রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম

রবিবার ২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শিরোনাম

গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগেই লোডশেডিং! চিন্তায় গ্রাহক ও বিদ্যুৎ খাতের পর্যবেক্ষকরা

বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
32 ভিউ
গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগেই লোডশেডিং! চিন্তায় গ্রাহক ও বিদ্যুৎ খাতের পর্যবেক্ষকরা

কক্সবংলা ডটকম(৭ ফেব্রুয়ারি) :: দেশে শীতের মৌসুম এখনো শেষ হয়নি। বিদ্যুতের চাহিদা গ্রীষ্মের তুলনায় অনেক কম। দিনে সর্বোচ্চ আট হাজার মেগাওয়াট। রাতে গড়ে সাড়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট (পিক আওয়ারে)। এটুকু বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে গিয়েও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে রাজধানীসহ বিভিন্ন মফস্বল এলাকায়।

গ্রীষ্ম মৌসুম শুরুর আগেই লোডশেডিংয়ের বিষয়টি চিন্তায় ফেলে দিয়েছে গ্রাহক থেকে শুরু করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পর্যবেক্ষকদের।

দেশে এখন প্রতিদিনই কম-বেশি লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতের ঘণ্টাপ্রতি উৎপাদন ও লোডশেডিংয়ের তালিকা প্রকাশ করে বিদ্যুৎ খাতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি)।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে ২১ জানুয়ারির পর থেকে দুই-একদিন অন্তর লোডশেডিং করতে হয়েছে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে। আর চলতি মাসে লোডশেডিং হয়েছে প্রতিদিনই। গত ছয় দিনে প্রতি ২৪ ঘণ্টায় পিক আওয়ারে সর্বনিম্ন ৫০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৬৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে।

মঙ্গলবারও প্রায় প্রতি ঘণ্টায়ই লোডশেডিং হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে সর্বনিম্ন ৫০ মেগাওয়াট থেকে সর্বোচ্চ ৪৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হয়েছে।

এ বিষয়ে বিপিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় গ্যাসের পর্যাপ্ত জোগান নেই। বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ কমেছে। ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বাধ্য হয়েই লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সর্বোচ্চ চাহিদার সময় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য দিনে গড়ে ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন পড়ে।

তবে মোটামুটি ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুটের সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলেই সরবরাহ ব্যবস্থাপনা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রে অন্যান্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে কাজে লাগিয়ে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখা যায়। কিন্তু বিপিডিবি এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য গ্যাসের দৈনিক গড় সরবরাহ পাচ্ছে ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ জ্বালানি ঘাটতির কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন কমে লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটছে।

দেশে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে ১১ হাজার ৭০৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার। সেখানে এখন গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে সর্বোচ্চ চার হাজার মেগাওয়াট। গ্যাসের অভাবে বসিয়ে রাখতে হচ্ছে প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অন্যদিকে বিপিডিবি গতকাল দেশব্যাপী বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা প্রাক্কলন করেছিল ১০ হাজার ২০০ মেগাওয়াট। রাতে সর্বোচ্চ চাহিদার প্রাক্কলন ছিল ১০ হাজার ৯০০ মেগাওয়াট।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌বিদ্যুতে লোডশেডিং হওয়ার কারণ মূলত গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি সংকট। দেড় মাস আগেও গ্যাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। সেখানে এখন তা নেমে এসেছে চার হাজার মেগাওয়াটে। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতিদিন যে পরিমাণ গ্যাস প্রয়োজন, তার থেকে অন্তত ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস কম পাচ্ছে বিপিডিবি।’

দেশে আসন্ন সেচ মৌসুমে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদার প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এ সময় বিদ্যুতে দৈনিক গ্যাসের ন্যূনতম চাহিদা হবে দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। আর সর্বোচ্চ চাহিদা হবে ১ হাজার ৭৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। বিদ্যুতে ফার্নেস অয়েলের চাহিদা থাকবে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ টন এবং ডিজেলের চাহিদা থাকবে ১৫ হাজার ৬০০ টন।

ওই সময় গ্যাসের ন্যূনতম চাহিদা দেড় হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ধরলেও পেট্রোবাংলা এ পরিমাণ গ্যাস সরবরাহ করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে। সংস্থাটির ওই সক্ষমতাই নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের ভাষ্যমতে, সংস্থাটির পক্ষে সর্বোচ্চ জোগান নিশ্চিত করা সম্ভব ৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ বছর বিদ্যুতে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জোর প্রস্তুতির কথা শোনা গেলেও এখনো এর সম্ভাব্য পরিমাণ নিশ্চিত করা যায়নি। এছাড়া জ্বালানির সম্ভাব্য আমদানির পরিমাণও অনেকাংশে ডলারপ্রাপ্যতার ওপর নির্ভর করছে।

সর্বোচ্চ চাহিদার কালে জ্বালানি সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তারাও। বিশেষ করে ডলার ঘাটতির কারণে গ্রীষ্মে ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর জন্য জ্বালানি আমদানি অব্যাহত রাখা নিয়েও আশঙ্কা রয়েছে।

বিদ্যুৎ খাতের বেসরকারি উদ্যোক্তা কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ইমরান করিম বলেন, ‘বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধে বন্ড ইস্যুতে কিছুটা স্বস্তি এসেছে। এটি একটি ভালো দিক। তবে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে হলে ডলারের ৫০ শতাংশ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে জ্বালানি আমদানি স্বাভাবিক রাখা যাবে, বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনাও স্বাভাবিক থাকবে।’

পর্যাপ্ত জ্বালানির সংস্থান না হওয়ায় দেশের মোট বিদ্যুৎ সক্ষমতার বড় একটি অংশ অব্যবহৃতই পড়ে থাকে। আবার আমদানিনির্ভরতার কারণে জ্বালানির আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিতিশীলতা বাড়লেই বিপাকে পড়ে যায় দেশের বিদ্যুৎ খাত। বর্তমানে এ বিপত্তিকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে ডলার সংকট।

বিপিডিবির তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্রিডভিত্তিক বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে বর্তমানে ২৫ হাজার ৯৫১ মেগাওয়াট। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা ১১ হাজার ৭০৮ মেগাওয়াট, কয়লাভিত্তিকের ৫ হাজার ৪১২ মেগাওয়াট, ফার্নেস অয়েলভিত্তিকের ৬ হাজার ৪৯২, ডিজেলভিত্তিকের ৪৯০, জলবিদ্যুতের ২৩০ ও সৌরশক্তিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা ৪৫৯ মেগাওয়াট। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট।

বিদ্যুতের পর্যাপ্ত উৎপাদন সক্ষমতা সত্ত্বেও শীত মৌসুমে লোডশেডিংয়ের বিষয়টি চিন্তিত করে তুলছে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞ ও পর্যবেক্ষকদের। তাদের এ আশঙ্কাকে আরো বাড়িয়ে তুলছে চলমান ডলার সংকট।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘কেন্দ্রগুলোর প্রাথমিক জ্বালানির পর্যাপ্ত সংস্থান না থাকার বিষয়টি প্রতি বছরই বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর পরও শীতে লোডশেডিং হলে সেটি মানা যায় না। কারণ এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা থাকে সর্বনিম্নে। চলতি বছরও বিদ্যুতের যে চাহিদার প্রাক্কলন করা হয়েছে, সেখানে গ্যাস ও কয়লা আমদানির জন্য পর্যাপ্ত ডলারের সংস্থান করাটা জরুরি। এটি করা গেলে লোডশেডিং কম হারে হবে। যদি তা না করা যায় তাহলে এ বছরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা কঠিন হবে।’

তবে বিদ্যুৎ বিভাগসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আসন্ন গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রয়োজনীয় জ্বালানির চাহিদা পূরণে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। জ্বালানি বিভাগও এখন বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে।

বিদ্যুতের নীতি ও গবেষণা সংস্থা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘এ বছর ‌বিদ্যুতের চাহিদা লক্ষ্যমাত্রা ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। এ পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রাথমিক জ্বালানির সর্বোচ্চ জোগান নিশ্চিত প্রয়োজন, সেখানে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সেটির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশেষ করে সেচ মৌসুম, গ্রীষ্ম ও রোজায় যাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন থাকে, সে লক্ষ্য নিয়ে এগোনো হচ্ছে।’

32 ভিউ

Posted ৩:২৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

coxbangla.com |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

Editor & Publisher

Chanchal Dash Gupta

Member : coxsbazar press club & coxsbazar journalist union (cbuj)
cell: 01558-310550 or 01736-202922
mail: chanchalcox@gmail.com
Office : coxsbazar press club building(1st floor),shaheed sharanee road,cox’sbazar municipalty
coxsbazar-4700
Bangladesh
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
বাংলাদেশের সকল পত্রিকা সাইট
Bangla Newspaper

ABOUT US :

coxbangla.com is a dedicated 24x7 news website which is published 2010 in coxbazar city. coxbangla is the news plus right and true information. Be informed be truthful are the only right way. Because you have the right. So coxbangla always offiers the latest news coxbazar, national and international news on current offers, politics, economic, entertainment, sports, health, science, defence & technology, space, history, lifestyle, tourism, food etc in Bengali.

design and development by : webnewsdesign.com