মো: রোজাউল হক(২৩ জুলাই) :: সৃষ্টির প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পূর্ণ নিদর্শন স্বরূপ কক্সবাজার যুগ যুগ ধরে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করে আসছে।
এখানকার নৈস্বর্গিক দৃশ্য ভ্রমন পিপাসুদের বিভিন্ন ভাবে আকর্ষণ করে থাকে। যার মনমুগ্ধকর অবগাহন আফ্রিকান পর্যটক ইবনে বতুতার ভ্রমন বিষয়ক বিবরণীতে প্রতীয়মান। কক্সবাজার জেলার সেন্টমার্ন্টিন দ্বীপ, ছেড়াদ্বীপ, মহেশখালী, সোনাদিয়া, কুতুবদিয়া, হিমছড়ী, ইনানী বিচ, টেকনাফ, শাহপরীর দ্বীপ প্রভৃতির মনমুগ্ধকর পাহাড়, সবুজ বনরাজী, গগনবিস্তৃর্ণ সমুদ্র সৈকত, নৈস্বর্গিক এ সব দৃশ্য উপভোগের জন্য ছুটে আসে লক্ষ লক্ষ দেশী-বিদেশী পর্যটক।
কিন্তু দৃঃখের বিষয় বর্তমানে কক্সবাজার শহরের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে মশক বাহিনীর উপদ্রব প্রশংসনীয়, ফুটপাত দখলকারী দোকান-পাট, বাজারঘাটা থেকে টার্মিনাল পর্যন্তখানা-খন্দ রাস্তাঘাট, বিমান বন্দর রাস্তার ফিসারীঘাট থেকে উত্তর সীমা পর্যন্ত বেহাল দশা।
কলাতলী ডলফিন মোড় থেকে মেরিন ড্রাইভের সংযোগ সড়কটিও খানা-খন্দে ভরপুর। ঝাউতলা প্রধান সড়ক- পড়শী রেস্টুরেন্টের মাথা থেকে বাহারছড়া বন বিভাগের দেয়াল ঘেষে দক্ষিণ মাথা পর্যন্ত মাইক্রোবাসের দখল দারিত্ব কোন কোন সময় জনজীবনে বিশেষ করে পর্যটকের চলা চলের ক্ষেত্রে দূর্ভোগেপড়তে হয়।
বাহারছড়া বাজারের উত্তর- দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম প্রতিটি রাস্তা খোলা ডাস্টবিনের ময়লা আবর্জনা রাস্তার উপর উপচে পড়ে। এ যেন কুকুর-কাক, গরু-ঘোড়ার চারণভুমি। দূর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা দূঃসার্ধ।
নাকে কাপড় গুজে রাস্তা অতিক্রম করতে হয়। বাহারছড়া বাজারের পিটিআই ইনািস্টটিউটের পুরাসীমানা প্রাচীরটাই ডাস্টবিনে পরিণত। পূর্ব দিকের রাস্তাটি ও খোলা ডাস্টবিনের উপচে পড়া ময়লা পথচারীদের দূর্ভোগের কারণ। অনুরূপ ভাবে উত্তর দিকের বন বিভাগের সীমানা প্রাচীর ধরে বেশকয়েকটি স্থানে খোলা ডাস্টবিনের দূর্গন্ধে জনচলাচল দুঃসাধ্য।
ঐতিহ্যবাহী লালদিঘী মসজিদের দক্ষিণ পাশের্^ই রাস্তার উপর খোলা ডাস্টবিন উপচেপড়া ময়লা আবর্জনার পূর্ব পাশেই অস্থায়ী ফুচকা-চটপটির দোকানে মানুষের খাবার পাশা পাশি ডাস্টবিনের দুর্গন্ধময় আবর্জনা কুকুর, গরু-বাছুর ও কাকের চারন ভুমি।
চৌরঙ্গী বেকারীরপূর্ব পাশেই ময়লা আবর্জনার অরক্ষিত ডাস্টবিন। যার দূর্গন্ধ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। ঐ স্থান দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে ড্রেন। যার পঁচা দূর্গন্ধ পরিবেশকে করেছে কলুষিত। বাজারঘাটা কাঁচা বাজার বর্ষা মৌসুমে যেন কর্দমাক্ত জলাভুমি।
লালদিঘী প্রধানসড়ক থানা মোড় থেকে পূর্ব দিকে পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত বিশেষ করে আসাদ কমপ্লেক্স এরবিস্তৃর্ণ এলাকা ভ্রাম্যমান পতিতাদের অভয় অরণ্য। বিশেষ করে বিকেল পাঁচটা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত এদের পদচারণ লজ্জাজনক। মৌসুমের কোন কোন সময় সকাল থেকেই এদের আনাগোনা দৃশ্যমান।
লাইট হাউস থেকে কলাতলী গেস্ট হাউস জোনের অবস্থিত রিসোর্ট সমুহের আভ্যন্তরীন বিষয়গুলো উল্লেখ না-ই বা করলাম। লাবনী পয়েন্ট প্রধান সড়ক থেকে সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ এলাকায় রাস্তার উপর কোন সরকারী লাইট পোস্ট নেই। যার ফলে সন্ধার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অন্ধকার পথ ধরেই চলতে হয় ভ্রমন পিপাসুদের।
আগামী ২৫ শে জুলাই পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়রপ্রার্থী এবং কাউন্সিলর প্রার্থী গণ উন্নয়নের ফুল ঝুড়ি নিয়ে জনগণের দোর গোড়ায়, উন্নয়নের জোয়ারে সাড়া শহর প্রকম্পিত। অথচ কার্যকর পদক্ষেপের জন্য কারুরই যেন কোন দায়বদ্ধতা ও জবাব দিহীতা নেই।
এখানে পরিবেশ অধিদপ্তর রয়েছে। রয়েছে সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, জন প্রতিনিধি ও সামগ্রিক ভাবে জেলাপ্রশাসন। সকলের সামগ্রিক প্রচেষ্টায় কক্সবাজার শহরটি গড়ে উঠতে পারে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন পর্যটন শহরে। যা ভবিষ্যতে দেশী বিদেশী ভ্রমনপিপাসুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে এবং ভবিষ্যতে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। অন্য দিকে সরকারের রাজস্ব খাতও সমৃদ্ধ হবে।
লেখক : জনৈক উন্নয়ণ কর্মী
Posted ৯:৩৩ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৩ জুলাই ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta