কক্সবাংলা ডটকম(২ জুলাই) :: দূরদেশে ভালো আছেন ছোট পর্দার একসময়ের দাপুটে অভিনেত্রী ইপসিতা শবনম শ্রাবন্তী— এমনটাই এ-যাবৎ ভেবে নিয়েছিল সবাই। কিন্তু হঠাৎই অবাক করে দিয়ে এ অভিনেত্রী সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে আসেন এবং প্রকাশ করেন তার সংসার ভেঙে যাওয়ার পরিস্থিতির কথা।
তিনি অভিযোগ করেন, তাকে না জানিয়ে তার বাবার বাড়িতে তালাকের নোটিস পাঠিয়েছেন তার স্বামী মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। এরপর শ্রাবন্তীও থেমে থাকেননি, পাল্টা স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন আর যৌতুকের মামলা করেন। বর্তমানে এ অভিনেত্রী বগুড়ায় তার মায়ের কাছে অবস্থান করছেন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে গেল রোববার যোগাযোগ করলে শ্রাবন্তী তার যাবতীয় কথা তুলে ধরেন। তার সে বক্তব্য হুবহু তুলে ধরা হলো:
আপনাদের দাম্পত্য কলহের শুরু যেভাবে—
বাস্তব কথা হলো, সত্যিকারের সুখের জীবন বলতে যা বোঝায়, তা আমরা যাপন করেছি। সাতটি বছর সুখে-দুঃখে দুজন একসঙ্গে পার করেছি। অনেক সুন্দর ছিল সে জীবন। কিন্তু এক বছর ধরে এ সমস্যার শুরু। আলম তো সবকিছু জেনেশুনেই আমাকে বিয়ে করেছিলেন। তিনি আমার পাশেও থেকেছেন সবসময়, বন্ধুর মতো সঙ্গ দিয়েছেন। অথচ হুট করেই তিনি আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা অপবাদ দেয়া শুরু করেন।
এর পেছনের মূল অনুঘটক কী বলে মনে করেন?
আমি নিশ্চিত, আলম আরেকজন নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তার সঙ্গে আমার কথাও হয়েছে। এমনকি সেই মহিলা আমাকে ফোনের মাধ্যমে হুমকি-ধমকিও দিয়েছেন। যদিও আমার কাছে এর কোনো প্রমাণ নেই। অবাক হয়েছি, যিনি আমার সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন, তিনিই উল্টো আমাকে মামলার হুমকি দেন!
খোরশেদ আলম তালাকের নোটিস পাঠানোর পর আপনি তার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেছেন
গত একটা বছর তিনি যেভাবে আমাকে হেয় করে চলেছেন, তাতে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমার। যে কারণে বাধ্য হয়েছি তার বিরুদ্ধে মামলা করতে।
আপনি মামলা করার পরও চাচ্ছেন সবকিছু মিটমাট হয়ে যাক এবং সংসার টিকিয়ে রাখতে, কেন?
এর একটাই কারণ, আমি আমার সন্তানদের ব্রোকেন ফ্যামিলিতে বড় করতে চাই না। ওদের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য আমাদের দুজনার স্বাভাবিক সম্পর্ক জরুরি। আমাদের জীবন তো এখন শেষের পথে। কিন্তু এ শিশুদের তো কোনো দোষ নেই। এদের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কারো নেই। আমি চাই, ওদের জীবন সুন্দর হোক এবং হেসে-খেলে বড় হোক। ওদের যেন বলতে না হয়, তাদের বাবা-মা ডিভোর্সড। এ কারণেই চেষ্টা করছি সবকিছু ঠিকঠাক করার।
একটা সময় টিভি পর্দায় নিয়মিত অভিনয় করতেন এরপর আপনার বিয়ে হলো, দেশ ছাড়লেন, তারপর অভিনয় থেকেও হারিয়ে গেলেন
মিডিয়ার প্রতি সবারই এক ধরনের ঝোঁক থাকে। কিন্তু তার পরও সজ্ঞানেই বিয়ের পর মিডিয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলাম। এ কারণেই সরে দাঁড়িয়েছিলাম যে, আমি আমার সংসারের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে রাজি। সংসারের কারণেই মিডিয়া ছেড়েছিলাম। আর এখন পর্যন্ত আমার কোনো ইচ্ছা নেই মিডিয়ায় ফেরার। আমার কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে আমার সন্তান, পরিবার।
শুরুতে বলছিলেন, আপনার স্বামী আপনার পাশে থেকেছেন সবসময়
হ্যাঁ, এটাই সত্য, তিনি আমাকে ভীষণভাবে ভালোবাসতেন। সাত বছর ধরে তো তিনি এভাবেই চলেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে তার এ পরিবর্তন, বুঝতে পারছি না। সত্যিই জানি না কী এমন অন্যায় করেছি তার সঙ্গে।
তার পরিবারের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন?
ভালোই। আমার শ্বশুর খুবই ভালো মানুষ। তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে থাকেন, নিরপেক্ষভাবে কথা বলেন। যখন তার বাসায় যাই, তখন তিনিও আলমের এ কাণ্ড মেনে নেননি।
এমন পরিস্থিতিতে আপনার স্বামীর উদ্দেশে কিছু বলতে চান?
আমার একটাই চাওয়া, আলমকে বলতে চাই, যা হওয়ার তা হয়ে গেছে, সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে যত কষ্টই হোক, তিনি যেন সমঝোতায় আসেন, সংসারটা টিকিয়ে রাখেন। আমি জানি, মানসিকভাবে আমরা দুজনই সমস্যার মধ্যে আছি। তার পরও প্রত্যাশা করি, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
বগুড়া থেকে ঢাকায় কবে নাগাদ আসবেন?
এখনো ঠিক জানি না। ঢাকা গেলে শিশুরা ওদের বাবার সঙ্গে দেখা করতে চায়, প্রশ্ন করে। এগুলোর উত্তর দেয়া আমার জন্য কঠিন। এক কথায় আমি এখন অসহায়।
Posted ২:৩১ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৩ জুলাই ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta