এম.জিয়াবুল হক,চকরিয়া(৬ জুলাই) :: চকরিয়া উপজেলার বিএমচর ইউনিয়নে স্থানীয় একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পরিকল্পিত কারসাজিতে জিন্মিদশা কবলে আটকা পড়েছে অন্তত ৩০টি পরিবার।
বর্ষা মৌসুমের আগে স্থানীয় মৃত আবু মোহাম্মদের ছেলে রুহুল কাদের ও নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে অভিযুক্ত সংঘবদ্ধ চক্রটি ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলপাড়া ও ব্যাংক পাড়ার উত্তর অংশে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়ায় বর্তমানে ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর বেশিরভাগ বসতঘর তলিয়ে গেছে বৃষ্টির পানিতে। এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এসব পরিবারের অন্তত দুই শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু সদস্য।
চলতি বর্ষা মৌসুমের আগে এপ্রিল মাসে অভিযুক্ত রুহুল কাদের ও নেজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ চক্রটি বিএমচর ইউনিয়নের ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলপাড়া ও ব্যাংক পাড়ার উত্তর অংশে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়ার ঘটনায় এলাকাবাসির পক্ষে ৩২টি পরিবারের সদস্যরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে।
এলাকাবাসির লিখিত অভিযোগটি ওইসময় তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বিএমচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জাহাংগীর আলম গত ১১ মে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেন।
প্রতিবেদনে ইউপি চেয়ারম্যান উল্লেখ্য করেন, বিএমচর ইউনিয়নের ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলপাড়া ও ব্যাংক পাড়ার উত্তর অংশে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি চলাচল পথটি অন্তত অর্ধশত বছরের পুরানো। উল্লেখিত পথ দিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি নীচে খালে চলে যায়। এতে বর্ষামৌসুমে জনগনের কোন ধরণের সমস্যা হতোনা।
প্রতিবেদনে ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, সম্প্রতি সময়ে পানি চলাচলের উল্লেখিত পথটি অভিযুক্ত রহুল কাদের ও নেজাম উদ্দিন তাদের বসতভিটার অংশের জায়গা হিসেবে বাউন্ডারী দেওয়াল দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন। এ অবস্থার কারণে বর্ষাকালে পানি চলাচল পথ বন্ধ হয়ে পড়ার কারনে জনগনের দুর্ভোগ তৈরী হবে। তাই তদন্তে প্রতিয়মান হয়েছে, দীর্ঘবছর পর বিবাদপক্ষ কর্তক বাউন্ডারী দেওয়াল নির্মাণ করে উল্লেখিত পানি চলাচলের পথ বন্ধ করার পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে বলে মনে হয়না।
এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুরুদ্দিন মুহাম্মদ শিবলী নোমান প্রতিবেদনের আলোকে এলাকাবাসির দুর্ভোগ লাগবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সহকারি কমিশনার (ভুমি) ও চকরিয়া থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। তবে এখনো বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের কোন ধরণের অগ্রগতি হয়নি।
স্থানীয় এলাকাবাসি জানায়, পরিকল্পিতভাবে পানি চলাচলের পথটি বন্ধ করে দেয়ার কারনে শুক্রবার ও শনিবারের দুইদিনের অব্যাহত ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি নীচের দিকে খালে নামতে পারছেনা। এ অবস্থায় পানিতে তলিয়ে গেছে ভুক্তভোগী ৩০টি পরিবারের বেশিরভাগ বসতঘর ও আশপাশ এলাকায়।
এতে গত দুইদিন ধরে স্থানীয় মোহাম্মদ বাবুল, আবদুর রহিম, জাহাংগীর আলম, মোস্তাক আহমদ, আবদুল মান্নান, মো.হাশেম, আব্বাস আহমদ, নুরুল আলম খলিফা, সাবেক ইউপি মেম্বার নুরুল আবছার ও নুরুল হোছাইনসহ অনেকের পরিবারে রান্নার কাজ বন্ধ রয়েছে। এমনকি গোসল ও টয়লেট সারতে পারছেনা দুর্ভোগের শিকার এসব পরিবার গুলোর সদস্যরা।
ভুক্তভোগী অভিযোগ তুলেছেন, দীর্ঘ অর্ধশত বছর ধরে উল্লেখিত স্থান দিয়ে পাহাড় থেকে নেমে আসা পানি চলাচল থাকলেও সম্প্রতি জায়গা দখলের কুমানষে দুলোর্ভের বশবর্তী হয়ে অভিযুক্ত রহুল কাদের ও নেজাম উদ্দিন পানি চলাচল পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদেরকে সমাজ বিরোধী এ কাজে পেছন থেকে পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার জয়নাল আবেদিন ও হাসান মাহমুদ টিটুসহ একটি চক্র সহযোগিতা দিয়েছেন বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
সংঘবদ্ধ চক্রের জিন্মিদশায় আটকা ভুক্তভোগী পরিবারের বেশিরভাগ নারী-পুরুষ শনিবার দুপুরে চকরিয়া উপজেলা পরিষদে উপস্থিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী ও ভাইস চেয়ারম্যান মকছুদুল হক ছুট্টোকে ঘটনার বিষয়ে মৌখিক নালিশ করেছেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ শুনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখে এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
Posted ১২:৫০ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ০৭ জুলাই ২০১৯
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta