কক্সবাংলা রিপোর্ট(১৪ জুন) :: পর্যটন নগরী কক্সবাজার-ঢাকা রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনার বিষয়ে ভাবছে সরকার। বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি-না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকা এবার প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাসিনা। বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ১১২০টি নতুন যাত্রীবাহী রেলকোচ এবং ১১১০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল ট্র্যাক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫২ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণের পাশাপাশি ১০০টি রেল ইঞ্জিন কেনা হবে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রুতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি-না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে।
প্রসঙ্গত ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার এবং রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের অর্থনীতি ও পর্যটন শিল্পের জন্য অতিগুরুত্বপূর্ণ দোহাজারি-কক্সবাজার রেল লাইন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৩৫ কোটি টাকা।এ রেল লাইন প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে এ রেল লাইন নির্মাণ কাজের প্রায় ২১.৫১ শতাংশ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে গ্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের কাজও। ২০২২ সালের মধ্যেই এ প্রকল্পটি চালু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্প সূতে জানা যায়, দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিমি, রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিমি এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ হচ্ছে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পর্যটক ও স্থানীয় জনগণের জন্য নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রবর্তন হবে। সহজে ও কম খরচে মাছ, লবণ, কাগজের কাঁচামাল, বনজ ও কৃষিজ দ্রব্যাদি পরিবহণ করা যাবে।
আর এ ১২৮ কিমি রেলপথে স্টেশন থাকছে ৯টি। এগুলো হলো- সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, ঈদগাও, রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও ঘুমধুম। এতে থাকবে কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলক সিগন্যাল সিস্টেম এবং ডিজিটাল টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেম। সাঙ্গু, মাতামুহুরী ও বাঁকখালী নদীর ওপর নির্মাণ করা হবে ৩টি বড় সেতু।
এছাড়াও এ রেলপথে নির্মিত হবে ৪৩টি ছোট সেতু, ২০১টি কালভার্ট এবং ১৪৪টি লেভেল ক্রসিং। সাতকানিয়ার কেঁওচিয়া এলাকায় তৈরি হবে একটি ফ্লাইওভার, রামু ও কক্সবাজার এলাকায় দুটি হাইওয়ে ক্রসিং।
সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান আগামী ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হবে। এ রেলপথ ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে করিডরের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে।
এটি আঞ্চলিক, উপ-আঞ্চলিক রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে। এ রেলওয়ে নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ-ভারত- মিয়ানমার-চীন হয়ে যাবে ইউরোপের তুরস্ক পর্যন্ত।
Posted ৮:০৩ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta