কক্সবাংলা ডটকম(২৪ জানুয়ারি) :: শেয়ারবাজারে আইসিবির ছয় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের খবরে সপ্তাহের তৃতীয় কর্যদিবসে দেশের প্রধান পুজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে এদিন শতাধিক কোম্পানির দরপতন হয়েছে। এদিন স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বোচ্চ দরপতন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের।সূত্র মতে, মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি দর কমেছে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা বা ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ। ফলে দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে কোম্পানিটি।
এছাড়াও রেড জোনে চলে যায় শীর্ষ লেনদেনের এক কোম্পানি। স্বল্পমূলধনী হতভাগ্য সেই কোম্পানিটি হলো জেমিনি সী ফুড।শীর্ষ লেনদেনের তালিকা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আগের কার্যদিবসেও জেমিনি সী ফুড দর বৃদ্ধির তৃতীয় তালিকায় ছিল। সেদিন কোম্পানিটির ৭.২৫ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়েছিল। অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারীরা বলছেন, ছোট-বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা প্রফিট টেকিং করায় উপরোক্ত কোম্পানির শেয়ার দর সংশোধন হয়েছে।
অপরদিকে এদিন শেয়ার দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ডিএসইর দর বৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। জানা যায়, আগের কার্যদিবস সোমবার বাংলাদেশ ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ক্লোজিং দর ছিল ৩ টাকা ২০ পয়সা। আজ লেনদেন শেষে কোম্পানিটির ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা। মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ার দর ৮ টাকা ৩০ পয়সা বা ৯.৯৭ শতাংশ বেড়েছে।
ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সি পার্ল বীচের ৮.১৮ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৭.২৭ শতাংশ, ঢাকা ইন্সুরেন্সের ৬.৩৮ শতাংশ, ইনট্রাকো রিফিউলিংয়ের ৬.৩৭ শতাংশ, ইউনিক হোটেলের ৬.২০ শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডসরের ৫.৮৬ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের ৫.৩৮ শতাংশ, জেনেক্স ইনফুসিস এর ৫.২৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৫.১৭ শতাংশ দর বেড়েছে।
মঙ্গলবার ডিএসইতে ৬০৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে, যা আগের দিন চেয়ে ৯৮ কোটি ৪ লাখ টাকা বেশি।
গত সোমবার ৫০৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ২৯১ পয়েন্টে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে।
আর অপেক্ষাকৃত ভালো মৌলভিত্তি বা ব্লুচিপ খ্যাত ডিএস৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২২৬ পয়েন্টে।
ডিএসইতে ৩৫০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে দর বেড়েছে ৭১টির, কমেছে ১০১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৭৮টির।
সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ১০১ পয়েন্ট বেড়েছে। সিএসইতে ১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে ডিপোজিটরি ফান্ডকে শেয়ারবাজার বিনিয়োগ সীমার (এক্সপোজার লিমিট) বাহিরে রাখলে শেয়ারবাজারে আইসিবির ছয় হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সুযোগ তৈরী হবে। আর শেয়ারবাজারে এত বড় তারল্য আসলে বাজার এখান থেকেই ইউটার্ন নিবে। এতে করে বর্তমানে বাজারে যেসকল শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে, তা ফ্লোর প্রাইস ভেঙ্গে উপরের উঠবে। অর্থাৎ এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে এখান থেকে একটি ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
যার কারণে আইসিবির বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির খবরে শেয়ারবাজার থেকে দীর্ঘদিন সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরাও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। যার কারণে সূচকের সাথে ক্রমাগতই বাড়তে শুরু করেছে লেনদেন। এরই ফলে ফ্লোর প্রাইস ভাঙ্গতে শুরু করেছে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিবির বিনিয়োগের ক্ষমতা বৃদ্ধির খবরের কারণেই ক্রমাগত উত্থানে ফিরতে শুরু করেছে শেয়ারবাজার। সাইড লাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা বাজারে সক্রিয় হতে শুরু করেছে। এখনও আইসিবির বিনিয়োগ আসেনি। বাজারে আইসিবিরি এই বিনিয়োগ আসলে বাজার বর্তমান অবস্থান থেকে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
জানা গেছে, ডিপোজিটরি ফান্ডের বাহিরেও রাষ্ট্রায়ত্ব বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে বিনিয়োগের জন্য এক হাজার কোটি টাকা ঋণ চেয়েছে।
Posted ৫:০০ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta