শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

শুক্রবার ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সালমান খান : বিতর্ক, জনপ্রিয়তা,সাফল্য

রবিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৮
454 ভিউ
সালমান খান : বিতর্ক, জনপ্রিয়তা,সাফল্য

কক্সবাংলা ডটকম(৮ এপ্রিল) :: বিলুপ্তপ্রায় কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি মামলায় সালমান খানকে সম্প্রতি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। দুই রাত যোধপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কাটানোর পর আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন সালমান খান। জামিনে থাকা অবস্থায় আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না।

১৯৯৮ সালে রাজস্থানে ‘হাম সাথ সাথ হ্যায়’ সিনেমার শুটিং চলাকালে সালমান কর্তৃক কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার অভিযোগ ওঠে। প্রায় দুই দশক ধরে চলা এ মামলায় সালমানের সাজা হলেও খালাস পেয়েছেন বলিউডের তারকা সাইফ আলী খান, টাবু, সোনালী বেন্দ্রে ও নীলম।

গত বছর একটি গুরুতর অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন সালমান। ২০০২ সালে মুম্বাইয়ের ফুটপাতে গাড়ি চালিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন সালমান। এ মামলা থেকেই তিনি গত বছর খালাস পান। বিভিন্ন মহল থেকে সালমানের এ মুক্তি পাওয়া নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। তবে এ মামলা থেকে কৃষ্ণসারের মামলাটি সালমান ও তার ভক্তদের বেশি ভুগিয়েছে।

সালমান কারাগারে বন্দি হওয়ার মাধ্যমে তার দুটি সিনেমা ‘রেস থ্রি’ ও ‘দাবাং থ্রি’র শুটিং থেমে গেছে। এ বছরের জুনের মাঝামাঝি রেস থ্রি মুক্তি পাওয়ার কথা। গত কয়েক বছরে সালমান বলিউডে সর্বাধিক ব্লকবাস্টার সিনেমা উপহার দিয়েছেন। সালমানের সিনেমা মানে এখন বাণিজ্যিকভাবে আকাশচুম্বী সাফল্য।

গত বছর বলিউডের মধ্যম মানের সিনেমা ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ তার উপস্থিতির কারণে আয়ের ক্ষেত্রে রেকর্ড বুকে জায়গা করে নিয়েছে। তাই তার মামলায় সাজা হওয়া ও কারাগারে যাওয়ায় বলিউড স্বভাবতই নড়েচড়ে বসেছে।

ক্যারিয়ারে সালমান খান নিয়মিতভাবে সমালোচকদের তীরে বিদ্ধ হয়েছেন, আবার অতীতের চেয়ে আরো জনপ্রিয় তারকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। সালমান অভিনয় দক্ষতায় হয়তো বলিউডের অনেক তারকার চেয়ে পিছিয়ে থাকবেন, কিন্তু কোনো সন্দেহ নেই, তিনি এ মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বড় সুপারস্টার।

সমালোচক, বিশ্লেষকরা মনে করেন, সালমানের জীবনে যত বিতর্ক যুক্ত হয়েছে, তাতে তিনি আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

সালমানের বিতর্কিত জীবনের সঙ্গে সমতুল্য আরেকটি চরিত্র আছে বলিউডে, তিনি হলেন সঞ্জয় দত্ত— এ দুজন ‘ব্যাড বয়েজ অব বলিউড’ নামেও পরিচিত। সঞ্জয় দত্ত অস্ত্র মামলায় বেশ ক’বছর কারাবাস করেছেন। সে তুলনায় সালমানকে অবশ্য এখনো দীর্ঘ মেয়াদে কারাগারে থাকতে হয়নি। সালমান ও সঞ্জয় দুজনের বয়সই পঞ্চাশের কোটায়। তারা দুজন কী কখনই পরিণত মানুষের মতো আচরণ করবেন না— এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেক সমালোচক। সালমানের মতো সঞ্জয় দত্তও বিতর্কিত, কিন্তু জনপ্রিয়।

সঞ্জয়ের জীবনী নিয়ে রাজকুমার হিরানি ‘সঞ্জু’ নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন। সালমান আর সঞ্জয় দত্ত একরকম আত্মীয়ের মতো, পর্দায় দুজনের প্রভাব তাদের ব্যক্তিজীবনের অনেক বিতর্ককে দুর্বল করে দিয়েছে। গত মাসে সঞ্জয় দত্তের জীবনীগ্রন্থ ‘‘সঞ্জয় দত্ত: দ্য ক্রেজি আনটোল্ড স্টোরি অব বলিউড’স ব্যাড বয়’’ প্রকাশিত হয়েছে।

এ গ্রন্থের লেখক ইয়াসির উসমান সঞ্জয়কে বলিউড ইন্ডাস্ট্রির ‘পরিচায়ক, অগ্রদূত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। উসমান লিখেছেন, ‘আশির দশকের শেষভাগ ও নব্বইয়ের শুরুর বছরগুলোয় সঞ্জয় দত্ত ছিলেন পর্দায় পুরুষত্বের প্রতীক। তিনিই তখন বলিউডের একমাত্র তারকা, যাকে দর্শকরা মাদক, আগ্নেয়াস্ত্র, চামড়ার জ্যাকেট, পেশিবহুল শরীর, লম্বা চুল, সিগারেটের সমার্থক হিসেবে আবিষ্কার করেছিলেন। সঞ্জয়ের পুরুষ ভক্তরা তার মাচো ব্যক্তিত্বকে অনুসরণ করতে চাইতেন। অন্যদিকে পরিচালকরাও সঞ্জয়ের এ ব্যক্তিগত চেহারাকে প্রকাশ করে এমন সব সিনেমায় তাকে কাস্ট করতেন।’ ইয়াসির উসমান আরো লিখেছেন, ‘সঞ্জয়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সিনেমা নাম, সাদাক, সাজান, হাতিয়ার, খলনায়ক, বাস্তব ও মুন্না ভাই এমবিবিএস। সবগুলোই প্রকৃতপক্ষে তার ব্যক্তি চরিত্রেরই প্রতিবিম্ব।’

সালমান খানের শুরুটা একেবারে নিখুঁত। ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া প্রথম সিনেমা ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ দিয়েই তিনি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। বলিউডের অন্য দুই মহারথী শাহরুখ ও আমির খানের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই এগিয়েছেন সালমান।

সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি। ১৯৯৮ সালে কৃষ্ণসার হরিণ হত্যার সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা হয়েছিল। সে বছরই তিনটি চিঙ্কারা হরিণ হত্যার দায়ে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। একই বছরের অক্টোবরে লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র রাখার দায়ে সালমান অস্ত্র মামলাতেও অভিযুক্ত হন। লাইসেন্সবিহীন একটি পয়েন্ট টু টু রাইফেল এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পয়েন্ট থ্রি টু রিভলভার রাখার জন্য তিনি অভিযুক্ত হন। এ দুই মামলাতেই সালমান খালাস পেয়েছেন। ঐশ্বরিয়া রাইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ও ব্রেকআপ, পরবর্তীতে ঐশ্বরিয়া কর্তৃক সালমানের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগও একটা সময় গণমাধ্যমে আলোড়ন তুলেছিল।

২০১৪ সালে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘুড়ি উড়িয়ে তাকে সমর্থন দিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সমালোচিত হয়েছিলেন সালমান। আবার মুম্বাই বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ২০১৫ সালে ইয়াকুব মেমনকে ফাঁসি দেয়ার সমালোচনা করায় সালমান কট্টর হিন্দু সংগঠনগুলোর রোষানলে পড়েছিলেন।

দর্শকদের মন জয় করতে সালমান সঞ্জয় দত্তের চেয়ে অনেক বেশি সফল। সালমানের সরলতা, দানশীলতা ও দৃঢ়তা ভক্তদের মনে তার অবতার সদৃশ অবস্থান তৈরি করেছে। সাংবাদিক, আদালত কিংবা পুলিশ সালমানের ভক্তদের কাছে একরকম খলচরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সালমানের অপরাধ তার জনপ্রিয়তা বা ব্যক্তিত্বের সামনে হালকা হয়ে গেছে।

বিতর্ক যেমন সঞ্জয় দত্তের জনপ্রিয়তা ও ক্যারিয়ারকে দীর্ঘস্থায়ী করেছে, তেমনি সালমান খানের ক্ষেত্রে তার ক্যারিশমা ও জনপ্রিয়তা তার ব্যক্তিজীবনের অনেক স্ক্যান্ডালকে আড়াল করে দিয়েছে খুব সহজেই। সমালোচকরা বলছেন, একটা মৃত হরিণ কি সালমানের মাহাত্ম্যে দাগ বসাতে পারে?

454 ভিউ

Posted ৯:১১ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৮ এপ্রিল ২০১৮

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com