কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৯ ডিসেম্বর) :: খ্রিস্টীয় ২০১৮ সালের বিদায় এবং ২০১৯ বরণকে ঘিরে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের শহর কক্সবাজারে এবার চোখে পড়বে না পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়। ৩১ ডিসেম্বরের আগে ও পরে প্রতিবছর এ উপলক্ষে কক্সবাজার সমাগম হয়ে থাকে ৩ লক্ষাধিক দেশী-বিদেশী পর্যটক। এবার কক্সবাজারে পর্যটক শূণ্যতা থাকবে এবং এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এছাড়া বছরের শেষ দিন অর্থাৎ থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে প্রতি বছর জমে ওঠে পর্যটন শহর কক্সবাজারের তারকা হোটেলগুলো। জমকালো পার্টি ও কনসার্টের পাশাপাশি থাকবে নানা পরিবেশনা। বর্ষশেষ উদযাপন ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে অনেকে পরিবার, বন্ধুদের নিয়ে ছুটে যান এসব তারকা হোটেলে। আবার একই উপলক্ষে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পর্যটন শহর কক্সবাজারে একত্রিত হয় কয়েক লাখ মানুষ।
সৈকত শহর কক্সবাজার থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা থাকে তারকা হোটেল ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ের। তবে নির্বাচনের কারণে এবার থার্টিফার্স্ট নিয়ে তেমন রমরমা আমেজ নেই তারকা হোটেলগুলোয়। পর্যটকদের ভিড়ে মুখর হয়নি বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,হোটেল সাইমন রিসোর্ট,ওশান প্যারাডাইস,হ্যারিটেজ,রয়েল টিউলিপ,নিসর্গ,লংবিচ,সী প্যালেস,সী’গাল,কক্স টুডে এর মতো তারকা হোটেলগুলোয় এবার নেই থার্টিফার্স্ট নাইটের কোনো বিশেষ আয়োজন। অন্যবার থার্টিফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আগ থেকেই ফ্যামিলি পার্টি ও করপোরেট পার্টির জন্য এসব হোটেলে ভেনু বুকিং থাকে। কিন্তু নির্বাচনী বাধা-নিষেধের জন্য এসব হোটেলে এবার বিশেষ আয়োজন হচ্ছে না।
একই কারণে কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল-রেস্টুরেন্ট-গেস্ট হাউজে এবার থার্টিফার্স্ট নাইটের জন্য নেই পর্যটকদের আগমন। ডিসেম্বরের মাঝে পর্যটকদের আগমন ঘটলেও ২৪ তারিখের পর থেকে পর্যটকশূন্য হতে শুরু করেছে কক্সবাজার। যার প্রভাব পড়ছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি হোটেলগুলোয়। পর্যটকদের জন্য তৈরি এসব হোটেলগুলোর আয়ের একটা বড় লক্ষ্যমাত্রা থাকে সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে নির্বাচনী কারণে তাদের আয়ের ওপর প্রভাব পড়বে। কিন্তু তারকা হোটেলগুলোয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করা বিদেশী অতিথি থাকায় এসব হোটেলে তেমন প্রভাব পড়বে না বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
থার্টিফার্স্ট নাইট উদযাপন ও শীতের ছুটি কাটাতে প্রতি বছর কক্সবাজার আসেন কয়েক লাখ দেশী-বিদেশী পর্যটক। ফলে দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ পরিবহন, সি বোট-সি বাইক, শামুক-ঝিনুক ও পাথর দিয়ে তৈরি হস্তশিল্পের বাহারি স্টল, বার্মিজ মার্কেটের বেচাকেনা এবং খাবারের হোটেলের ব্যবসার একটি ভালো সময় ভাবা হয় ডিসেম্বর মাসকে। সে কারণে এ সময়ে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করা হয়। ফলে নির্বাচনী প্রভাবে এবার বিনিয়োগের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, নির্বাচনের কারণে এখন পর্যন্ত পর্যটকদের কোনো আয়োজন নেই। সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। আমরাও নিজেরা এ বিষয়ে একটি মিটিং করতে চেয়েছিলাম কিন্তু সরকারি বাধা-নিষেধের কারণে সেটাও করা হয়নি। থার্টিফার্স্ট উপলক্ষে আগে থেকে যেসব বিনিয়োগ করা হয়েছে, সেটার ওপর প্রভাব পড়বে এবং বিনিয়োগকারীরা হতাশাগ্রস্ত। তবে নির্বাচন-পরবর্তী অবস্থা কিছুটা ভালো হবে বলে আশা করা যায়।
তারকা হোটেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের মানবিক কার্যক্রমে রেকর্ড বিদেশীদের আনাগোনা বাড়লেও নির্বাচনের কারণে এবার সেটা খুব কম। একই সঙ্গে বিদেশীরা যেহেতু এনজিওর কাজে কক্সবাজারে আসেন নির্বাচনের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশীদের অবস্থান সাময়িক বন্ধ থাকায় তারাও কম আসছেন। সব মিলিয়ে এবার কক্সবাজারে থার্টিফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে তারকা হোটেলগুলোয় এবার কোনো আমেজ ছাড়াই শেষ হবে।
Posted ১২:০১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta