বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

বুধবার ১লা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

সেন্টমার্টিনে ১৪ বিধিনিষেধ মানছেন না কেউ : বিলুপ্তির পথে শামুক-ঝিনুকসহ জলজ প্রাণী, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১
654 ভিউ
সেন্টমার্টিনে ১৪ বিধিনিষেধ মানছেন না কেউ : বিলুপ্তির পথে শামুক-ঝিনুকসহ জলজ প্রাণী, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

কক্সবাংলা রিপোর্ট :: দেশের একমাত্র প্রবালসমৃদ্ধ কক্সবাজারের টেকনাফের দ্বীপ সেন্টমার্টিন দ্বীপে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গড়ে উঠছে একের পর এক বাণিজ্যিক স্থাপনা রিসোর্ট, হোটেল-মোটেল। পর্যটকদের জন্য সরকারের বেঁধে দেওয়া ১৪টি বিধিনিষেধ মানছেন না কেউ।

দ্বীপটিতে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটকের অবাধ যাতায়াত, পরিবেশ দূষণ ও পর্যটকদের অসচেতনতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের কারণে দ্বীপের প্রতিবেশ সহ জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এসব কারণে দ্বীপটির প্রবাল, শৈবাল, সামুদ্রিক কাছিম, লাল কাঁকড়া, শামুক, ঝিনুকসহ নানা জলজ প্রাণী এবং জীববৈচিত্র্য বিলুপ্তির পথে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সেন্টমার্টিন সমুদ্রসৈকতজুড়ে হাজারো মানুষের বিচরণ। সৈকতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভাড়ার মোটরসাইকেল ও সাইকেল। যত্রতত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, পানির বোতল ও নারিকেলের খোসা। থেমে নেই ভারী জেনারেটর বসিয়ে পাম্প পরিচালনা, পাথর তোলা ও সৈকতের বালি অপসারণের মতো ক্ষতিকর কার্যক্রম।

পরিবেশ অধিদফতরের নির্দেশনা না মানায় বিলুপ্ত হচ্ছে দ্বীপের রাজকাঁকড়া, শামুক, ঝিনুক, প্রবালসহ অসংখ্য জলজ প্রাণী। আবার স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট না থাকায় সেন্টমার্টিনে গড়ে ওঠা ১৩০টি হোটেল, ৪০টি কটেজ আর অর্ধশতাধিক রেস্তোরাঁর ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হচ্ছে সমুদ্রের পানি। পর্যটকদের চাহিদা পূরণে দ্বীপের ভূগর্ভস্থ সুপেয় মিঠাপানির স্তরও নিচে নেমে গেছে।

পরিবেশ অধিদফতর কর্মকর্তাদের দাবি, অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সেন্টমার্টিনের এসব বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদে প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কয়েক দফা অভিযানে গিয়ে দেখেছে বেশির ভাগই আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ কারণে পরিবেশ অধিদফতর কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

প্রতিদিন দ্বীপে আট থেকে ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। দ্বীপে পর্যটকের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের বিষয়ে নৌ মন্ত্রণালয় ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে পরিবেশ অধিদফতর। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় উদ্যোগ নিচ্ছে না। অথচ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সরকার পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করেছিল।

পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রতিদিন পর্যটকদের সংখ্যা সীমিত ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ জনের মধ্যে রাখা যায়, তাহলে কিছুটা ভারসাম্য রাখা সম্ভব হবে। কিন্তু সেখানে প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ হাজার পর্যটক ভিড় করছেন।

জানা গেছে, প্রায় ৮ বর্গ কিলোমিটারজুড়ে এই দ্বীপটির স্থায়ী বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। এ ছাড়া পর্যটক মিলে প্রতিদিন দ্বিগুণ সংখ্যক মানুষের চাপ নিয়ে হিমশিম সেন্টমার্টিন। সৈকতে মানুষের কোলাহল ও পানিতে অতিরিক্ত দূষণের কারণে দ্বীপের বহু উদ্ভিদ-প্রাণী ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে সামুদ্রিক কাছিম।

পরিবেশ অধিদফতর সূত্র জানায়, এমন অবস্থায় সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ১৪টি বিষয় নিষিদ্ধ ঘোষণা দিয়ে দেশের প্রথম সারির কয়েকটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে পরিবেশ অধিদফতর। সেগুলো হলো- দ্বীপের সৈকত, সমুদ্র বা নাফ নদীতে সব ধরনের প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলা।

পশ্চিম পাশের সৈকতে কোনাপাড়ার পর দক্ষিণ দিকে এবং পূর্ব পাশের সৈকতে গলাচিপার পর দক্ষিণ দিকে পরিভ্রমণ। দ্বীপের সৈকতে মোটরসাইকেলের মতো যান্ত্রিক বাহন থেকে শুরু করে সাইকেল, ভ্যান, রিকশার মতো অযান্ত্রিক বাহন চালানো। দ্বীপের চারপাশে নৌভ্রমণ করা। জোয়ারভাটা এলাকায় পাথরের ওপর হাঁটা-চলা। সামুদ্রিক কাছিমের ডিম পাড়ার স্থানে চলাফেরা, সৈকতে রাতে আলো জ্বালানো এবং ফ্ল্যাশ লাইট ব্যবহার করে ছবি তোলা।

সৈকতে রাতের বেলা কোনো প্রকার আলো বা আগুন জ্বালানো, আতশবাজি ও ফানুশ ওড়ানো। সৈকতে মাইক বাজানো, হইচই বা উচ্চৈঃস্বরে গানবাজনা করা, বার-বি-কিউ পার্টি করা। ছেঁড়াদিয়া দ্বীপে স্পিডবোট, কান্ট্রি বোট, ট্রলার বা অন্যান্য জলযানে যাতায়াত এবং নোঙর করা। সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সরকারের অধিগ্রহণ করা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ ভ্রমণ। প্রবাল, শামুক, ঝিনুক, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, তারা মাছ, রাজকাঁকড়া, সামুদ্রিক ঘাস, সামুদ্রিক শৈবাল এবং কেয়া ফল সংগ্রহ ও ক্রয়-বিক্রয়। জাহাজ থেকে পাখিকে চিপস ও অন্য খাবার খাওয়ানো। দ্বীপে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানি সীমিত বিধায় পানির অপচয় করা। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রতিবেশের জন্য ক্ষতিকর যে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহম্মেদ বলেন, ‘সরকারের সব নির্দেশনা মানার মতো অবস্থা সেন্টমার্টিনে নেই। দ্বীপের সবাই দরিদ্র মানুষ। এসব নির্দেশনার কিছু শর্ত শিথিল করে পর্যটন খাতটা ঠিক রাখতে হবে।

এ ছাড়া বাইরের ব্যবসায়ীরা অনুমোদন নিয়ে কোন ফাঁকে দ্বীপে হোটেল-রেস্টুরেন্ট গড়ে তুলছে, আমরা জানতেও পারি না। অথচ স্থানীয় লোকজন নিজের জায়গায় ঘর তুলতে পারে না।

পরিবেশ অধিদফতরের বিধি-নিষেধ বিষয়ে সেন্টমার্টিন প্রতিবেশ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রকল্পের পরিচালক সোলায়মান হায়দার বলেছেন, পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের পর্যায়ক্রমে সতর্ক করার চেষ্টা চালাচ্ছি। এ জন্য গণবিজ্ঞপ্তিও জারি করেছি। আমরা চাচ্ছি সবাইকে বিধি-নিষেধের বিষয়গুলো অবগত করাতে। যাতে ব্যবস্থা নিলে কেউ বলতে না পারেন বিষয়টি তিনি জানেন না। সামনে আরও করা হবে। ফল পেতে কিছুটা সময় লাগবে।

654 ভিউ

Posted ৩:০৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com