রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

উল্টো রথযাত্রা উৎসব : শুক্রবার নিজ মন্দিরে ফিরছেন জগন্নাথ

শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯
218 ভিউ
উল্টো রথযাত্রা উৎসব : শুক্রবার নিজ মন্দিরে ফিরছেন জগন্নাথ

রণজিৎ মোদক(১১ জুলাই) :: শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের ফিরতি (উল্টো) রথযাত্রা উৎসব ১২ জুলা্শই ক্রবার । গত ৩ জুলাই রথযাত্রা শুরু হয়। প্রায় টানা নয় দিন প্রতিটি মন্দিরে নানা অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে চলে রথযাত্রা উৎসব।১২ জুলাই শুক্রবার টানা হবে উল্টোরথ।এদিন শয়ন উৎসব পালনের মাধ্যমে রথযাত্রার অনুষ্ঠানাদির সামাপ্তি হবে। প্রতিবছর আষাঢ় মাসের শুক্লা পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়। টানা নয় দিনের দিন পালন করা হয় রথযাত্রা উৎসব।

কথিত আছে, আষাঢ় মাসের শুক্লা তিথিতে শ্রী শ্রী জনগন্নাথ, তার ভাই শ্রী শ্রী বলভদ্র (বলরাম) ও বোন শ্রী শ্রী সুভদ্রাকে সাথে নিয়ে পুরীধামের মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দিরে যান।সেখানে নয়দিন অবস্থানের পর আবার পুরীধামে ফিরে আসেন। পুরীধামে শ্রী শ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রার মাধ্যমেই যুগযুগ ধরে চলে আসছে এই উৎসব। উল্টো রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে কাল আবারও মিলন মেলায় পরিণত হবে সারাদেশ।

পত্র-পল্লব ছায়া শীতল গুন্ডিচা মন্দিরে বড় দাদা বলরাম ছোট বোন সুভদ্রাকে সাথে নিয়ে মাসীর বাড়ি ঐশ্বর্যময়ী শ্রীশ্রী লক্ষীদেবীর সেবা গ্রহন করেন। সপ্তাহ অবদী কাল পর পূনরায় নিজ মন্দির উপলক্ষে রথে করে যাত্রা করেন। এ যাত্রাকে পুনঃ গমন বা উল্টো রথযাত্রা বলে।

ভগবানের প্রতিটি লীলার সাথে সাধারণ মানুষের অন্তর নিহিত সম্পর্ক রয়েছে। লীলাময়ের লীলার তাৎপর্য্য বা অর্থ তিনিই জানেন। কলিযুগে অবতার পুরুষ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নিজে আচরি তা জীবকে শিক্ষা দিয়ে গেছেন।

কথার মধ্যে যেমন কথা লুকিয়ে থাকে, ফুলের মধ্যে যেমন ফুলের সুগন্ধ লুকিয়ে থাকে ঠিক তেমনই ভগবানের এই রথযাত্রার মধ্যে জীব জগতের আসা যাওয়ার রহস্য কথা লুকিয়ে রয়েছে। শ্রীমদ্ভাগবতে বলা হয়েছে, “শুদ্ধ সত্ত্বে অধিষ্ঠিত হয়ে ভক্তি যোগে যুক্ত হওয়ার ফলে যার চিত্ত প্রশন্ন হয়েছে, তিনি সমস্ত জড় বন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে ভগবত্তত্ত্ব বিজ্ঞান উপলব্ধি করেন।”

পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জগন্নাথ, পরমাত্মারূপে সকলের হৃদয়ে বিরাজ করেন। তিনি বলেছেন, আমি যার তার হাতে খাই না। বিশুদ্ধ চিত্ত নিস্কাম ভক্ত-ভক্তি সহকারে আমাকে পত্র, পুস্প, ফল ও জল অর্পন করেন, আমি তাঁর সেই ভক্তিপুত উপহার প্রীতি সহকারে গ্রহণ করি। শুধু তাই না আমি সেই ভক্তের কাছে ঋণী হয়ে থাকি। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে মহাবীর অর্জুনের রথের সারথী মঙ্গলময় শ্রীকৃষ্ণ।

এ বিশাল সংসার যুদ্ধে প্রতিটা দেহধারী জীবের দেহ রথের সারথী আত্মা রূপে রয়েছেন শ্রীকৃষ্ণ। ভগবান কলিযুগে ভক্তরূপে নদীয়াতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। “যেই ভক্ত সেই ভগবান ইহা জানা আছে, ভক্তি ধন যদি পেতে চাওরে মন যাওনা ভক্তের কাছে।” ভক্তের কাছে ভগবান দারুব্রহ্ম রূপে এসেছেন তারই কেন্দ্র বিন্দু পুরীধাম।

স্বপ্নাদেশ অনুসারে “মহারাজ ইন্দ্রদ্যুস্ন দারুব্রহ্মকে শ্রীমুর্তিরূপে প্রকট করার জন্য বহু দক্ষ শিল্পীকে আহবান করলেন, কিন্তু তারা কেউ দারুব্রহ্ম স্পর্শই করতে পারলেন না। তাদের অস্ত্র-শস্ত্র সমস্তই খন্ড-বিখন্ড হয়ে গেল। অবশেষে স্বয়ং ভগবান “অনন্ত মহারাণা” নামে আত্মপরিচয় প্রদান করে একজন বৃদ্ধ শিল্পীর ছদ্মবেশে সেখানে এসে উপস্থিত হন।

একুশ দিনের মধ্যে দ্বাররুদ্ধ করে শ্রীবিগ্রহ প্রকটিত করবেন, এ প্রতিশ্রুতি দান করলেন। কিন্তু দু’সপ্তাহ অতিবাহিত হওয়ার পর কারিগরের কোনো শব্দ না পেয়ে রাজা অত্যন্ত উৎকন্ঠিত হয়ে পড়লেন। মন্ত্রীর নিষেধ সত্ত্বেও রাণীর পরামর্শ অনুসারে রাজা স্বহস্তে মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত করলেন। সেখানে বৃদ্ধ কারিগরকে দেখতে পেলেন না, কেবল দেখলেন দ্বারুব্রহ্ম।

তিনটি শ্রীমূর্তির শ্রীহস্তের আঙ্গুলগুলি এবং পাদপদ্ম প্রকাশিত হয়নি। রাজা এই মূর্তি দেখে নিজেকে অপরাধী মনে করে তিনি প্রাণ ত্যাগ করার সংকল্প নিয়ে কুশশয্যায় শয়ন করলেন।

জগন্নাথ দেব রাজাকে স্বপ্নে দর্শন দান করে বললেন, “আমি এই রূপে ‘শ্রীপুরুষোত্তম’ নামে শ্রীনীলাচলে নিত্য অধিষ্ঠিত আছি। আমার ঐশ্বর্য্যময়ী সেবায় যদি তোমার অভিলাষ হয় তাহলে তুমি স্বর্ণ বা রৌপ্য নির্মিত আদির দ্বারা কখনো কখনো আমাকে ভূষিত করতে পারো। রাজা শ্রী জগন্নাথ দেবকে বললেন, “আমাকে একটি বর দান করতে হবে।

প্রতিদিন মাত্র তিন ঘন্টা আপনার মন্দিরের দ্বার বন্ধ থাকবে আর জগৎবাসী সকলের দর্শনের জন্য অবশিষ্ট সময় আপনার মন্দিরের দ্বার খোলা থাকবে। শ্রী জগন্নাথ দেব বললেন, তথাস্থ।

তখন রাজা আর একটি বর চাইলেন, এ মন্দির যেন কেউ নিজসম্পত্তি বলে দাবি করতে না পারে, সেজন্য আমি নির্বংশ হতে চাই। শ্রী জগন্নাথ দেব রাজাকে তথাস্থ বলে এই বরও প্রদান করলেন। মহাপ্রভু সেই পুরীধামে জগন্নাথ দর্শন করে ভাব বিহবল হয়ে পরেন। এই জগন্নাথকে কেন্দ্র করেই পুরীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল এই রথযাত্রা উৎসব।

পরবর্তীতে মহাপ্রভুর মহাসেনাপতি শ্রীল প্রভূপাদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হরিনামের বন্যায় ভাসিয়ে রথযাত্রার আনন্দকে মহামিলনের মোহনায় দাঁড় করালেন। জগন্নাথ দেব উল্টো রথে চড়ে তিনি তার নিজ মন্দিরে চলে যাচ্ছেন। ব্যাক টু হোম। আমরাও একদিন আমাদের সেই পরমধামে চলে যাবো। হিংসা বিদ্বেষ স্বার্থময় এ সংসারে মনুষ্যত্বকে সঠিক পথে ধরে রাখা নিতান্তই কঠিন।

যে কারণে রাজা ইন্দ্রদ্যু¤œ শ্রী জগন্নাথের কাছে নিরবংশ হওয়ার বর প্রার্থনা করেছিলেন। তিনি জানতেন মন্দিরকে সম্পদ জেনে বংশধরেরা নিজেদের মধ্যে কলহ-বিবাদ সৃষ্টি করবে। মহাভারতে দ্বাপর যুগে কৌরব-পান্ডব সিংহাসন নিয়ে মহাযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। পরিণামে কৌরব বংশ ধ্বংস হয়েছে।

কলিযুগে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু শান্তির বাণী হৃদয়ে ধারন করে শুদ্ধ ভক্ত জীবনের মাধ্যমে দেহরথকে সচল রেখে “কৃষ্ণের সংসার করাই উত্তম”।
আমাদের এই দেহ রথখানা ঠিক গন্তব্যস্থলে চলে যাওয়ার যোগ্যতা এবং ভক্তিসম্বল অর্জনই হচ্ছে মূখ্য উদ্দেশ্য।

শ্রীল প্রভূপাদ সেই উত্তম পথকে অনুসরণ করার জন্যই আজকের এই রথযাত্রা সারাবিশ্বে সমাদৃত। হরে কৃষ্ণ…

218 ভিউ

Posted ১:২৭ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com