রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঝিমিয়ে পড়ছে

শনিবার, ৩০ জুন ২০১৮
303 ভিউ
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঝিমিয়ে পড়ছে

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৯ জুন) :: রোহিঙ্গা কূটনীতি ঝিমিয়ে পড়ছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ক্রমান্বয়ে দূরান্বয়ী হচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, মূলত মিয়ানমারের কথা দিয়ে না রাখার নীতির কারণেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার কী চাচ্ছে সেটা বাংলাদেশের কাছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও পরিস্কার হচ্ছে না।

কূটনীতি বিশ্নেষক ও সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবীর বলেন, রোহিঙ্গা কূটনীতির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত দ্রুত প্রত্যাবাসন। প্রত্যাবাসন যত দীর্ঘায়িত হবে, বাংলাদেশের জন্য তত বেশি সংকট সৃষ্টি হবে।

সংশ্নিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কূটনীতির বর্তমান অবস্থা হচ্ছে বানরের তৈলাক্ত বাঁশ বেয়ে ওঠার অঙ্কের মতো।

এক ফুট এগোচ্ছে তো দুই ফুট পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য মিয়ানমার যখন যেভাবে সহযোগিতা চেয়েছে, বাংলাদেশ সহযোগিতা করেছে। কিন্তু মিয়ানমার আগের দিন আলোচনার টেবিলে এক বিষয়ে সম্মত হলে পরের দিন সকালেই তা ‘ভুলে’ যাচ্ছে।

যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপসহ মাঠ পর্যায়ে প্রত্যাবাসনের জন্য অন্যান্য কার্যক্রমে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিশেষ করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির বিষয়ে মিয়ানমার কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, রাখাইনে এখনও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উপস্থিতি কার্যত আগের মতোই। রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের যারা এখনও রাখাইনে আছে, তারাও বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। নিজেদের গ্রামে ফিরতেই পারেনি। এ অবস্থায় বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির আশা একেবারেই অযৌক্তিক।

সূত্রমতে, মিয়ানমার নানা কৌশলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে যতটা সম্ভব দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছে। অবস্থা পর্যবেক্ষণে মনে হয় মিয়ানমার চায় দীর্ঘসূত্রতার সুযোগে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ূক, অন্য কোনো স্থানে পালিয়ে যাক। এভাবে চলতে থাকলে একটা সময়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়টিই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাবে, মিয়ানমার এটাই চাইছে।

অবশ্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, মিয়ানমার যতই কৌশল করুক, তাদের জন্য এ সংকট খুব বেশি দীর্ঘায়িত করা সম্ভব হবে না। কারণ মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। আন্তর্জাতিক আদালতে রাখাইন গণহত্যার বিষয়টিও উঠেছে। যে কোনো মুহূর্তে মিয়ানমার বড় নিষেধাজ্ঞার মুখেও পড়তে পারে।

এ অবস্থায় মিয়ানমারও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির সাম্প্রতিক বক্তব্য থেকেও তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতাও স্বাভাবিক গতিতেই চলছে।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সঙ্গে মিয়ানমারের সমঝোতা স্মারক সইও অব্যাহত কূটনৈতিক প্রচেষ্টারই ফল। সমস্যা হচ্ছে মিয়ানমারকে একটা পর্যায় থেকে আরেকটা পর্যায়ে নিতে অনেক বেশি প্রচেষ্টা চালাতে হচ্ছে। মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন-সংক্রান্ত সবকিছুই খুব ধীরগতিতে করতে চায়।

আঞ্চলিক কূটনৈতিক তৎপরতায় স্থবিরতা :

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, মিয়ানমার আঞ্চলিক কূটনীতিতে এগিয়ে থাকায় খুব বেশি আন্তর্জাতিক চাপ অনুভব করছে না। এ জায়গাটাতেই বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়ছে।

আঞ্চলিক কূটনীতির ক্ষেত্রে চীন মিয়ানমারের বড় সবচেয়ে বড় মিত্র এবং নির্ভরতার জায়গা। আন্তর্জাতিক চাপের অনেক কিছুই মিয়ানমার একেবারেই গায়ে মাখছে না চীনের সক্রিয় সমর্থনের কারণে। চীন যতই বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতি দেখাক না কেন, প্রকৃতপক্ষে বেইজিংয়ের নীতির সুফল পাচ্ছে মিয়ানমার এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দীর্ঘসূত্রতার আশ্রয় নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। চীন রাখাইনে নিজস্ব অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়নের কাজও স্বাভাবিকভাবে এগিয়ে নিচ্ছে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হলেই সেটা বরং চীনের জন্য স্বস্তিদায়ক।

একই সঙ্গে ভারত, থাইল্যান্ড, লাওস, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, কোরিয়াসহ এ অঞ্চলের প্রভাবশালী দেশগুলোর রোহিঙ্গা কূটনীতিতে জোরালো ভূমিকা নেই। মালয়েশিয়া বিভিন্ন সময় এ ইস্যুতে সরব হলেও তাদের কূটনৈতিক ভূমিকা খুব জোরালো নয়। অন্য দেশগুলো রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে কার্যত নীরব থাকছে। এমনকি ইসলামী দেশগুলোর সংগঠন ওআইসিরও জোরালো কূটনৈতিক ভূমিকা দেখা যায়নি।

শুধু পশ্চিমা দেশগুলোই রোহিঙ্গা সংকটে সরব। মিয়ানমারের যেটুকু কঠোর সমালোচনা তা পশ্চিমা দেশ থেকেই আসছে। তবে রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপের অবস্থান মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত করতেই উৎসাহিত করছে।

প্রত্যাবাসন দীর্ঘায়িত হলে সংকটে পড়বে বাংলাদেশ :

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর বলেন, রোহিঙ্গা কূটনীতিতে বাংলদেশ তার আন্তরিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতায় পড়ছে বলে সন্দেহ হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন যত দ্রুত হবে ততই বাংলাদেশের জন্য মঙ্গলজনক। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অবস্থান যত দীর্ঘ হবে সংকট ততই বাড়বে।

তবে সংকট দীর্ঘায়িত হলে মিয়ানমারের ওপরও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তে থাকবে। সেটা মিয়ানমারের জন্যও মঙ্গলজনক হবে না। এ অবস্থায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার একটা ‘আউটকাম’ বা ফলাফল খুবই জরুরি। আর সেটা হচ্ছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন যথাসম্ভব দ্রুত শুরু হওয়া।

303 ভিউ

Posted ৩:০৮ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩০ জুন ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com