মোসলেহ উদ্দিন, উখিয়া(৩০ জুন) :: উখিয়ার রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আলিকান গ্রুপ নামের একটি সন্ত্রাসী চক্রের চাঁদাবাজি, খুন, অপহরণসহ নানা প্রকার ভীতিকর কার্যকলাপে সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতংক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা।
গত ১৫ দিনের ব্যবধানে উখিয়া থানা পুলিশ ২ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করেছে। আটক করেছে ২ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে।সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টার দিকে রোহিঙ্গা বস্তি ম্যানেজমেন্ট কমিটির সভাপতিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে বলে রোহিঙ্গানেতারা জানিয়েছেন।
পুলিশ বলছে বস্তির আধিপাত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংগঠিত এসব ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
উখিয়ার রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা কুতুপালং ও বালুখালী রোহিঙ্গা বস্তি এলাকা ঘুরে বেশ কয়েক জন রোহিঙ্গার সাথে কথা বলে জানা গেছে, মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরএসও’র বিকল্প আলিকান গ্রুপের সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের নিকট থেকে গনহারে চাঁদাবাজি করে আসছিল দীর্ঘদিন থেকে।
কুতুপালং বস্তি ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সেক্রেটারি মোহাম্মদ নুর জানান, আলিকান গ্রুপের সদস্যদের কথা মত চাঁদা না দিলে তাকে অপহরণ করে মেরে ফেলা হচ্ছে।
গত ১৩ জুন রাত ১২টার দিকে ১০/১২ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী কুতুপালং রেজিস্টার্ড শরণার্থী ক্যাম্পে হানা দিয়ে বসতবাড়ির দরজা জানালা ভাঙচুর করে আয়ুব মাঝি (৩৫) ও মোহাম্মদ সেলিম (২৫) কে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।
গত ২৫ জুন পুলিশ বালুখালী খাল থেকে জবাই করা আয়ুব মাঝির লাশ ও মধুরছড়া খাল থেকে মোহাম্মদ সেলিমের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এ ঘটনায় আয়ুব মাঝির স্ত্রীর ধলু বিবি বাদী ২৩ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আয়ুব মাঝির স্ত্রী ধুলু বিবি জানায়, তার স্বামী আলিকান গ্রুপের অনৈতিক কার্যকলাপে বিরোধীতা করে তাদের খবরাখবর স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করতো নিয়মিত। যে কারণে সন্ত্রাসীরা তার স্বামীকে অপহরণ করে মেরে ফেলেছে।
গত বৃহস্পতিবার বিকাল ৫ টার দিকে কুতুপালং বস্তি ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি আবু ছিদ্দিক (৫৫) কে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে কক্সবাজার আল ফুয়াদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য বখতিয়ার আহমদ জানান, আলিকান গ্রুপের সদস্য নামধারী কতিপয় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজির ঘটনায় ক্যাম্পে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, আয়ুব মাঝি হত্যাকান্ডে জড়িত আব্দুল গফুর ও হামিদ হোছন নামের দু’জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে।
Posted ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ০১ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta