রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

যুক্তরাজ্যের RCGP বাংলাদেশি চিকিৎসকদের অবদানের স্বীকৃতি

বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
478 ভিউ
যুক্তরাজ্যের RCGP বাংলাদেশি চিকিৎসকদের অবদানের স্বীকৃতি

কক্সবাংলা ডটকম(২৬ এপ্রিল) :: যুক্তরাজ্যের রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স (আরসিজিপি) নতুন এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীতে দেশটিতে সেবাদানকারী বাংলাদেশি চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান জানানো হয়।

বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ফ্যামিলি ডক্টরের শূন্যস্থান পূরণে ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ সম্মান জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া ওই প্রদর্শনীর নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইগ্র্যান্টস হু মেড দ্য এনএইচএস’।

১৯৮০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যে এনএইচএসের অধীনে কর্মরত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকায় জন্ম নেওয়া চিকিৎসকদের সংখ্যা প্রায় ১৬  শতাংশে উপনীত হয়েছিল। তারা যুক্তরাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ শতাংশের কাছে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছেন। কোনও কোনও এলাকায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের  মধ্যে অর্ধেকই ছিলেন তারা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকে এসে যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় তহবিলে পরিচালিত ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস)-এর স্বাস্থ্য সেবায় অবদান রাখা এমন হাজারো চিকিৎসকের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। ১৯৪০ থেকে ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে আরসিজিপি’র মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের বেশিরভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্য সেবা দেন দক্ষিণ এশীয় চিকিৎসকরা।

রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স-এর অধ্যাপক ময়ূর লাখানি বলেন, আজকের দিন যুক্তরাজ্যের সাধারণ প্র্যাকটিসের বিষয়টি একটি কঠিন কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়। এর সঙ্গে উদ্ভাবন, আমাদের পূর্বসূরীদের সাহস এবং রোগীর ভালোভাবে পরিচর্যার মতো বিষয়গুলোও রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাদের ছাড়া যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস সামগ্রিকভাবে টিকে থাকতে পারতো না।

তিনি বলেন, শুধু চিকিৎসক হিসেবেই নয়, বরং নিজেদের পেশাগত প্র্যাকটিসের জায়গায়, সেখানকার মানুষের কাছে তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছেন। অনেকে অবিশ্বাস্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও আমাদের প্রদর্শনীতে ইতিবাচক বিষয়গুলোই তুলে ধরা হয়েছে। রোগীদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।

এনএইচএস-এর ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে লন্ডনের কেন্দ্রস্থলে রয়েল কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনাসের দফতরে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এমন সময়ে এর আয়োজন করা হলো যখন ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং তহবিল গঠনের প্রয়োজনীতার মতো বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক বাড়ছে।

ডক্টর জুলিয়ান এম সিম্পসন লেখা একটি আলোচিত বইয়ের নাম ‘মাইগ্রেন্ট আর্কিটেক্টস অব দ্য এনএইচএস: সাউথ এশিয়ান ডক্টরস অ্যান্ড দ্য রিইনভেনশন অব ব্রিটিশ জেনারেল প্র্যাকটিস (১৯৪০-১৯৮০)’। এই বইটির ওপর ভিত্তি করে প্রদর্শনীতে কিছু বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সংরক্ষণাগার গবেষণা ও ছবির মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া ৪০ জন চিকিৎসকের মৌখিক সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে যারা ওই সময়ে দক্ষিণ এশিয়া থেকে যুক্তরাজ্যে পাড়ি দেন। এ সময়ের মধ্যে দেশটিতে পাড়ি জমানো চিকিৎসকের মধ্যে কেউ কেউ এখনও প্র্যাকটিস করে যাচ্ছেন।

জুলিয়ান এম সিম্পসন বলেন, এ বিষয়টি মনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, যুক্তরাজ্যজুড়ে যাদের স্বাস্থ্য সেবা নেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই, সেসব মানুষকে এ সেবা দিতেই ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা অনেক চিকিৎসক মানুষকে এ সেবা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা চিকিৎসকরা শুধু ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেই অবদান রাখছেন না, তার বেশ জীবনবোধ সম্পন্ন। আমাদের স্বীকার করতে হবে যে, এনএইচএস-এর স্থপতিদের মধ্যে তারাও ছিলেন।

সিম্পসন ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘প্রাথমিক চিকিৎসা ও সাধারণ চিকিৎসা সেবাকে কেন্দ্র করে চার দশক ধরে বিকশিত হয়েছে এনএইচএস। পারিবারিক চিকিৎসকের দায়িত্ব পালনকারী দক্ষিণ এশীয় চিকিৎসকদের কারণে এনএইচএসকে চিকিৎসক সঙ্কটে পড়তে হয়নি। তাদের কাজের মাধ্যমেই ক্ষেত্রটি বিকশিত হয়েছে যা পরবর্তীতে ব্রিটিশ চিকিৎসা সেবা খাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভে পরিণত হয়েছে।’

কিভাবে ভারতীয় উপমহাদেশের চিকিৎসকরা পারিবারিক চিকিৎসা সেবা খাতে, বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ ও প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের চিকিৎসা সেবা দিতে অবদান রেখেছেন তা তুলে ধরতেই নতুন এই প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে ব্রিটিশ চিকিৎসকদের বিদেশে চলে যাওয়ার কারণে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসকদের যে শূন্যতা  সৃষ্টি হয়েছিল তা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা চিকিৎসকরা। তারা সেই সময় থেকে কাজ শুরু করেছিলেন যখন ‘জেনারেল প্র্যাকটিস’ হাসপাতাল হওয়া চিকিৎসার মতো বরণীয় হয়ে ওঠেনি।

ব্রিটিশ রাজত্বের সূত্রে আগে থেকেই উপমহাদেশের সঙ্গে সংযোগ থাকায় চল্লিশ ও আশির দশকের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার চিকিৎসকদের জন্য পছন্দের জায়গাগুলোর একটি ছিল যুক্তরাজ্য। স্বাধীনতা পাওয়ার পরও উপমহাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা খাত ব্যাপকভাবে ব্রিটিশ প্রভাবাধীন থেকে গিয়েছিল।

আরসিজিপি উল্লেখ করেছে, সাধারণ চিকিৎসক হিসেব কাজ করতে আগ্রহী ব্রিটিশ চিকিৎসকদের অভাবের কারণে দক্ষিণ এশীয় চিকিৎসকদের ওই খাতে কাজ করার সুযোগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল।

বিশেষ করে দরিদ্র ও শিল্পপ্রধান এলাকাগুলোতে রোগীদের চাপ ছিল অনেক বেশি কিন্তু সেই অনুযায়ী সাধারণ চিকিৎসা দেওয়ার মতো লোকবল পাওয়া কঠিন ছিল। যার ফলে ওই স্থানগুলোতে অনেক বিদেশি চিকিৎসক গিয়েছিলেন। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে আসা অভিবাসীদের অনেক বড় প্রভাব পড়েছে ব্রিটিশ চিকিসা সেবা খাতে।

বর্তমানে ‘জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল’-এ নিবন্ধিত চিকিৎসকদের মধ্যে ১৭২৪ জনেরই নাম প্যাটেল, যা যুক্তরাজ্যে স্থানীয়ভাবে বহুল প্রচলিত স্মিথ নামধারী চিকিৎসকদেরদের সংখ্যার তুলনায়  সামান্য কম। নিবন্ধিত স্মিথ নামধারীদের সংখ্যা ১৭৫০।

চাকরির জন্য আবেদন করা দক্ষিণ এশীয় চিকিৎসকদের প্রায়ই বর্ণবাদ ও লৈঙ্গিক বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এই প্রদর্শনীতে এ বিষয়টিও তুলে ধরা হবে যে তারা কি ধরণের বাধা পেরিয়ে এই পর্যায় পর্যন্ত এসেছেন। ‘দ্যা রয়েল কলেজ অফ জেনারেল প্র্যাক্টিশনার্স’ যুক্তরাজ্যের সাধারণ চিকিৎসা সেবা দেওয়া চিকিৎসকদের সংগঠন, যেখানে ৫২ হাজার চিকিৎসক নিবন্ধিত।

478 ভিউ

Posted ৮:৩৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com