কক্সবাংলা ডটকম(১৪ নভেম্বর) :: ২০১৮ রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপে নেই চারবারের চ্যাম্পিয়ন ইতালি৷ ৬০ বছর পর বিশ্বকাপে দেখা যাবে না আজুরি’দের৷ সোমবার স্যান সিরিও-তে যোগ্যতাঅর্জন পর্বে দ্বিতীয় লেগের ইতালি-সুইডেন ম্যাচ গোলশূন্য হওয়ার সঙ্গে রাশিয়ায় আজুরিদের বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়৷
ইতালি শেষবার যোগ্যতাঅর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল ১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপে৷ আর সেই সুইডেনের কাছে হেরে বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্নভঙ্গ হল আজুরিদের৷ যোগ্যতাঅর্জন পর্বের প্রথম লেগে সুইডেনের কাছে ০-১ গোলে হেরেছিল ইতালি৷ ফলে পুতিনের দেশে বিশ্বকাপ খেলতে হলে এদিন অন্তত ১-০ জিততেই হত আজুরিদের৷ ইতালির বিশ্বকাপে স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেষ হয়ে গেল ফুটবলে বুফোঁ অধ্যায়৷ চোখের জলে ফুটবলকে বিদায় জানালেন ইতালিয়ান অধিনায়ক জিয়ানলুইগি বুফোঁ৷ ফলে টানা ছ’টি বিশ্বকাপ খেলার বিশ্বরেকর্ড অপূর্ণ থেকে গেল আজুরি গোলকিপারের৷
স্যান সিরিও ৭৪ হাজার দর্শকের সামনে ‘হোয়াইট-হট’ পরিবেশে আজুরিরা আক্রমণাত্ম ফুটবল খেললেও সুইডেনের গোলের মুখ খুলতে পারেনি৷ ম্যাচ গোলশূন্য ভাবে শেষ হওয়ায় স্টকহোমে প্রথম লেগে জ্যাকব জনসনের গোলে রাশিয়া বিশ্বকাপের ছাড়পত্র পেয়ে যায় সুইডেন৷ এ নিয়ে মোট তিনবার বিশ্বকাপে নেই ইতালি৷ ১৯৩০ প্রথম বিশ্বকাপের পর ১৯৫৮ সুইডেন বিশ্বকাপেও যোগ্যতাঅর্জনে ব্যর্থ হয়েছিল আজুরিরা৷
২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা ও ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে যোগ্যতাঅর্জন করতে পারেনি সুইডেন৷ এবার তারকা খেলোয়াড় জ্লাটন ইব্রামোভিচের উত্তরসূরিরা চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে জিতে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট হাতে পেল সুইডিশরা৷ বিশ্বকাপের যোগ্যতাঅর্জন করে সুইডিশ কোচ জেনি অ্যান্ডারসন বলেন, ‘আমি আবেগতাড়িত ও অত্যন্ত খুশি৷ এই ম্যাচ আমাদের দলের শক্তি প্রমাণ করল৷’
এর আগে ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপে সর্বশেষ কোয়ালিফাই করতে ব্যর্থ হয়েছিল ইতালি। পাশাপাশি এতদিন পর্যন্ত ইউরোপ থেকে জার্মানির সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ বিশ্বকাপ খেলা দল ছিল ইতালি। কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করতে না পারায় জামার্নির পরে নেমে যেতে হলো সর্বশেষ ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ হাতে নেয়া দলটিকে।তা পায়নি বলেই এক যুগ পর আবার বিশ্বকাপের মূল আসরে সুইডেন। ২০০৬ সালে জার্মানির আসরে শেষবার খেলেছিল তারা। আর ১৯৫৮ সালের পর প্রথমবার ফুটবল মহাযজ্ঞ হবে ইতালিকে ছাড়া।
ইতালির বিদায়ে অবসর নিলেন যারা
বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেই বাদ হয়ে গেছে ইতালি। এমন হতাশার দিনে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন জিয়ানলুইজি বুফন, ড্যানিয়েল ডি রসি, জর্জিও কিয়েলিনি ও আন্দ্রেয়া বারজাগলি। সোমবার সুইডেনের কাছে গোলশূন্য ড্র করে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে ইতালির। প্লে অফের দ্বিতীয় লেগে গোলশূন্য ড্র হলেও প্রথম লেগ সুইডেন জিতে নিয়েছিল ১-০ গোলে। আর তাতেই বিদায় নিশ্চিত হয় তাদের।এর মধ্য দিয়ে একই দিনে চারজন অবসরের ঘোষণা দিলেন। বুফন বিশ্বকাপেই অবসর নিতে চেয়েছিলেন। অথচ ভাগ্যদেবী সহায় না হওয়াতে তার আগেই বিদায় বলতে হয়েছে ইতালির কিংবদন্তিকে। আর বিদায়কালে ডি রসি দিনটিকে ‘কালো দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন, ‘ফুটবলের জন্য দিনটি কালো একটি দিন।’ ১১৭ ম্যাচ খেলা এই তারকা দলের হয়ে গোল করেছেন ২১টি।
এদিকে আগামী প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে আছেন বিদায় বলে দেওয়া কিয়েলিনি। ৩৩ বছর বয়সী এই তারকা ইতালির হয়ে খেলেছেন ৯৬টি ম্যাচে। তাই এই তারকা বিদায়কালে ভরসা রাখতে বলেছেন আগামী প্রজন্মের ওপর, ‘আগামী প্রজন্মের ওপর এমন আস্থা দেখাতে হবে, ভালোবাসতে হবে । সামনে বহুদূর যেতে হবে। এভাবে ব্যর্থতার পর অনেক পরিশ্রমের প্রয়োজন।’
৩৬ বছর বয়সী বারজাগলি এমন ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়েছেন। তার ভাষাতেই প্রকাশ পেয়েছে সেসব, ‘ফুটবলীয় অর্থে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় হতাশাজনক ঘটনা এটাই। আমাদের জন্য এটা লজ্জার ঘটনা যে এভাবে শেষটা হয়েছে।’