কক্সবাংলা ডটকম :: অনেকদিন ধরেই চলছিল বিবাহ বিচ্ছেদের জল্পনা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাঁরা একে অপরের ছবিও ডিলিট করে দিয়েছিলেন।
ইতিমধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক শোয়েব মালিক তৃতীয়বার বিয়েটা সেরে ফেললেন।
শোয়েব মালিকের তৃতীয় বিয়ে হলেও, পাকিস্তানি অভিনেত্রী সানা দের দ্বিতীয় বিয়ে। ২০২০ সালে পাকিস্তানি গায়ক উমর জসওয়ালকে বিয়ে করেছিলেন সানা। গত বছর আলাদা হয়ে যান তাঁরা।
শনিবার এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর জল্পনা উঠতে শুরু করেছিল যে সানিয়া মির্জার সঙ্গে আদৌ ডিভোর্স হয়েছে কি না পাকিস্তান ক্রিকেট দলের এই তারকা ব্যাটারের অবশেষে জল্পনার অবসান হল। একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত খবর অনুসারে, সানিয়া নাকি ইতিমধ্যেই শোয়েবকে একপাক্ষিক ডিভোর্স দিয়েছেন।
সানিয়ার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, শরিয়ত আইন অনুসারে নাকি তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে। তবে এই ব্যাপারে সানিয়া মির্জা এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সঙ্গে একাধিক মহিলার সম্পর্ক ছিল। সেকারণে সানিয়া নিজের বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে একেবারে খুশি ছিলেন না। সেকারণেই তিনি ‘খুলা’ নিয়মে শোয়েবকে ডিভোর্স দিয়েছেন। যদিও এই ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানা যায়নি।
সূত্রের খবর, ৩৭ বছর বয়সি ভারতের এই মহিলা টেনিস তারকার ধৈর্য্যের যাবতীয় বাঁধ ইতিমধ্যেই ভেঙে গিয়েছে। শনিবার সকালেই শোয়েব তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে এই বিয়ের ছবি পোস্ট করেছেন। পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সানা জাভেদকে বিয়ে করেন তিনি।
সানার ম্যানেজার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-য়ে (আগের নাম টুইটার) সানার ম্যানেজার আরসালান শাহ লিখেছেন, ‘একেবারে নিশ্চিত : আমাদের প্রিয় সুপারস্টার শোয়েব মালিক সানা জাভেদের সঙ্গে নিকাহ সেরে ফেলেছেন। এই নতুন দম্পতির জীবন আনন্দ এবং খুশিতে ভরে উঠুক!’
সম্প্রতি একটি সোশ্য়াল মিডিয়া পোস্টে সানিয়া অবশ্য এই ব্যাপারে আগেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এমনকী, ডিভোর্সের কথাও ঠারেঠোরে জানিয়ে ছিলেন তিনি। এদিকে আবার একটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে যে সানিয়ার বাবা ইমরান মির্জা জানিয়েছেন, ধর্মীয় আইন মেনেই তাঁদের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আপনাদের জানিয়ে রাখি, ‘খুলা’ হল মহিলাদের এক বিশেষ অধিকার যার মাধ্য়মে তাঁরা স্বামীকে একপাক্ষিকভাবে ডিভোর্স দিত পারেন। এই আইনেই নাকি তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর বেশি আর কিছু জানা যায়নি।
১৪ বছরের সম্পর্কের ইতি, বিগত কয়েক বছর ধরেই বিচ্ছেদ জল্পনার মধ্যেই অবশেষে পথ আলাদা হয়ে গেল শোয়েব মালিক ও সানিয়া মির্জার। সম্পর্ক অনেকটা কাঁচের মতো, সেখানে একবার চিড় ধরলে তা জোড়া যায় না। অবশেষে চিড় খাওয়া সেই সম্পর্কই ভেঙে দুই টুকরো হয়ে গেল। সানিয়া মির্জা অতীত, শোয়েবের জীবনে এখন নতুন নায়িকা সানা জাভেদ।
২০১০ সালে সানিয়া ও শোয়েবের বিয়ে হয়েছিল। এক কথায় রাজকীয় বিবাহ। ক্রীড়া ক্ষেত্রে যে কয়েয়টি হাইপ্রোফাইল বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম শোয়েব-সানিয়া। দুই ভিন্ন দেশের বাসিন্দা ভালোবাসার টানে এক হয়েছিলেন। ভারতের টেনিস সুন্দরীর সঙ্গে পাকিস্তানের গ্ল্যামারাস ক্রিকেটার শোয়েব মালিকের বিয়ে ছিল ওয়াঘার এপার-ওপারের চর্চার বিষয়।
যদিও শোয়েবের জীবনে প্রথম নারী ছিলেন না সানিয়া মির্জা, হায়দরাবাদী সুন্দরীকে বিবাহের আগেই প্রথমবার বিবাহ হয়েছিল শোয়েবের। তাঁর প্রথম স্ত্রীর নাম আয়েশা সিদ্দিকী। ২০১০ সালে শোয়েব ও সানিয়ার বিয়ের সময় বিষয়টি প্রকাশ্য আসে। কিন্তু শোয়েব-সানিয়ার ইনিসের সূচনাটা জমাট ভাবেই হয়েছিল। বিয়ের পরও নিয়মিত টেনিস টুর্নামেন্টে অংশ নিতে সানিয়া, অন্যদিকে ক্রিকেট মাঠে নিজের প্রতিনিধিত্ব বজায় রাখেন শোয়েব।
দীর্ঘ ৮ বছর বৈবাহিক সম্পর্কের পর, ২০১৮ সালের অক্টোবরে তাঁদের একমাত্র ছেলে ইজহানের জন্ম। তার পরই দুই তারকার সম্পর্ক ধীরে ধীরে পাল্টাতে থাকে। সানিয়া একা থাকতে শুরু করেন। সানিয়া ও শোয়েবের দূরত্ব বাড়লেও ছেলে ইজহানের জন্য তাঁরা প্রায়ই কাছাকাছি আসেন।
আসলে সানিয়ার বেশিরভাগ সময়টাই কাটে দুবাইতে। আর অন্যদিকে শোয়েব থাকেন পাকিস্তানে।
বিগত কয়েক বছর ধরেই সানিয়ার সঙ্গে শোয়েব মালিকের সম্পর্ক নিয়ে নানান কথা শোনা যায়। শোয়েব মালিক আর সানিয়া মির্জার দাম্পত্য সম্পর্কে নাকি ভাঙন ধরেছে। বছর খানের ধরেই এই চর্চা মাথাচাড়া দিয়েছে। সত্যি কি ১৪ বছরের দাম্পত্যে ইতি টানছেন দুজনে? সানিয়া মির্জা ও শোয়েব মালিকের বিচ্ছেদ নিয়ে জল্পনা আরও বেড়েছিল।
প্রথমদিকে দুই তারকাই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ছবি শেয়ার করতে থাকেন। কিন্তু পরের দিকে সেটা একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। ২০২৩ সালে ১৪-তম বিবাহ বার্ষিকীতে না একসঙ্গে ছবি দেন না তাঁরা একে অপরকে শুভেচ্ছা জানান। পারিবারিকভাবেও তাঁদের বিবাহ বার্ষিকী পালিত হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। ফলে মানসিক দূরত্ব বা মানসিক বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে বলেই মন করা হচ্ছিল।
মাস কয়েক আগে বিচ্ছেদ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শোয়েব জানিয়েছিলেন, প্রত্যেক সম্পর্কেই ওঠা-পড়া থাকে। সেটাই স্বাভাবিক। এরইমধ্যে বিভিন্ন ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট করতে থাকেন সানিয়া মির্জা। বিগত কয়েক বছরে শোয়েব ক্রমশ হালকা হচ্ছিলেকন সানিরা মন থেকে। সানিয়ার জীবন জুড়ে শুধুই পুত্র।
অবশেষে শনিবার সকালেই সব জল্পনার অবসান। শোয়েবের জীবনে এলেন সানা। সেইসঙ্গে যবনিকা পড়ল আরও একটি সেলেব সম্পর্কের।
Posted ২:৪১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৪
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta