কক্সবাংলা ডটকম :: একের পর এক সাম্রাজ্য জয় করে চলেছে রোহিত শর্মার টিম ইন্ডিয়া। পাকিস্তান, আফগানিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা- কেউই সেই ঘোড়ার গতি থামাতে পারছে না। শেষমেশ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েই হয়তো দম নেবেন রোহিত!
এখন যে কোনও ক্রিকেট ভক্তের মনে একটাই কথা হয়তো ঘুরপাক খাচ্ছে। এই ভারতকে রুখবে কে!
১২ বছর পর ভারত বিশ্বকাপ ফাইনালে জিততে পারবে কিনা তার উত্তর মিলবে আগামী রবিবার। তবে আজ মুম্বইয়ে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ১২ বছর পর বিশ্বকাপ ফাইনালে মেন ইন ব্লু।
সত্যিই তাই। ভারত কি তবে অপরাজেয় থেকেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে এবার! আর তো মাত্র একটা ম্যাচ। ভারতীয় দল যেভাবে খেলছে তাতে এমন উচ্চাসা করাই যায়!
৩৯৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে পাল্টা জবাব ভালোই দিচ্ছিল ভারতের শক্ত গাঁট নিউজিল্যান্ড। কিন্তু মহম্মদ শামির জোড়া ধাক্কা ও ডেথ ওভারে কুলদীপ যাদবের বোলিং কিউয়িদের কাজ কঠিন করে দেয়। ফলে ড্যারিল মিচেলের লড়াকু শতরানেও অধরাই থাকল কেন উইলিয়ামসনের বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্ন।
২০১৫ ও ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল কিউয়িদের। ২০১৯ সালে ভারতকে সেমিফাইনালে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। বিরাট কোহলি অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জিততে পারেননি। তবে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন জিইয়ে রাখলেন সেই বিরাট কোহলি। চার বছর পর মধুর প্রতিশোধে বড় অবদান রেখে।
নিজের শততম ওডিআই ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখলেন মহম্মদ শামি। ড্যারিল মিচেল যেমন ধরমশালায় শতরান করার পর আজও ভারতের বিরুদ্ধে শতরান পেলেন, তেমনই ওই ম্যাচের পর আজও ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন শামি। তুলে নিলেন ৭ উইকেট! ওয়াংখেড়েতে চলতি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে শামি নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। আজও কিউয়ি ব্যাটিং লাইন আপের প্রথম পাঁচজনই শামির শিকার।
১৯৮৩, ২০০৩ ও ২০১১ সালের পর ফের বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলবে ভারত। তিরাশিতে কপিলের নেতৃত্বে ভারত বিশ্বকাপ জিতেছিল প্রথমবার। ২০০৩ সালের ফাইনালে পরাস্ত হয় সৌরভের ভারত। মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে এই ওয়াংখেড়েতেই শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জেতে মেন ইন ব্লু। এবার রোহিত শর্মার নেতৃত্বে ভারত কাপ জয়ের লক্ষ্যে নামবে রবিবার, আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে।
বিশ্বকাপে টানা ম্যাচ জেতার নিরিখে অস্ট্রেলিয়ার ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলতে শুরু করল ভারত। আজ টানা দশম জয় ছিনিয়ে নিল বিশ্বের ১ নম্বর ওডিআই দল। বিশ্বকাপে দু-বার টানা ১১টি করে ম্যাচ জেতার নজির আছে অস্ট্রেলিয়ার। ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন হলে অজিদের সেই একাধিপত্যে থাবা বসাবে রোহিত শর্মার দল।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে ১১৯ বলে সর্বাধিক ১৩৪ রান করেন ড্যারিল মিচেল। মেরেছেন ৯টি চার ও সাতটি ছয়। ৮টি চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে কেন উইলিয়ামসন ৭৩ বলে ৬৯ রান করেন। ৩৩ বলে ৪১ রান গ্লেন ফিলিপসের। ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র- দুজনেই করেন ১৩ রান। টম লাথাম আউট হন শূন্য রানে। মার্ক চ্যাপম্যান ২ রানের বেশি করতে পারেননি।
২৯৫ রানে পঞ্চম উইকেট পড়েছিল। সেখান থেকে ৪৮.৫ ওভারে ৩২৭ রানে গুটিয়ে গেল বিগত দুটি বিশ্বকাপের রানার-আপরা। ৩৩তম ওভারের পর ৪৯তম ওভারেও দুটি উইকেট তুলে নিলেন শামি। ফলে বিশ্বকাপে তাঁর উইকেট-সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪, চলতি বিশ্বকাপে ২৩। ৯.৫ ওভারে ৫৭ রানে ৭ উইকেট, শততম ওডিআই ম্যাচে কেরিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার।
চলতি বিশ্বকাপে ইনিংসে পাঁচ উইকেট তিনবার নিলেন শামি। তিনিই হলেন ম্যাচের সেরা, এই নিয়ে চলতি বিশ্বকাপে তৃতীয়বার। জসপ্রীত বুমরাহ ১০ ওভারে ১টি মেডেন-সহ ৬৪ রান দিয়ে পেলেন ১ উইকেট। মহম্মদ সিরাজ ৯ ওভারে ৭৮ রান খরচ করে এবং কুলদীপ যাদব ১০ ওভারে ৫৫ রান দিয়ে ১টি করে উইকেট পান। ১০ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে উইকেট পাননি রবীন্দ্র জাদেজা।
এর আগে, টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৫০ ওভারে ৩৯৭ রান তুলেছিল চার উইকেট হারিয়ে। বিরাট কোহলি ১১৩ বলে ১১৭, শ্রেয়স আইয়ার ৭০ বলে ১০৫, শুভমান গিল ৬৬ বলে অপরাজিত ৮০, রোহিত শর্মা ২৯ বলে ৪৭ ও লোকেশ রাহুল ২০ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করেন। সূর্যকুমার যাদব ১ রান করেন। টিম সাউদি ৩ উইকেট নিলেও ১০ ওভারে ১০০ রান দেন। ট্রেন্ট বোল্ট পান ১ উইকেট।
Posted ১২:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta