কক্সবাংলা ডটকম(২৭ জুলাই) :: আগে জানা গিয়েছিল চাঁদের দুই মেরুতে বরফ আকারে পানি থাকতে পারে। কিন্তু এবার বিজ্ঞানীরা জানালেন, চাঁদের একেবারে অন্দরে (ম্যান্টল) এ যে পানি রয়েছে পুরোপুরি তরল অবস্থায়। আর সেই পানি রয়েছে প্রচুর পরিমাণে।
কক্ষপথে ৯ বছর আগে পাঠানো ভারতের মহাকাশযান ‘চন্দ্রযান-১’ এর দেওয়া তথ্যাদি আর ছবি বিশ্লেষণ করে এই চমকদার তথ্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর যেহেতু সেই পানি এখনও রয়েছে তরল অবস্থায়, তাই সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকাও অসম্ভব নয়। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস প্রাণ বা জীবনের অস্তিত্ব নিশ্চিত ভাবেই রয়েছে চাঁদের মুলুকে। হতে পারে তা অণুজীব।
যে গবেষণাপত্র এই তথ্যটি দিয়েছে, সেটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ‘নেচার-জিওসায়েন্স’ এর ২৪ জুলাই সংখ্যায়। মূল গবেষক আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থ, এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড প্ল্যানেটারি সায়েন্স বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর র্যালফ মিলিকেন ও হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো শুয়াই লি। সহযোগী গবেষকদের মধ্যে রয়েছেন দুই ভারতীয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বহু কোটি বছর আগে চাঁদের বিশাল বিশাল আগ্লেয়গিরিগুলো ছিল জীবন্ত। তাদের জ্বালামুখ থেকে অসম্ভব গরম লাভাস্রোত (যার অন্যতম উপাদান-‘ম্যাগমা’) বেরিয়ে এসেছিল। ম্যাগমা বেরিয়ে আসে পৃথিবী ও চাঁদের ম্যান্টল বা হূদয়ের অন্তঃপুর থেকে। সেই ম্যাগমার মধ্যেই ছিল কাচের টুকরোর মতো পদার্থ। যাকে বলা হয়, ‘ভলক্যানিক গ্লাসেস’। চাঁদের প্রায় গোটা পিঠ জুড়ে এখনও ছড়িয়ে রয়েছে সেই কাচের টুকরোগুলি।
মূল গবেষকদের অন্যতম হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল ফেলো শুয়াই লি ভারতের একটি পত্রিকাকে সাক্ষাতকারে বলেছেন, ‘এত দিন আমাদের ধারণা ছিল, চাঁদের ম্যান্টল একেবারে শুকনো খটখটে। সেখানে পানির বিন্দুমাত্র নেই। এ বার নিশ্চিত হওয়া গেল, পানি তো তরল অবস্থায় রয়েছেই এবং তা প্রচুর পরিমাণে। একারণে অণুজীব হলেও নিশ্চিত ভাবেই প্রাণ রয়েছে চাঁদের ম্যান্টলের কোনও না কোনও অংশে।’
তবে ব্রিটেনের ওপেন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক মহেশ আনন্দ বলেছেন, ‘পানি তৈরি হতে গেলে হাইড্রোজেন লাগে। কিন্তু চাঁদে সেই হাইড্রোজেনের হদিশ এখনও পর্যন্ত মেলেনি। তাই অত পানি কী ভাবে তৈরি হল চাঁদের ম্যান্টলে, তা এখনও জানতে পারিনি আমরা। চাঁদ তাই রহস্যের পর্দাটা এখনও পুরোপুরি উন্মোচন করেনি!’
Posted ২:২১ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০১৭
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta