কক্সবাংলা রিপোর্ট(১০ ডিসেম্বর) :: কক্সবাজার জেলার ৪টি আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ প্রার্থী। এসব প্রার্থীর মধ্যে ১০ ডিসেম্বর সোমবার প্রতীক বরাদ্দ দেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন।
আর প্রতীক পেয়েই প্রচারণায় ঝাঁপিয়ে পড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রচারণায় নামা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা। এসময় নিজ নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দেন তারা। ভোটারদের কাছে ভোট চান। দেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরাই পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে শুরু করেন প্রচারণা।এ দল দুটির প্রার্থীরা নির্বাচনি পোস্টার প্রস্তুত করে রেখেছিলেন। কাল প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার টানিয়েছেন তারা।এছাড়া লিফলেট বিতরণ করতেও দেখা যায় প্রার্থীদের। প্রার্থীরা পূর্বে থেকেই প্রচারণার জন্য মাইকের ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। ফলে প্রতীক বরাদ্দের পর নৌকা আর ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাওয়ার মাইকিংয়ে মুখর হয়ে ওঠে বিভিন্ন এলাকা।আর এর মধ্য দিয়েই জেলায় নির্বাচনী প্রচার উৎসব শুরু হয়ে গেলো।
এদিকে, সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা রিটার্নিং অফিসার। জানা যায়, কক্সবাজার জেলার ৪টি পৌরসভা ও ৭১ ইউনিয়নের ৫১২ ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ২০৪ জন। সেখানে ৭ লাখ ৭ হাজার ৮৩১ জন পুরুষ এবং ৬ লাখ ৫৭ হাজার ৩৭৩ জন মহিলা। ভোট কক্ষের সংখ্যা ২ হাজার ৭৩৮টি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার জেলার ৪টি আসনে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা ২৮ জন। এরা হলেন-
কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়) আসনের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা হচ্ছেন বিএনপি’র প্রার্থী ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমদ(ধানের শীষ), চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আলম(নৌকা), জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বর্তমান এমপি হাজী মো.ইলিয়াছ(লাঙ্গল), জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হাজী আবু মো.বশিরুল আলম(হাতুড়ি),স্বতন্ত্র পার্থী তানিয়া আফরিন(মোটর গাড়ি),ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আলী আজগর(হাতপাখা),বাংলাদেশ মুসলিম লীগ প্রার্থী মুহাম্মদ ফয়সাল(হারিকেন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বদিউল আলম(সিংহ)।
কক্সবাজার-২ (মহেশকালী-কুতুবদিয়া) আসনের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা হচ্ছেন জাতীয় পার্টির মো: মহিবুল্লাহ(লাঙ্গল) আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি আশেক উল্লাহ রফিক(নৌকা), গণফ্রন্টের প্রার্থী আনসারুল করিম(মাছ), সাবেক এমপি ও জামায়াত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হামিদুর রহমান আযাদ(আপেল),বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী আবু ইউসুফ মুহাম্মদ মনজুর আহমদ(মোমবাতি), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জসীম উদ্দিন (হাতপাখা), বিকল্প ধারার প্রার্থী শাহেদ সরওয়ার(কুলা), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ প্রার্থী মো. শহিদুল্লাহ(হারিকেন) ও ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশে’র প্রার্থী জিয়াউর রহমান(চেয়ার)।
কক্সবাজার-৩ আসনে(সদর-রামু) আসনের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি সাইমুম সরোয়ার কমল(নৌকা), বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি লুৎফর রহমান কাজল(ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি মফিজুর রহমান(লাঙ্গল),ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ আমিন(হাতপাখা), ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিষ্ট ফ্রন্টের প্রার্থী মো.হাছন (টেলিভিশন)।
কক্সবাজার-৪(উখিয়া-টেকনাফ) আসনের প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থীরা হচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান এমপি আব্দুর রহমান বদির স্ত্রী শাহীন আকতার(নৌকা),বিএনপি প্রার্থী ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধূরী(ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবুল মনজুর(লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মোহাম্মদ শোয়াইব(হাতপাখা), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী রবিউল হাসান(মিনার), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ প্রার্থী সাইফুদ্দিন খালেদ(হারিকেন)।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে কক্সবাজারে প্রার্থী দিয়েছে ১২টি দল। গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। ওই দিন ৩৪ জনের মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে জমা পড়ে ৩০টি মনোনয়নপত্র বাকি ৪টি স্বতন্ত্রের। বাছাইয়ে ৪ জনের প্রার্থীতা বাতিল হয়। তবে নির্বাচন কমিশনে আপিল করে এক নেতা প্রার্থিতা ফিরে পান। আর মাত্র একজনের মনোনয়ন প্রত্যাহার করা হয়।তিনি কক্সবাজার-২ (মহেশকালী-কুতুবদিয়া) ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী এ এম মাসুদুল ইসলাম মাসুদ।
তবে ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দকালে কক্সবাজার-৪ আসনে একই দলের দুইজন করে প্রার্থী থাকায় নির্বাচনী আইন অনুযায়ী মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনেরন মনোনয়নপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়। আর কক্সবাজার-২ আসনে সাবেক এমপি ও বিএনপি প্রার্থী মাহফুজুল্লাহ ফরিদ দলীয় মনোনয়নের চিঠি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় মনোনয়নপত্রও নিয়ম অনুযায়ী বাতিল হয়।ফলে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবার ৪টি আসনে ২৮ প্রার্থীই অংশ নিচ্ছেন।
কক্সবাজার জেলা রিটার্ণিং অফিসার মো: কামাল হোসেন জানিয়েছেন জেলার ৪টি সংসদীয় আসনে ২৮ প্রার্থীই নির্বচনে লড়বেন।সে লক্ষে তাদের প্রতীক বরাদ্ধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত,নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী,আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট। এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল ২৮ নভেম্বর।প্রার্থিতা প্রত্যাহার ছিল ৯ ডিসেম্বর আর প্রতীক বরাদ্দ ১০ ডিসেম্বর।
Posted ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta