কক্সবাংলা ডটকম(১৬ ফেব্রুয়ারি) :: যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ব্যবস্থা সংস্কারে উত্থাপিত বেশ কয়েকটি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সিনেট। বৃহস্পতিবার মার্কিন সিনেটে বেশ কয়েকটি অভিবাসন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি প্রস্তাবও। খবর এএফপি।
শৈশবে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসা, বর্তমানে তরুণ অভিবাসী, যাদের ড্রিমার্স বলে অভিহিত করা হয়— এ রকম প্রায় ১৮ লাখ অভিবাসীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের চাপ ছিল সিনেটরদের ওপর। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেট চলতি সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত সময় নিয়েছিল। এ সময়ের মধ্যে ড্রিমার্সদের নাগরিকত্বের পথ সুগম করাসহ সীমান্ত নিরাপত্তা ও চলমান অভিবাসন নীতিমালা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল।
তবে এ প্রচেষ্টা বেশ ভয়ানকভাবেই ব্যর্থ হয়েছে এবং পুরো অভিবাসন প্রক্রিয়াকেই ঝুলিয়ে দিয়েছে। আইনপ্রণেতারা স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকায় ফিরে গিয়ে অবস্থা পুনর্মূল্যায়ন করার চেষ্টা করছেন। আগামী ৫ মার্চের সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে লাখো তরুণ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে।
ট্রাম্পের বহুল কাঙ্ক্ষিত অভিবাসন নীতিমালা মার্কিন কংগ্রেস ও সিনেটে বেশ বিরোধিতার মুখোমুখি হয়ে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে গৃহীত দ্বিদলীয় পরিকল্পনাকে ‘পুরো বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ট্রাম্প। সেই পরিকল্পনায় প্রেসিডেন্টের ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগের হুমকি দেন তিনি।
১৮ লাখ অভিবাসীর আইনি অবস্থান নির্ধারণে নিজের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চান ট্রাম্প। সে কর্মসূচির অংশ হিসেবে ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের সীমান্ত নিরাপত্তা বাজেট সরবরাহ নিশ্চিত করতে চান তিনি। যার মধ্যে আছে মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ পরিকল্পনা। একই সঙ্গে এতদিন বৈধভাবে পাওয়া ডাইভারসিটি ভিসা লটারি (ডিভি) প্রদান বন্ধ করার পরিকল্পনাও হাতে নেয়া হয়েছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের প্যাকেজ পরিকল্পনা ৬০-৩৯ ভোটে সিনেটে প্রত্যাখ্যাত হয়। এর মাধ্যমে হোয়াইট হাউজকে একটি বার্তা পাঠানো হয়। এ প্রক্রিয়ায় ট্রাম্পের সরাসরি অংশগ্রহণে নাখোশ তার রিপাবলিকান দল।
ভোট শেষে রিপাবলিকান দলীয় সিনেট সদস্য লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ‘মনে হচ্ছে অভিবাসন বিলে বাম ও ডানের ভূতরা আবার জিতেছে।’
এদিকে সিনেটে শীর্ষ ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার তার সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে জানান, ‘ভোটটি প্রমাণ করছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিকল্পনা কখনো আইনে পরিণত হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্রে ড্রিমার্স বা ‘স্বাপ্নিক’ হিসেবে পরিচিত বেশ বড় একটি গোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ায় যখন ট্রাম্প ওবামা যুগের ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডিএসিএ) কর্মসূচি আটকে দেন এবং ছয় মাসের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য কংগ্রেসকে নির্দেশনা দেন।
প্রায় ৬ লাখ ৯০ হাজার ড্রিমার্স ডিএসিএ পরিকল্পনায় রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন করেননি অথচ এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য এমন ড্রিমার্সদের সংখ্যা আরো ১১ লাখ। বিষয়টি যদি সুরাহা না হয় এবং সিনেট যদি কোনো সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে পারে, তাহলে ১১ লাখ ড্রিমার্সের যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রাম্প বারবার বলে আসছিলেন, আগের দুটি কর্মসূচির ফলে সন্ত্রাসীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ গ্রহণ করে আমেরিকানদের হত্যা করে আসছে।
উল্লেখ্য, শুরু থেকেই ট্রাম্পের অভিবাসন আইনের বিরোধিতা করে আসছেন ডেমোক্র্যাটরা।
Posted ২:৩১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta