
নজরুল ইসলাম,কুতুবদিয়া :: কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) আখতারুল ইসলা সেলিমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সেবা প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, তিনি প্রায় সময় অফিসে অনুপস্থিত থাকেন এবং বাইরে থেকেও অননুমোদিতভাবে ভূমি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করেন।
অফিসে তার হয়ে কাজ করেন আলম নূর নামের এক ব্যক্তি। জানা যায়, আলম নূর উক্ত অফিসে আউটসোর্সিং এ নাইটগার্ডের কাজ করেন।
জানা গেছে, তহসিলদার সেলিমের বিরুদ্ধে পূর্বেও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে।
উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদানের পর থেকেই তার বিরুদ্ধে নতুন করে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
অফিস চলাকালীন সময়ে বেলা ১২টার দিকে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে দেখা যায়, তহসিলদার সেলিম অফিসে উপস্থিত নেই। অফিস কক্ষে তালা ঝুলছিল।
রেকর্ড রুম খোলা অবস্থায় পাওয়া যায়। সেখানে আলম নূর নামের একজন ব্যক্তি ও তার সহযোগী বিভিন্ন ফাইল পর্যালোচনা করছিলেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা দ্রুত রেকর্ড রুম ত্যাগ করেন।
তহসিলদারের অবস্থান জানতে চাইলে আলম নূর নামের ওই ব্যক্তি জানান, “স্যার আসতেছেন, কিছুক্ষণ লাগবে।”
পরে মোবাইল ফোনে তহসিলদার আখতারুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “আমি উখিয়া থেকে রওনা দিয়েছি, আগামীকাল দেখা করুন।”
অভিযোগ রয়েছে, আলম নূর নামের ওই ব্যক্তি ভূমি অফিসের নাইট গার্ড হলেও নিয়মবহির্ভূতভাবে নামজারী ও খাজনা আদায়সহ বিভিন্ন ভূমি কার্যক্রমে সরাসরি জড়িত। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এতে অনেকের জমির অংশ অন্যের নামে রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে।
নুরুল হক নামের এক সেবা প্রার্থী জানান, “আমার জমির খতিয়ান করে দেওয়ার কথা বলে তহসিলদার সেলিম টাকা নিয়েছিলেন। পরে টাকা ফেরত দিলেও খতিয়ান করে দেননি।”
একাধিক সেবা প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমন আরও অভিযোগ জানিয়েছেন। তারা বলেন, “অভিযোগ করলে পরবর্তীতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় আলম নূরের হাতে।”
ভোগান্তির শিকার সেবা প্রার্থীরা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের দাবি, নাইট গার্ড আলম নূর এখন টাকার মালিক বনে গেছেন। কুতুবদিয়ার আজম রোড এলাকায় তিনি বাড়ি ও মার্কেট নির্মাণ করছেন।
তহসিলদার সেলিমের অনিয়মের বিষয়ে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যাথোয়াইপ্রু মারমা বলেন,“উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আখতারুল ইসলাম সেলিম কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তাকে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলায় বর্তমানে সার্ভেয়ার না থাকায় প্রশাসনিকভাবে তদারকিতে কিছুটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে।”
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগগুলো তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

Posted ১:৪১ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta