এস্তোনিয়ার তালিনে বুধবার রাতে দিয়েগো কস্তার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে ম্যাচ শুরুর ৫০ সেকেন্ডের মাথায় এগিয়ে যায় আতলেতিকো।
অল-স্প্যানিশ ফাইনালে উয়েফা সুপার কাপের ইতিহাসে দ্রুততম গোলে শুরু হয় অ্যাটলেটিকোর। ম্যাচের শুরুর মিনিটেই গোল করে বসেন ডিয়েগো কস্তা। ডিয়েগো গডিনের বাড়ানো বল মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাল খুঁজে নেন কস্তা। এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড তাতে কাপের ইতিহাসে দ্রুততম গোলের রেকর্ডটিই করে বসেন।
ম্যাচের ২৭ মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। গ্যারেথ বেলের ক্রসে মাথা ছুঁয়ে জালে বল পাঠান ফরাসি ফরোয়ার্ড করিম বেনজেমা।
মধ্যবিরতির পর ৬৩ মিনিটে সার্জিও রামোসের স্পটকিকে এগিয়ে যায় রিয়াল। কর্নার থেকে আসা বলে অ্যাটলেটিকো ডিফেন্ডার হুয়ানফ্রান হাতে ছুঁয়ে বসলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।
টানটান উত্তেজনা আর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের সময়ে ৭৯ মিনিটে সমতায় ফেরে অ্যাটলেটিকো। এবারও গোলদাতা কস্তা। তাতেই খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
পরে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দুই গোল করে জয় নিশ্চিত করে অ্যাটলেটিকো। প্রথমে ৯৮ মিনিটে গোল করেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সাউল। আর ১০৪ মিনিটে আরেক স্প্যানিশ কোকে শেষ পেরেকটি ঠোকেন।
বাকি সময়ে তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি গত মাসে ইউভেন্তসে পাড়ি জমানো ক্লাবের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া প্রথম কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলতে নামা রিয়াল মাদ্রিদ।
প্রতি বছর নতুন মৌসুমের শুরুতে আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাজয়ী ও ইউরোপা লিগের চ্যাম্পিয়নের মধ্যে লড়াইটি হয়ে থাকে। এবারই প্রথম একই শহরের দুটি ক্লাব এই লড়াইয়ে মুখোমুখি হলো।
আর প্রথম ক্লাব হিসেবে তিনবার প্রতিযোগিতাটিতে খেলার সুযোগ পেয়ে প্রতিবারই শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়লো আতলেতিকো। ২০১০ ও ২০১২ সালে আগের দুবার জিতেছিল তারা।
এদিকে ১৯৪৮ সালের পর এত বড় ব্যবধানের হার দিয়ে রিয়ালে মাদ্রিদে কোচিং শুরু করলেন নতুন কোচ হুলেন লোপেত্তেগি। শেষ এমন অভিজ্ঞতা ছিল মাইকেল কিপিংয়ের।
মৃত্যু, কর আর ইউরোপিয়ান মঞ্চে অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে জয়; এতদিন পর্যন্ত রিয়াল সমর্থকদের জন্য এই তিনটি শব্দই ছিল অমোঘ সত্যের মতো। কিন্তু এক হারই তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে অন্তত বড় রকমের এক পালাবদল শুরু হচ্ছে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। রোনালদো-জিদানবিহীন মৌসুমের শুরুই এখন বুকে কাঁপন ধরানোর জন্য যথেষ্ট ক্লাবটির সমর্থকদের জন্য।
ভিনিসিয়াস জুনিয়র, থিবো কোর্ত্তয়া ও আলভারো অদ্রিয়োলা- এবারের দলবদলে এই বড় প্রাপ্তি রিয়াল মাদ্রিদের। কিন্তু রোনালদোর শূন্যস্থান পূরণে যথেষ্ট নয়। যারা হতে পারতেন যোগ্য বিকল্প সেই এডেন হ্যাজার্ড, কাইলিয়ান এমবাপে ও নেইমারকে ছুঁতে ব্যর্থ রিয়াল সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ।
এক শিরোপা হারানোয় নতুন কোচ হুলেন লোপেত্তেগির উপর বিশ্বাস হারানোর কিছু নেই রিয়াল সভাপতির। দলবদলের মৌসুমে বড় কোনো খেলোয়াড়ও তুলে দেয়া হয়নি তার হাতে। সামনে পড়ে আছে লম্বা এক মৌসুম। তবে এই হারই আবার ফ্লোরেন্তিনো পেরেজকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে শীতকালীন দলবদলে বড় মানের খেলোয়াড়ের পেছনে ছুটতে হবে তাকে!