কক্সবাংলা ডটকম(১৩ আগষ্ট) :: সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে সকল কোটা তুলে দেয়ার সুপারিশ করছে কোটা পর্যালোচনায় গঠিত কমিটি। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে কিনা সে ব্যাপারে আদালতের কাছে সিদ্ধান্ত চাওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান কোটা পর্যালোচনা কমিটির প্রধান ও মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম।
তিনি বলেন, ‘কমিটির মোটামুটি সুপারিশ হল কোটা অলমোস্ট উঠিয়ে দেওয়া, মেধাকে প্রাধান্য দেওয়া। তবে সুপ্রিম কোর্টের একটা রায় আছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা প্রতিপালন ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং যদি খালি থাকে খালি রাখতে হবে। আমাদের সিদ্ধান্ত- যতদূর সম্ভব কোটা বাদ দিয়ে মেরিটি চলে যাওয়া। সময় এসেছে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যাব, এটা কমিটির প্রাথমিক অগ্রগতি।’
মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা সংরক্ষণ বিষয়ে আদালতের মতামত চাওয়া হবে জানিয়ে শফিউল আলম জানান, সরকার কোর্টের কাছে মতামত চাইবে। কোর্ট যদি মুক্তিযোদ্ধা বাদ দিতে বলে তাহলে সেটাও বাদ দেয়া হবে। আর কোর্ট যদি রাখতে বলে, তাহলে ওই অংশটুকু সংরক্ষিত রেখে বাকি সবটুকু উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কী ব্যবস্থা রাখা হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, এখন আর কেউ পিছিয়ে পড়া নেই। সবাই এগিয়ে গেছে। কাজেই আমরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোনও কোটা রাখার সুপারিশ করিনি।
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটায় সংরক্ষিত। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত।
বিদ্যমান এই কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে এ আন্দোলন ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১১ এপ্রিল সংসদে অধিবেশনে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি না রাখার ঘোষণা দেন। তবে কিছুদিন পরে সংসদে তিনি বলেন, ‘কোটা পদ্ধতি থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাই কোর্টের রায় আছে।’
নতুন করে আন্দোলন শুরু হলে কোটা পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গত ২২ জুলাই একটি কমিটি করে সরকার। ওই কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি), অর্থ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিবদের কমিটির সদস্য করা হয়।
কোটা পর্যালোচনা কমিটি গত ৮ জুলাই তাদের প্রথম সভা করে কর্মপন্থা নির্ধারণের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটা সংক্রান্ত দেশি-বিদেশী সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুতে কমিটিকে ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও গত ১৯ জুলাই এই কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কার্যদিবস বাড়ানো হয়।