শিব শংকর মোদক,ঢাকা(১২ ফেব্রুয়ারি) :: জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত’র প্রথম মৃতুবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ ফেব্রুয়ারি সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমদ চৌধুরী মিলনায়তনে একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এই স্মরণসভার আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন জগন্নাথ হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানিত সভাপতি পান্না লাল দত্ত এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বীরেন্দ্র নাথ অধিকারী। স্মরণসভার প্রধান অতিথি মাননীয় শিল্পমন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু এমপি বলেন,গণপরিষদে প্রথম সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর সাথে প্রথম পরিচয়। সে অসীম সাহসী লোক ছিলেন রাজনীতিতে। নেত্রী রাজনীতিতে তাঁকে কো-চেয়ারম্যান করেন।
সংসদে সরব নেতা ছিলেন। সংসদে স্পীকারগণ অনেক সময় বক্তব্য ও প্রচলিত রীতিনীতিতে তাঁর স্মরণাপন্ন হতেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতে তার অবদান অপরিসীম। রাজনৈতিক কৌশল নির্ধারণে দল সবসময় তাঁর পরামর্শ ও মন্তব্য নেয়া হত। তাঁর প্রয়ান দেশের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে অপরিসীম ক্ষতি।
স্মরণসভার বিশেষ অতিথি মাননীয় যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার এমপি বলেন, সংসদ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত আমাদের রাজনৈতিক আদর্শিক শিক্ষক। সংসদীয় গণতান্ত্রিক ধারার মজবুত করণে তার অবদান সর্বদা স্মরণযোগ্য।
বিশেষ অতিথি ঐক্য ন্যাপ এর সম্মানিত সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য বলেন বলেন,- আমরা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত’র স্মৃতিকে কোনদিন অমলিন হতে দিব না। দেশে গণতন্ত্র থাকলে, সংসদীয় রাজনীতি থাকলে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত’র নাম উচ্চারিত হবে।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সম্মানিত সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে প্রয়াত নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত’র প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, জাতীয় নেতার স্মরণ অনুষ্ঠান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে হলে ভাল হতো, কারণ তিনি দেশের রাজনীতিতে একজন জাতীয় নেতা ছিলেন। তাঁর রাজনীতির চর্চা আমরা সবাই স্মরণ করি। তিনি বামপন্থী নেতা ছিলেন প্রথমদিকে। তারপর আওয়ামী লীগের রাজনীতি বৃহৎ অবদান।
বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক রাণা দাশগুপ্ত বলেন,তার মত অসাম্প্রদায়িক নেতা আমরা আর পাব কিনা সন্দেহ। তাকে নিয়ে গবেষকর্ম করা দরকার। দেশের প্রথম দিকের রাজনীতিতে গণতন্ত্র বিনির্মাণে তার অবদান অনস্বীকার্য।
বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সম্মানিত সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন,দেশের জনগণ সুরঞ্জিতকে চেনে আসম্প্রদায়িক নেতা হিসেবে। দেশের ছাত্র ও তরুণদের জন্য তিনি একজন সঠিক রাজনীতি ও আদর্শিক শিক্ষক। একজন আদর্শ শিক্ষক আমাদের কাছে। একজন উৎকৃষ্ট মানুষ ছিলেন।
বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সম্মানিত প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. অসীম সরকার বলেন,আমরা তাকে আজীবন স্মরণ রাখবো। জগন্নাথ হল ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আগামীতে একসাথে এই স্মরণ অনুষ্ঠান পালন করবে।
বক্তব্য রেখে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস পাল বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জন-মানুষের নেতা ছিলেন। একজন সফল রাজনীতিবিদ ছিলেন। অসাম্প্রদায়িক নেতা ছিলেন। ঢাকেশ্বরীর বেদখল জমি উদ্ধারে তিনি ছিলেন তৎপর।
বক্তব্য রেখে স্বজনের সদস্য সাংবাদিক সপ্রণব সাহা বলেন, পার্লমেন্টারিয়ান রাজনীতির শিক্ষক ছিলেন তিনি।
বক্তব্য রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকার বলেন,তিনি ছিলেন রাজপথের সাহসী যোদ্ধা, দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান। যুক্তি তর্কে অসাধারণ ক্ষমতাবান একজন বলিষ্ঠ পার্লামেন্টারিয়ান, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতির অন্যতম পথিকৃত।
সুভাষ সিংহ রায় বলেন, তিনি কখনো মাথা নত করেননি অসত্য ও অন্যায়ের কাছে।
অজয় দাশগুপ্ত বলেন, জাতীয় রাজনীতিতে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর অবদান কখনো ভুলার নয়। যতদিন গণতান্ত্রিক ও আসাম্প্রদায়িক রাজনীতি থাকবে দেশে ততদিন তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় থাকবে।
স্বপন কুমার সাহা বলেন, তরুণ প্রজন্ম কে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তর’র রাজনৈতিক আদর্শ ও শিক্ষার ধারণ করতে হবে।
বক্তব্য রেখে মুকুল বোস বলেন,আমরা তার শিক্ষা অনুসরণ করবো।পরীক্ষিৎ দত্ত চৌধুরী (সাবেক সচিব, কর্মসংস্থান ব্যাংকের চেয়ারম্যান) বলেন, তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক ও সংবেদনশীল, প্রত্যুৎপন্নমতি রাজনীতিবিদ ছিলেন।
ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক(সাবেক রাষ্ট্রদূত) বলেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলতেন দেশের সকল মানুষকে একসাথে নিয়ে চলতে পারলেই দেশের সার্বিক কল্যাণ, উন্নতি সম্ভব, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষা পাবে।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয় সম্পাদক সুজিৎ রায় নন্দী বলেন, তিনি আপোষহীন নেতা, স্বৈরাচার, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন।
Posted ১২:৫২ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
coxbangla.com | Chanchal Das Gupta