রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা

শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৯
147 ভিউ
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরগুলোতে রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা

কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৯ নভেম্বর) :: ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার থেকে নতুন করে রোহিঙ্গা ঢল নামার পর দেশের সীমান্ত অঞ্চল কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের আশ্রয় শিবিরগুলোতে কত রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে সে বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো তথ্য মিলছে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এক লাখ আট হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরাসরি কাজ করা ব্যক্তিরা সুনির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা জানাতে পারেননি।

সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফসহ কিছু সংস্থা কাজ করছে।

গত প্রায় ২৭ মাসে রোহিঙ্গা শিবিরে কত রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয়েছে সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি ইউএনএইচসিআরের কাছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে কয়টি শিশুর জন্ম হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল সংস্থাটির কাছে গত সপ্তাহে। সেই সঙ্গে সন্তানসম্ভবা হিসেবে চিহ্নিত রোহিঙ্গা নারীর সংখ্যাও জানতে চাওয়া হয়।

জবাবে কক্সবাজারে ইউএনএইচসিআরের তথ্য কর্মকর্তা লুইস ডোনোভান ২০১৯ সালের জন্য রোহিঙ্গা সংকটের যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনার (জেআরপি) বরাত দিয়ে বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাত’ এ বছর আনুমানিক ২২ হাজার জন্মের বিষয়ে কাজ করছে। স্বাস্থ্য খাতের কর্মীদের বেশ কিছু জরিপের ভিত্তিতে ওই সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, ইউএনএইচসিআর বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে মিলে সব রোহিঙ্গার যৌথ নিবন্ধন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্ব পরিচালনা করছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে এবং তা প্রকাশ করা হবে।

শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. মাহবুব আলম তালুকদারের ধারণা, রোহিঙ্গা শিবিরে দুই বছরে রোহিঙ্গা শিশু জন্মসংখ্যা এক লাখ ছাড়ায়নি।

অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু দ্দৌজা বলেছেন, দুই বছরে রোহিঙ্গা শিশু জন্মসংখ্যা ৬১ হাজারের মতো হতে পারে।

ওই দুই কর্মকর্তাই রোহিঙ্গা শিবিরে প্রায় ৩০ হাজার সন্তানসম্ভাবনা রোহিঙ্গা নারী থাকার তথ্য জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষ হলে এ বিষয়ে আরো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।

এ বছরের জেআরপিতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত লোকসংখ্যার হিসাব ধরে রোহিঙ্গা শিবিরে থাকা ৯ লাখ দুই হাজার রোহিঙ্গাসহ মোট ১২ লাখ ৪৫ হাজার লোকের চাহিদা পূরণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল। ওই হিসাবের মধ্যে শূন্য থেকে চার বছর বয়সী রোহিঙ্গা শিশুর সংখ্যা দেখানো হয়েছে এক লাখ ৬৩ হাজার ২০০।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রোহিঙ্গা ঢল শুরু হওয়ার পর প্রথম দিকে আসা রোহিঙ্গা নারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ছিল মিয়ানমারে ধর্ষণের শিকার। ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুর সংখ্যা নিয়েও স্পর্শকাতরতা আছে। তবে সুনির্দিষ্ট করে তথ্য পাওয়া কঠিন।

এ ছাড়া এ দেশে জন্ম নেওয়া রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলাদেশ কেন জন্ম নিবন্ধন সনদ দেয় না, তা নিয়ে কিছু আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ও তাদের স্থানীয় অংশীদারদের আক্ষেপ আছে। সরকারি সূত্রগুলো বলছে, রোহিঙ্গা শিবিরে জন্ম নেওয়া শিশুদের বাংলাদেশি হিসেবে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়ার কোনো কারণ নেই।

জানা গেছে, গত আগস্ট মাস পর্যন্ত দুই বছরে প্রায় ৯১ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হওয়ার তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এ সংখ্যার সত্যতা নিশ্চিত করেনি।

ইউনিসেফ ২০২০ সালের জন্য যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে, তাতে শূন্য থেকে ১১ মাস বয়সী এক লাখ চার হাজার ৯০০ শিশুকে টিকার আওতার লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা এখন রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় নাগরিকদেরও সেবা ও সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্য ঠিক করছে। এর ফলে কতজন রোহিঙ্গা শিশু ও কতজন স্থানীয় বাংলাদেশি শিশুকে তারা সেবার আওতায় আনছে সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।

এদিকে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে রবিবার থেকে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো শুরু হচ্ছে।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবদুল মতিন শুক্রবার বিকেলে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গা শিবিরে কত শিশুর জন্ম হয়েছে সে সম্পর্কে আমরা জানি না। কেউ জানে না।

তবে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য্য জানান,রোহিঙ্গা শিবিরে তারা যখন শিশু জন্ম হারের জরিপ কাজ শুরু করতে যান তখন ইউনিসেফ সহ কয়েকটি সংস্থা তাদের কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করেন।

এদিকে ইউএনএইচসিআর, ইউনিসেফসহ বিভিন্ন তথ্য মতে, এক থেকে পাঁচ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শিশুর সংখ্যা এক লাখ ৫১ হাজার।’অন্যদিকে গত ১২ নভেম্বরর এক প্রশ্নের জবাবে সেভ দ্যা চিল্ড্রেনের কক্সবাজারের প্রধান জানান এক থেকে ১৮ বছর বয়সী ৫ লাখ রোহিঙ্গা শিশু রয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থীবিষয়ক সেলের গত ১১ নভেম্বর পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ১৫৫ জন গর্ভবতী নারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। সংখ্যাটি তারা পেয়েছে রোহিঙ্গা সংকটে সাড়া দেওয়া বিভিন্ন খাতের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ইন্টার সেক্টর কো-অর্ডিনেশন গ্রুপের (আইএসসিজে) কাছ থেকে।

জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) সহযোগিতায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে এ বছরের শুরুর দিকে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করে। বর্তমানে এ জরিপ বন্ধ আছে।

ইউএনএফপিএর গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা শিবিরে ২৯ হাজার ৮১৮ জন সন্তানসম্ভাবনা নারীর তথ্য রয়েছে।

সরকারের বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর পরিচালিত বায়োমেট্রিক নিবন্ধন অনুসারে গত অক্টোবর মাস শেষে বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছিল ১১ লাখ ১৮ হাজার ৫৭৬। তাদের মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে গত মাসের ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত সাত লাখ ৪১ হাজার ৮৪১ জন আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে। আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে পিতৃমাতৃহীন শিশুর সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৪১। তাদের মধ্যে আট হাজার ৩৯১ রোহিঙ্গা শিশুর মা-বাবা কেউ নেই।

রোহিঙ্গা শিশুদের ‘পুষ্টি কার্যক্রম সপ্তাহ’ ১-৫ ডিসেম্বর

দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুর জন্য ‘পুষ্টি কার্যক্রম সপ্তাহ’ ১-৫ ডিসেম্বর

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে রোহিঙ্গা শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি পূরণের জন্য ‘পুষ্টি কার্যক্রম সপ্তাহ’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগামীয় ১ ডিসেম্বর থেকে ৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই উপজেলার ৩৪টি রোহিঙ্গা শিবিরের ৮২ টি সেন্টারে এ কার্যক্রম চলবে।

এসময় শিশুদের টিকা খাওয়ানোর পাশাপাশি মায়েদের নিকট বিভিন্ন পুষ্টিবার্তাও প্রচার করা হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা: মো: আবদুল মতিন।

তিনি বলেন, ‘দুই উপজেলার রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বর্তমানে ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ১ লাখ ৫১ হাজার ১৩৩ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ছেলে শিশু ৭৬ হাজার ৮১৩ জন এবং মেয়ে শিশু ৭৪ হাজার ৩২০ জন। এই শিশুদের মধ্যে কমপক্ষে ৯০ শতাংশের কাছে আমরা সেবা পৌঁছুতে চাই।  পুষ্টি কার্যক্রম সপ্তাহে প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত সেন্টারগুলো উন্মুক্ত থাকবে। প্রতিটি সেন্টারে ৮ জন করে স্বেচ্ছাসেবক কাজ করবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক পিন্টু কান্তি ভট্টাচার্য্য, জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ডা: মুহাম্মদ আবদুর রহিম, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা: রঞ্জন বড়ুয়া রাজন, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম সবুজ প্রমুখ।

147 ভিউ

Posted ৪:৫১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৯

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com