কক্সবাংলা ডটকম(২১ জুন) :: করোনা পরিস্থিতিতে দেশে দারিদ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সামাজিক সেবার সুযোগ হ্রাস পাওয়ায় আরও বেশি শিশুকে শ্রমের দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। একই সাথে স্কুল থেকে ঝরে পড়া বাড়বে উল্লেখযোগ্যভাবে। যার ফলশ্রুতিতে দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও শিশুশ্রম হ্রাসের দুই দশকের অগ্রগতি হুমকির মুখে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শিশুশ্রম যাতে বৃদ্ধি না পায় এজন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি বৃদ্ধি করে দারিদ্রতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। সেইসাথে এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক শ্রমসংস্থা আইএলও ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে ‘কোভিড-১৯ ও শিশুশ্রম : সংকটের সময়, পদক্ষেপের সময়’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
ওই প্রতিবেদন বলছে, ২০০০ সাল থেকে শিশু শ্রমের সংখ্যা ৯ কোটি ৪০ লাখে কমে আসলেও কোভিড-১৯ এর কারণে সেই অর্জন এখন ঝুঁকির মুখে পড়তে বসেছে। কোভিড-১৯ এর ফলে এ বছরেই ৬ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়তে পারে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, দারিদ্র এক শতাংশ বাড়লে শিশুশ্রম অন্তত দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরমের পরিচালক আব্দুছ সহিদ মহমুদ বলেন, করোনার কারণে শিশু পরিস্থিতি নিয়ে আমরা একটি অনলাইন সার্ভে করেছি। সেই অভিজ্ঞতা বলছে শিশুশ্রম ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০০৬ সালের শিশুশ্রম প্রতিবেদনের চেয়ে ২০১৫ সালের প্রতিবেদনে ৪৭ শতাংশ কমেছে বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এত বেশি সংখ্যক কমেনি বলে আমরা দ্বিমত পোষণ করি। তবে শিশুশ্রম কমেছে তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ নাই। এখন নতুন করে করে অনেক শিশু ত্রাণ, চুরি এবং শ্রমে যুক্ত হয়ে জীবন কাটাছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে নতুন করে অনেক শিশু শ্রমে নিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
তিনি বলেন, বাগেরহাটের চিংড়িঘেরে নিযুক্ত শিশুরা, পথশিশুরা কোথায় আছে তার কোনো তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলিতে নেই। যা শিশুশ্রম নিরসনে প্রয়োজন। মানুষের জন্য ফাইন্ডেশনের পরিচালক শাহিন আনাম ইত্তেফাককে বলেন,আমারা স্বল্প সময়ে দুটি সার্ভে করে দেখেছি সবচেয়ে দুর্বল হিসেবে শিশু সর্বাধিক ঝুঁকিতে আছে। তারা যেমন ঝুকিঁপূর্ণ শ্রমে যুক্ত হবে তেমন বেশি সহিংসতারও শিকার হবে। পরিবার দরিদ্র হওয়ায় শিশুর উপর মানসিক শারীরিক চাপ বাড়বে।সেই চাপ সামলে নিতে সরকার ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্কার কাজ করতে হবে।
গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী জানান, মার্চ-এপ্রিলে করা একটা তাৎক্ষনিক সার্ভে মতে জায়গা নির্ভর ঝুঁকি, অর্থনীতি উচ্চ থেকে নিম্ম জীবন-জীবিকা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে। এসব খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষার সাথে তথ্য ও বিজ্ঞান,তথ্য প্রযুক্তি যুক্ত করায় শিক্ষায় বরাদ্দ কমেগেছে। গতবছর বিনিয়োগ ছিল জিডিপির ২দশমিক ১২ শতাংশ। যা এবছর করা হয়েছে জিডিপির ২ দশমিক শ্যুণ নয় শতাংশ। বিনিয়োগ কমে দক্ষিন এশিয়ার নিন্মতম অবস্থানে।আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে সত্যি অনেক এগিয়েছি। যা হুমকির সম্মুখীন,অবস্থান ধরে রাখতে প্রয়োজনী প্রদক্ষেপ গ্রহনের তাগিদ দেন তিনি।
Posted ৫:০৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২২ জুন ২০২০
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta