কক্সবাংলা রিপোর্ট(২৫ নভেম্বর) :: কক্সবাজারে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ভবিষ্যৎ পানির উৎস শনাক্তকরণে গঠিত টেকনিক্যাল ওয়াকিং গ্রুপ (TWG) এর প্রথম সভা এবং জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এ সভার আয়োজন করেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব জনাব কবির বিন আনোয়ার।
জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেনর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কক্সবাজার-এর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।
প্রসঙ্গত কক্সবাজার শহর সাগরের খুব কাছে হওয়ায় লবণাক্ত পানি হোটেল-মোটেল জোনসহ পার্শ্ববর্র্তী এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানির আধারে প্রবেশ করে পানযোগ্য সুপেয় পানিকে ইতোমধ্যেই দূষিত করছে। ফলে শহরের অর্ধেক এলাকার ভূ-গর্ভস্থ পানি লবণাক্ত হয়ে ব্যবহার অযোগ্য হয়েছে।আর গ্রীস্মকালে কক্সবাজার শহরে সুপেয় পানির সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে। শহরের প্রধান সড়কের উত্তরাংশের পর এবার কলাতলি এলাকায়ও গভীর নলকূপে পাওয়া যাচ্ছে লবণপানি। গণহারে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানি উত্তোলনের ফলে পর্যটন শহর কক্সবাজারে ভূগর্ভস্থ পানিস্তরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত নেমে যাচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানিস্তর।
পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জানায়, শহরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষ করে কলাতলী হোটেল মোটেল জোনে অবস্থিত ৫ শতাধিক বহুতল ভবনে অপরিকল্পিতভাবে সাবমারসিবল মোটর দিয়ে গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী দেড় হাজার থেকে দুই হাজার ফুট দূরত্বের মধ্যে একেকটি গভীর নলকূপ স্থাপনের কথা। কিন্তু হোটেল মালিকেরা মাত্র ৫০ ফুটের মধ্যেই একাধিক নলকূপ বসিয়েছে। এছাড়া নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস করা ও ব্যাপকভাবে পাহাড় কাটার কারণে এ বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি আরো জানান, কক্সবাজারের সৈকতজুড়ে ও হোটেল-মোটেল জোনের ভূপৃষ্ঠে এবং ভূ-গর্ভের বালুতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ থোরিয়াম, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ মোনাজাইট এবং জিরকন নামে খনিজ পদার্থ রয়েছে। মাত্রাতিরিক্ত ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের প্রভাবে বিভিন্ন রাসায়নিকপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে এসব খনিজ পদার্থ ভূ-গর্ভস্থ পানিতে মিশে যেতে পারে। এতে পানি ভয়াবহ দূষণের কবলে পড়বে এবং দূষিত পানি পানের কারণে স্থানীয় জনগণ দেশী বিদেশী পর্যটকদের ক্যান্সারসহ মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সচেতন না হলে কক্সবাজারে বিকাশমান পর্যটন শিল্পের জন্য এটি একটি হুমকি হয়ে দেখা দিতে পারে।
Posted ৭:১৫ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta