কক্সবাংলা ডটকম(২ এপ্রিল) :: চীন-বিরোধিতার প্রশ্নে অবস্থান পরিবর্তন করেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সার্বিকভাবে চীনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পের সমালোচনা ও বিরোধিতা করা হবে না।
শুধু প্রস্তাবিত চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (যা ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডের অন্তর্গত) প্রকল্পের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়া হবে।
কূটনীতিকদের মতে, ডোকলাম-পরবর্তী পর্বে ভারত যে বেইজিং সম্পর্কে নরম মনোভাব নিতে বাধ্য হচ্ছে, এ সিদ্ধান্ত তারই ইঙ্গিতবাহী। সাউথ ব্লকের ঘোষিত সিদ্ধান্ত, চীনের সঙ্গে সম্পর্কের সেতু নতুন করে গড়তে হবে।
মতবিরোধ সরিয়ে রেখে সীমান্ত, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। চীনের সঙ্গে যুদ্ধংদেহী মনোভাব নিলে তার পরিণতি কী হয়, সেটা ডোকলাম পর্বে টের পেয়েছে সাউথ ব্লক।
পাকিস্তানসহ প্রায় সব প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে যখন অবনতি ঘটছে, তখন যুক্তরাষ্ট্রের বলে বলীয়ান হয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই একের পর এক ভারতীয় শীর্ষ কর্মকর্তা ও মন্ত্রীকে পাঠানো হচ্ছে বেইজিংয়ে।
জুন মাসে সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীনে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করে নতুন পথচলা শুরু করতে চান তিনি।
চীনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের ক্ষেত্রগুলোকে লঘু করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। সে লক্ষ্যে সম্প্রতি ভারত বেইজিংকে জানিয়েছে, অশান্ত মালদ্বীপে তারা নাক গলাতে চায় না।
কূটনৈতিক সূত্র অনুযায়ী, দিল্লির লক্ষ্য, ভারত-চীন দ্বন্দ্বের কারণে ইসলামাবাদ যেন বেইজিংয়ের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা না পায়। তাতে বিপদ দ্বিগুণ হবে। এমনিতেই গত এক বছরে বাড়তি ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে চীন-পাকিস্তানের মধ্যে।
এত দিন ধরে ভারত ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রসঙ্গে বলে এসেছে, বিভিন্ন মহাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগের ভিত হওয়া উচিত স্বীকৃত আন্তর্জাতিক আইন, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং সাম্য। ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড প্রকল্পে চীন এসবের কিছুই মানেনি। পরিবেশের ক্ষতি হবে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
সূত্রের খবর, এসব সমালোচনা বন্ধ করা হবে। এরই মধ্যে এশিয়ার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে (এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অধীনে) চীনের সঙ্গে সহযোগিতা শুরু করেছে ভারত।
সূত্রের বক্তব্য, দিনরাত এ প্রকল্পের নিন্দা করলে তা শুধু চীনকে নয়, এ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আরও অন্তত ৫০টি দেশকেও ক্ষুব্ধ করবে। একটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক মঞ্চের বিরাগভাজন হওয়া কাজের কথা নয় বলেই মনে করছে মোদি সরকার।
তবে চীন-পাকিস্তান করিডোর নিয়ে চীনের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকগুলোতে সরব হবে ভারত। বলা হবে, এই করিডোর ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিপজ্জনক। কারণ, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের ওপর দিয়ে যাবে এই অর্থনৈতিক করিডোর।
Posted ২:৩৬ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ০২ এপ্রিল ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta