কক্সবাংলা ডটকম(২০ ডিসেম্বর) :: খেলোয়াড় কেনার মতো পর্যাপ্ত তহবিল পাচ্ছেন না বলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কর্মকর্তাদের ওপর মাঝেমধ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হোসে মরিনহো। তবু আড়াই বছরে ১১ খেলোয়াড় কেনার পেছনে ব্যয় করেন পাক্কা ৩৫ কোটি পাউন্ড! এরপরও ব্যর্থ।
মরিনহো বরখাস্ত হওয়ার পর এখন প্রশ্ন উঠছে, দলবদলে খেলোয়াড় কেনায় কতটা সফল ছিলেন তিনি। তার কেনা ১১ জনের মধ্যে কতজন আলো ছড়াতে পেরেছেন, আর কতজনইবা ব্যর্থ হয়েছেন? মরিনহোর জমানায় ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আসা এ ১১ জনকে নিয়ে বিশ্লেষণ করেছে স্পোর্টস মেইল।
এরিক বেইলি (৩০ মিলিয়ন, ভিলারিয়াল থেকে): মরিনহোর অধীনে শুরুতে কঠিন সময় কাটালেও ক্রমে ভালো করছেন আইভরি কোস্টের ডিফেন্ডার এরিক বেইলি। যদিও এখনো নিজের সেরাটা তিনি দিতে পারেননি।
জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ (ফ্রি, পিএসজি থেকে): ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেই (পিএসজি) থেকে বিনা টাকায় জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মতো স্ট্রাইকারকে দলে পান মরিনহো। তবে তাকে উচ্চ বেতন দিতে হয়েছে। প্রথম মৌসুমেই তিনি দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে ওঠেন। ২৯ গোল করে মরিনহোর আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন সুইডেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। যদিও গোড়ালির ইনজুরিতে পড়ার পর আর কখনই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে স্বরূপে ফেরা হয়নি। পরে যোগ দেন মেজর লিগ সকারের দল লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সিতে।
পল পগবা (৮৯ মিলিয়ন, জুভেন্টাস থেকে): ২০১৬ সালের গ্রীষ্মে জুভেন্টাস থেকে ৮৯ মিলিয়ন পাউন্ডে পল পগবাকে কেনে ম্যানইউ। তবে মরিনহোর প্রত্যাশা মোটেও পূরণ করতে পারেননি ফরাসি মিডফিল্ডার। বরং মাঠের চেয়ে মাঠের বাইরের ইস্যুতেই তিনি বেশি আলোচনায় ছিলেন। তাকে নিয়ে দলের মধ্যে বিভেদও সৃষ্টি হয়। ম্যানইউর সর্বশেষ ম্যাচে তাকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখেন মরিনহো। তখন গুঞ্জন ওঠে, পগবা ফিরে যেতে পারেন জুভেন্টাসে। যদিও এখন মরিনহোর বিদায়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন পগবা।
হেনরিখ মিখিতারিয়ান (২৬ মিলিয়ন পাউন্ড, ডর্টমুন্ড থেকে): বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে আলো ছড়ানো মিখিতারিয়ান ম্যানইউতে মরিনহোর অধীনে ছিলেন ১৮ মাস। তবে কখনই নিজের প্রত্যাশামতো খেলার সুযোগ মেলেনি আর্মেনিয়ান মিডফিল্ডারের। অবশেষে খেলার সুযোগ পেতে তিনি ম্যানইউ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন আরেক প্রিমিয়ার লিগ জায়ান্ট আর্সেনালে।
ভিক্টর লিন্ডেলফ (৩১ মিলিয়ন পাউন্ড, বেনফিফা থেকে): ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে শুরুর মৌসুমটি ছিল দুর্দশাগ্রস্ত, ভুলে ভরা। তবে ক্রমেই তিনি পরিণত হতে থাকেন এবং মরিনহোর শেষ দিকে তার আস্থাভাজনও হয়ে ওঠেন।
নেমানিয়া মাতিচ (৪০ মিলিয়ন পাউন্ড, চেলসি থেকে): সার্বিয়ান এ খেলোয়াড়টি ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলে থাকেন। চেলসি থেকে কেনার পর তিনি হয়ে ওঠেন মরিনহোর একাদশের নিয়মিত মুখ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মাতিচ সফলই।
অ্যালেক্সিস সানচেজ (অদল–বদল চুক্তি, আর্সেনাল থেকে): আর্সেনাল থেকে ম্যানইউতে আসার পর নিজের ছায়া হয়েই আছেন অ্যালেক্সিস সানচেজ। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে মোটেও সুখী নন তিনি। সপ্তাহে ৩ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড বেতন নেয়া এ স্ট্রাইকার গত মার্চের পর প্রিমিয়ার লিগে মাত্র একটি গোল করতে পেরেছেন!
দিওগো দালোত (১৯ মিলিয়ন পাউন্ড, পোর্তো থেকে): ১৯ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডারটি এখনো তেমন সুযোগ পাননি। তবে যেটুকু পেয়েছেন, তার মাধ্যমে এ বার্তা দিয়েছেন তিনি ভবিষ্যতে আলো ছড়াবেন।
ফ্রেড (৫২ মিলিয়ন পাউন্ড, শাখতার থেকে): যে ফ্রেডের দেখা মিলেছে, ম্যানইউ আসলে এ ফ্রেডকে কিনতে চায়নি। তারা মিডফিল্ডারটিকে আরো শাণিত ও চৌকস হিসেবে জানত। সঙ্গত কারণেই তার জায়গা হয়েছে বেঞ্চে, যেখান থেকে আর কবে ফিরবেন, বলা কঠিন।
লি গ্রান্ট (ফ্রি, স্টোক সিটি থেকে): জোয়েল পেরেইরাকে ধার চুক্তিতে পাঠানোয় ‘তৃতীয়’ গোলকিপার হিসেবে স্টোক সিটি থেকে আনা হয় লি গ্রান্টকে। ইংলিশ লিগ কাপে ডার্বি কাউন্টির কাছে হেরে বিদায় নেয়ার ম্যাচে আকস্মিকভাবে সুযোগ মেলে গ্রান্টের। আসলে সার্জিও রোমেরো লাল কার্ড দেখায় বাধ্য হয়েই তাকে ডাকেন মরিনহো।
রোমেলু লুকাকু (৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড, এভারটন): এভারটন থেকে আসার পর গত মৌসুমে দুর্দান্ত খেলে প্রচুর গোল করেছেন বেলজিয়ান স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকু। তবে চলতি মৌসুমে তিনি হতাশ করছেন সবাইকে। রুগ্ণ ফর্মই তার ওল্ড ট্র্যাফোর্ড ক্যারিয়ারকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
Posted ৪:২৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta