশ থেকে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর বিভিন্ন রকম আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরও তাদের অস্ত্র উৎপাদন বন্ধ হয়নি। পশ্চিমাদের সরবরাহ করা উপকরণ ও প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি করা এসব অস্ত্র মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশটিতে চলমান সেনা–সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে ব্যবহার করছে। মিয়ানমার ইস্যুতে নিরপেক্ষতার নীতি নেয়া অনেক দেশ সামরিক শাসকের সঙ্গে ব্যবসা বন্ধ করেনি। চীন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, ইসরায়েল, ইউক্রেনের বিভিন্ন অস্ত্র কোম্পানি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ব্যবহার্য ক্ষুদ্র অস্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কাপাসাকে কাঁচামাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দিয়ে সহায়তা করছে। ক্ষুদ্র অস্ত্র তৈরিতে মিয়ানমার সবচেয়ে বেশি সহায়তা পেয়ে থাকে চীন, রাশিয়া ও ভারত থেকে। সামরিক বাহিনীকে অস্ত্রসহায়তা দেয়া বন্ধ করলে পরিস্থিতির উন্নয়ন হবে বলে অনেকে মনে করে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সবচেয়ে বড় উৎস তেল ও গ্যাস। মিয়ানমারে কাজ করা তেল কোম্পানিগুলো তেল ও গ্যাস শিল্প খাতে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এ থেকে সামরিক সরকার উপকৃত হচ্ছে। এসব কোম্পানি সেনাবাহিনীর নৃশংস কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করছে। দেশের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ তেল ও গ্যাস প্রকল্পের বেশির ভাগ মালিকানা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজের (এমওজিই)। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত এ খাত থেকে আয় হয়েছিল ১৭২ কোটি ডলার।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় যে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের ঠিকাদারের অধিকাংশই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডের।

মিয়ানমারে আফিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং এটি গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। মিয়ানমারের প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করেছে। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে অনেকে শহর ছেড়ে গ্রামাঞ্চলে গিয়ে আফিম চাষে যুক্ত হয়েছে। জীবিকার জন্য আফিম চাষের বদলে অন্য শস্য উৎপাদনে কৃষকদের সহায়তা দিতে হবে।

ক্ষমতা দখলের দুই বছর পূর্তিতে সেনাসরকার চলমান জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জরুরি অবস্থার মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত

হবে না, হলেও তা হবে একতরফা এবং সেই নির্বাচনের লক্ষ্য হবে সেনাবাহিনীর সমর্থনপুষ্ট দলকে ক্ষমতায় থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া। নির্বাচনের জন্য যোগ্য হতে রাজনৈতিক দলগুলোকে কঠোর শর্ত দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর মতে, সেনা সরকার যেসব নিয়মের কথা বলেছে তার প্রায় সবই ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টিকেই গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে, এনএলডি ২০১৫ ও ২০২০ সালের নির্বাচনে এই দলকে হারিয়েই ক্ষমতায় গিয়েছিল। সেনা শাসকদের নির্বাচন পরিকল্পনা থেকে বোঝা যায় যে তারা এন এল ডি কে এই নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে দেবে না। সে জন্য এন এল ডি জনগণকে সামরিক শাসকের আয়োজিত এই নির্বাচন বয়কট করার আহ্বান জানিয়েছে।

প্রাপ্তিঃ ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া সেনাবাহিনী-সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নতুন এ নিষেধাজ্ঞায় এমওজিইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এমওজিই’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

মিয়ানমারে একের পর এক মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এসব দমন–পীড়নে এমওজিই জান্তার অর্থের উৎস হওয়ার কারনে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অন্যান্য দেশের পাশাপাশি, ব্রিটেন মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে জ্বালানি সরবরাহ করে এমন সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেনাবাহিনীর অর্থ, জ্বালানি, অস্ত্র ও সরঞ্জাম পাওয়ার সুযোগ কমিয়ে আনা এই নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য।

অস্ট্রেলিয়া সামরিক সরকার-নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করা দুটি প্রধান ব্যবসায়িক সংস্থার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন, খনির উদ্যোক্তা, জ্বালানি কর্মকর্তা এবং বর্তমান ও সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সাবেক এবং বর্তমান সামরিক কর্মকর্তাদের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে রাশিয়ার তৈরি বিমান ব্যবহার করে বিমান হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে। ৩১ জানুয়ারী কানাডা মিয়ানমারের ছয় ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং বিমানের জ্বালানি রফতানি, বিক্রয় ও সরবরাহ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। ব্রিটেন মিয়ানমারের বিমান বাহিনীকে তার নিজস্ব নাগরিকদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা চালানোর জন্য ব্যবহৃত বিমানের জ্বালানি সরবরাহে সহায়তা করার জন্য দুটি কোম্পানি এবং দুই ব্যক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো মিয়ানমার সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। প্রস্তাবটিতে অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের পাশাপাশি দেশটির রাজনৈতিক নেত্রী অং সান সুচিসহ সব রাজবন্দীর মুক্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবটিতে রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের নিমিত্ত অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানায় এবং সমস্যার সমাধানে আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ২০২১ সালে গৃহীত পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত ও পূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। মিয়ানমারের প্রায় অর্ধেক অংশ এখন
এনইউজির দখলে।সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ চলমান রয়েছে যা এনইউজি’র একটা বড় অর্জন। অনেক সেনাসদস্য ও প্রশাসনে কর্মরত বেসামরিক সদস্য জান্তা সরকারের পক্ষ ত্যাগ করেছে। মিয়ানমারের ইতিহাসে এধরনের ঐক্য আগে দেখা যায়নি।

এনইউজি মিয়ানমারকে ফেডারেল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে সেখানে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন প্রবর্তন করার কথা জানানোর পর আরাকান আর্মি (এএ) প্রথমবারের মতো এনইউজি’র সাথেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ‘বার্মা অ্যাক্ট ২০২২-এর কারণে এনইউজি এখন পুনরুজ্জীবিত। বার্মা অ্যাক্টে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মিয়ানমারসহ এ অঞ্চলে গণতন্ত্রায়ণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এনইউজি মনে করে, বার্মা অ্যাক্টের মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম স্বীকৃতি পেয়েছে। কয়েকটি দেশ এন ইউ জি'র সাথে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে এনইউজি’র মুখপাত্র জানিয়েছে যে রোহিঙ্গারা তাদেরই জনগণ এবং তাদের ওপর যে নৃশংসতা হয়েছে তার বিচার তারা নিশ্চিত করবে। দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে এসব সমস্যার সমাধান হবে। তারা রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তাদের অধিকার রক্ষার আশ্বাস দিয়েছে।

প্রত্যাশাঃ মিয়ানমারের বিপর্যয়কর এই পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ এখনও অনিশ্চিত।চলমান পরিস্থিতিতে সঙ্কট সমাধানের জন্য অবিলম্বে অং সান সু চি সব রাজনৈতিক বন্দীর মুক্তি দেয়া দরকার। গণতন্ত্র পুনঃ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা বন্ধ চলমান সহিংসতার জন্য দায়ীদেরকে জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন। এসব নিশ্চিতে পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ফলপ্রসূ বাস্তবায়ন করতে হবে। আসিয়ান ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো একত্রে মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে ও তাদের স্বাভাবিক জীবিকা নিশ্চিত করতে কার্যকরী সহায়তা প্রদানে
তৎপর হতে হবে।

মিয়ানমারে সামরিক সরকার ও ১৯৮২-এর নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন না করলে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা কম, এনইউজি ক্ষমতায় আসলে এই আইনপরিবর্তন করবে বলে জানিয়েছে। এএ প্রথম দিকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধাচরণ করলেও তাদের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড লিগ অব আরাকানের (ইউএলএ) প্রতিনিধি জানিয়েছে যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত ও তারা বাংলাদেশের সহযোগিতা চায়। রোহিঙ্গাদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করার জন্য গঠিত আরাকান রোহিঙ্গা ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সকে (এআরএনএ) এএ এবং এনউজির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে এবং এই কার্যক্রমের সাথে জাতিসংঘকে যুক্ত করতে হবে। রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে জটিলতা সৃষ্টি করছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তে অস্থিরতা পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির ঝুঁকি তৈরি করেছে। চলমান প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারে শান্তি ফিরে আসবে এবং বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরে যাবে এটাই হোক সবার প্রত্যাশা।

লেখক : ব্রিঃ জেঃ(অবঃ) হাসান মোঃ শামসুদ্দীন, এন ডি সি, এ এফ ডব্লিউ সি, পি এস সি
মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা বিষয়ক গবেষক

 

127 ভিউ

Posted ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com